ভারতের (India) উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সাথে বাংলাদেশের (Bangladesh) সংযোগকারী রেল ট্রানজিট সমঝোতা চুক্তি বাতিলের জন্য এবার পাঠানো হল আইনি নোটিশ।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, নোটিশটি বাংলাদেশের রেল মন্ত্রকের সচিব থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব সহ বিদেশ মন্ত্রকের সচিব ও আইন মন্ত্রকের সচিবকে পাঠানো হয়েছে।
মূলত, গত বুধবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এই নোটিশটি পাঠান।
পাশাপাশি, ওই নোটিশে দাবি করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সংঘাত এড়াতেই এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়” নীতি অনুসরণ করে আসছে।
এদিকে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সংঘাত ও সহিংসতা থেকে নিজের সুরক্ষার জন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ‘ব্যালেন্স অব পাওয়ার’ নীতির অনুসরণ করছে।”
এমতাবস্থায় ওই নোটিশে দাবি করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের রেল ট্রানজিট সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে হুমকির মুখে পড়েছে “ব্যালেন্স অব পাওয়ার” নীতি। যার ফলে ভারতের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হওয়া ছাড়াও ভবিষ্যতে চিনের সাথে বাংলাদেশের সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সাথে বাংলাদেশের রেল ট্রানজিটের বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। কারণ, ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী ভারত থেকে স্বাধীনতা চায়। পাশাপাশি, অরুণাচল প্রদেশের প্রসঙ্গে চিনের সাথে ও তাদের ব্যাপক বিবাদ রয়েছে। আর সেই কারণে ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট চাইছে।
আর এই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই ভারতকে রেল ট্রানজিট দেওয়া হলে তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপরে ব্যাপক ঝুঁকি ফেলবে বলে অনুমান করা হয়েছে ওই নোটিশে।
পাশাপাশি, এটাও বলা হয়েছে যে ভবিষ্যতে যদি ভারত এবং চিনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় সেক্ষেত্রে চিনের সামরিক বাহিনী ভারতের সামরিক সরঞ্জামের জোগান ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য সরাসরি বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারতীয় রেলের ওপর মিসাইল হামলা চালাতে পারে। যার ফলে এটি তৈরি করতে পারে বড় সঙ্কট।
এমতাবস্থায়, এই আইনি নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে সামগ্রিক বিষয়গুলিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখার মাধ্যমে এই রেল ট্রানজিট সমঝোতা চুক্তি বাতিলের অনুমতির আর্জি জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই চুক্তি বাতিল না করা হলে বাংলাদেশের হাইকোর্টে মামলা করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে।
আপনার মতামত জানানঃ