ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি রাজনৈতিক ও সামরিক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পথে রয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
অদূর ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে। ইতিমধ্যে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঠেকাতে জরুরি বৈঠক করেছেন নেতানিয়াহু। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল ১২ এবং সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এসব তথ্য জানিয়েছে।
চ্যানেল ১২-এর খবর অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার কীভাবে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়ানো যায় তা খুঁজে বের করতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশটির তিনজন মন্ত্রী ও বেশ কয়েকজন সরকারি আইনজীবী একটি জরুরি বৈঠক করেছেন। অদূর ভবিষ্যতে এই ধরনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে এমন বার্তা পাওয়ার পরই বৈঠকে বসেন তেল আবিবের কর্তা ব্যক্তিরা।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের কার্যালয় বৈঠকের বিষয়টি টাইমস অব ইসরায়েলকে নিশ্চিত করেছে। তারা এ-ও জানিয়েছে যে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পর্যন্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে, এমন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবারের ওই বৈঠকে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাৎজ, বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন ও কৌশলবিষয়কমন্ত্রী রন দার্মার উপস্থিত ছিলেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যেন না জারি করা হয় সেজন্য ইসরায়েল আইসিসি এবং এই আদালতের ওপর প্রভাব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
চলতি সপ্তাহে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করে তাদের সহায়তা চেয়েছেন নেতানিয়াহু।
ইতিমধ্যে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে ইসরায়েল। বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের মধ্যে মানবিক সংকটের কারণে তেল আবিবের আশঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে। এ ছাড়া অনেক দেশ সেখানে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ও গণহত্যাবিষয়ক জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে।
মূলত ২০১৪ সালের হামাস ও আইডিএফের যুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে ২০১৯ সালে তদন্ত করার ঘোষণা দেয় আইসিসি। করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর তদন্ত স্থগিত থাকলেও ২০২১ সালের মার্চে পুনরায় তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এরই অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বরে আইসিসির শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খান ইসরায়েল সফর করেন। তার সফরের তিন মাসের মাথায় এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি সামনে এলো।
আপনার মতামত জানানঃ