ইতিপূর্বে জনপ্রতিনিধিরা দফায় দফায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের(ইউএনও) বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিভিন্ন অভিযোগ আনেন। উপজেলা পর্যায়ে শাসকের ভূমিকা পালন করছেন, তাদের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব জনপ্রতিনিধিদের কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে ইত্যাদি অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। এবার উপজেলা প্রশাসনের আয়োজন আমলাদের সভায় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। গতকাল শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে স্থানীয় জেলা পরিষদ হলে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার এনডিসি মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ। প্রধান আলোচক ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ। আরো উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহু রহমান, পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) প্রেম সাগর হাজরা, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসিন মিয়া মধু, জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু দেব এবং সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
এসময় শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘নতুন করে কোন আইনি জটিলতা সৃষ্টি না হলে খুব শিঘ্রই শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্বাচন করা সম্ভব। এ নির্বাচন নিয়ে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘পৌরসভা এলাকা সম্প্রসারণ নিয়ে হাইকোর্টে একের পর এক রিট দায়েরের কারণে মেয়াদউত্তীর্ণের সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে নির্বাচন করা যায়নি। দেশের যে সব পৌরসভায় বিরোধীদলের মেয়ররা দায়িত্বে রয়েছেন- দেখা গেছে সেসব পৌরসভার মেয়ররা ক্ষমতায় থাকার জন্য জটিলতা সৃষ্টি করছেন। মেয়াদ শেষ হলে আর কোনো জনপ্রতিনিধি ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে পারবেন না। এজন্য আইন সংশোধন করা হবে। যাতে করে মেয়াদ শেষে জন প্রতিনিধিরা প্রশাসকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারেন। ’
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নিয়ে জেলা প্রশাসকের গাফিলতিকে দায়ী করে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকরা মন্ত্রনালয়ে সঠিক রিপোর্ট না পাঠানোর কারণে আমরা মন্ত্রণালয় থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। পৌরসভার পরিধি সম্প্রসারণ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নিয়ে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় সম্প্রসারণ ও নির্বাচন দু’টিই বিলম্ব হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইউএনও ও জনপ্রতিনিধিরা পরস্পরের বিরুদ্ধে গিয়ে মাঠে নেমেছেন মূলত ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে। দুদলই চায় নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় থাকুক। এজন্য দুদলই ক্ষমতা কেন্দ্রিক ইস্যু বা সমস্যাগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরে পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।
এসডাব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১২৩৪
আপনার মতামত জানানঃ