বস্তুত স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও আমাদেরকে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
সেই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিএনপি বিতর্কিত করেছে এমন অভিযোগে আওয়ামী লীগ আন্দোলন গড়ে তোলে। এই অবস্থায় ২০০৭ সালে এক-এগারোর পালাবদল ঘটে এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দলের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে অরাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ পয়েন্ট অফ নো রিটার্নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী কোনো ছাড় না দেয়ার নীতি গ্রহণ করে বর্তমান সরকার ও সংবিধানের আলোকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা দিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। সরকার নির্বাচনের আগে পছন্দের কর্মকর্তাদের দিয়ে মাঠ প্রশাসন সাজাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই পুলিশ প্রশাসন, ডিসি, ইউএনও থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে বদলি ও স্থানান্তরের মাধ্যমে সরকার ব্যাপক প্রশাসনিক রদবদল করে আস্থাভাজনদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানোর কাজ করে যাচ্ছে। গত ৩ মাসের ব্যবধানে ৪ জন বিভাগীয় কমিশনার ও ৩১ জেলা প্রশাসক (ডিসি)কে জেলায় নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একই সময়ে অন্ততপক্ষে ৮৫ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া পুলিশ প্রশাসনে ১৬ জন ডিআইজি, ৩৪ জন অতিরিক্ত ডিআইজি এবং ২৪ জেলার এসপি পদে রদবদল করা হয়েছে। পাশাপাশি সংগঠন হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবল মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে আসছে।
অপরদিকে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন মাঠের বিরোধী দলগুলো নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। ইতিমধ্যে গত ১২ই জুলাই থেকে এই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে একদফার আন্দোলনে ধারাবাহিক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
আন্দোলনের এই কর্মসূচিতে বিএনপি ছাড়াও যুগপৎ ভাবে অংশ নিচ্ছে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম-পিপলস পার্টি, এলডিপি, লেবার পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ বিরোধী বিভিন্ন জোট। এই দল ও জোট নিজ নিজ প্ল্যাটফরম থেকে একই কর্মসূচি পালন করেছে।
এই অবস্থায় দেশের বৃহৎ দু’ দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের বিপরীতমুখী অনড় অবস্থান রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি অবস্থান স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষকে ক্রমেই উদ্বিগ্ন করে তুলছে। সাম্প্রতিক সময়ে দু’দলের কর্মসূচির অবস্থা দেখে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সহিংস ঘটনার। দেশের রাজনৈতিক এই টানটান উত্তেজনার মধ্যেই গত ২৮শে জুলাই বিএনপিদলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করে বিএনপি।
একই দিন আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে শান্তি সমাবেশ করে। যদিও শান্তি সমাবেশ শেষে অশান্তি সৃষ্টি করার ফলে এক জন মারা যায় এবং ৪ জন আহত হয়।
২৮শে জুলাই নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একদফা দাবিতে আয়োজিত বিএনপি’র মহাসমাবেশ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন ‘এখনো সময় আছে, ভালো চাইলে এখনই পদত্যাগ করুন’। একদফা মেনে নিন। না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।
অপরদিকে একই দিনে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন ‘চাখ রাঙাবেন না, আমাদের শিকড় গভীরে’, যতদিন জনগণ চাইবে ততদিন ক্ষমতায় থাকবো। রাস্তা বন্ধ করলে বিএনপি’র চলার পথও বন্ধ করে দেবো।
একই সঙ্গে বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে ঢাকার সব প্রবেশপথে ৫ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিলে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ শান্তি সমাবেশ করবে ঘোষণা করেন। পরে ২৯ তারিখের কর্মসূচিতে রাজধানীর প্রবেশমুখে বিএনপি’র অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় ধোলাইখাল, উত্তরা, মাতুয়াইল এবং গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ধোলাইখালে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে।
পরে পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় আটক করে পরে ছেড়ে দেয়। গাবতলী অবস্থান কর্মসূচি থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হলে আমান অসুস্থ অনুভব করার কারণে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয় এবং তাকেও ছেড়ে দেয়া হয়। আমানউল্লাহ হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফল ও ফুল প্রেরণ করা হয়। অপরদিকে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ডিবি কার্যালয়ে দুপুরে লাঞ্চ করানো হয় এবং এই দৃশ্য প্রচারিত হয়। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক হইচই পড়ে যায়।
ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের ঘটনায় ১৩টি মামলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানার এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ৬২৭ জন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১২টি মামলার বাদী পুলিশ। উত্তরা পশ্চিম থানায় ২টি, উত্তরা পূর্ব থানায় ৩টি, বিমানবন্দর থানায় ১টি, যাত্রাবাড়ী থানায় ২টি, বংশাল থানায় ১টি, সূত্রাপুর থানায় ১টি, ডেমরা থানায় ১টি, দারুসসালাম থানায় ১টি, কদমতলী থানায় ১টি মামলা হয়েছে। মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, জখম ও হত্যার হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহন চলাচলে বাধা, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অভিযোগ করা হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক এই সংঘাতময় পরিস্থিতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থান করে নিয়েছে। ২৯শে জুলাই বিএনপি’র রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচির সংঘর্ষের ঘটনা আল জাজিরা সহ বিদেশি মিডিয়াগুলো গুরুত্ব সহকারে প্রচার করেছে।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক এই পরিস্থিতির প্রভাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশ্বের পরাশক্তিসমূহ বাংলাদেশ ইস্যুতে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের নিকট প্রতিবেশী ভারত, রাশিয়া, গণচীন ও ইরান প্রকাশ্যে বর্তমান সরকারের পক্ষ অবলম্বন করে বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান করছে।
যদিও ভারত এই সময়ে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মত নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে বলে মনে হচ্ছে না। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের দেশে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের সঙ্গে কাজ করে আসছে। ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে সরকারের কাছে তাদের মনোভাব প্রকাশ করেছে।
এক পর্যায়ে গত ২৪শে মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন। নতুন ভিসা নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের কয়েকটি ধারা অনুযায়ী নতুন যে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে বহিষ্কার এবং শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাবসহ মানবাধিকার হরণকারীদের নিষিদ্ধ করতে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে তারা বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের সন্ত্রাস, নির্যাতন ও বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য আপনাকে চিঠি লিখছি। একই চিঠিতে তারা বাংলাদেশে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
২৭শে জুলাই লেখা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেসম্যান বব গুড, অ্যানা পলিনা-লুনা, র্যালফ নরম্যান, টম পেরি, যশ ব্রেচেন, এন্ড্রু ক্লেড, এইলি ক্রেইন, পল এ গসার, রনি এল জ্যাকসন, ব্রইন বেবিন, করি মিলস, ডাগ লামাফা, র্যান্ডি ওয়েবার ও গ্লেন গ্রোথম্যান। চিঠিতে আরও বলা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসহ বিপুল সংখ্যক মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ভয়ভীতি, হামলা, মিথ্যা কারাদণ্ড, নির্যাতন, গুম এবং এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড রয়েছে।
বস্তুত স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও আমাদেরকে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
সেই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিএনপি বিতর্কিত করেছে এমন অভিযোগে আওয়ামী লীগ আন্দোলন গড়ে তুলে। এই অবস্থায় ২০০৭ সালে এক-এগারোর পালাবদল ঘটে এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়, যদিও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে গঠিত সংবিধান সংশোধনী কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেয়। উচ্চ আদালতে শীর্ষ আইনজীবীদের অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে এক-দু’জন বাদে সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচন নিয়েই প্রবল বিতর্ক হয়। এবারো নির্বাচন সামনে রেখে উন্নয়ন সহযোগীরা সোচ্চার হয়েছে। তারা সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে আসছে। কেবল বিদেশিরা নয়, দেশের মানুষও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায়।
এই অবস্থায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তত্ত্বাবধারক সরকার ইস্যুতে সরকার ও বিরোধী দল মুখোমুখি অবস্থান দেশবাসীর মাঝে এক ধরনের অস্থিরতা ও দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে শষ্কা দেখা দিয়েছে, যা কাম্য নয়। সুষ্ঠু ভোট দাবি করা কোনো অপরাধ না। বরঞ্চ নীতি নৈতিকতার বিষয়। তাছাড়া নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান উপাদান।
একই সঙ্গে গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন সর্বোপরি একজন মানুষ একটি দেশের নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নিজের অভিব্যক্তি অনুযায়ী মত প্রকাশের সক্ষমতা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনে স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করা। মহান আল্লাহ্ পাক দয়া করে আমাদেরকে হেফাজত করুন এবং চলমান এই সংকট থেকে রক্ষা করুন।
এসডব্লিউএসএস১২১৫
আপনার মতামত জানানঃ