পৃথিবীর বাইরে আর কোথাও আছে প্রাণ? বিজ্ঞানীদের এই খোঁজ বহুদিনের! তবে এই খোঁজের মাঝেই ইদানীং একটি দৃশ্য চমকে দিল সবাইকে। তা হল বুধ গ্রহের বৃষ্টির দৃশ্য।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন, সূর্যের সবচেয়ে কাছের এই গ্রহে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই অকল্পনীয় দৃশ্যই ধরা পড়ল পৃথিবীর মহাকাশযানের ক্যামেরায়।
সম্প্রতি ইউরোপ ও জাপানের উদ্যোগে তৈরি একটি মহাকাশযান বুধ গ্রহের কাছ দিয়ে নিজের গন্তব্যে যাচ্ছিল। তখনই তার চোখে ধরা পড়ে এই বৃষ্টির দৃশ্য। তাহলে কী জলের অস্তিত্ব রয়েছে বুধ গ্রহে? প্রাণের বিকাশ কি সম্ভব সেখানে?
এই ব্যাপারে অবশ্য এখনই এক মত নন বিজ্ঞানীরা। কারণ আয়নের বৃষ্টির উপর নির্ভর করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি যে বৃষ্টির ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়, তা আদতে বুধের মাটিতে ইলেকট্রনের অবিরাম নেমে আসা। যেন বায়ুমণ্ডল থেকে থরে থরে ঝরে পড়ছে ইলেকট্রন কণা। আর সেই কণা ধরে পড়ার জেরেই সৃষ্টি হচ্ছে মহাজাগতিক আলোর।
পৃথিবীতে এই আলোকে অরোরা বোরিয়ালিস ও অরোরা অস্ট্রিয়ালিস বলা হয়। দুই মেরুর বাসিন্দারাই একমাত্র রাতের আকাশে এই আলোর ঝলকানি দেখতে পান। বুধের আকাশেও এখনো সেই আলোর ঝলকানি চলছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এক্স রশ্মির কারণেই এই অরোরা তৈরি হচ্ছে। যা পৃথিবীর অরোরার থেকে আলাদা।
নেচার কমিউনেকশনে এই নিয়ে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক সাই আইজায়া সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এই প্রথমবার বুধ গ্রহে ইলেকট্রনের বৃষ্টি প্রত্যক্ষ করা গেল। তার সঙ্গে দেখা গেছে অরোরাও।
পৃথিবীর তুলনায় বুধের বায়ুমণ্ডল অনেকটাই আলাদা। তাই দুটি অরোরার প্রকৃতিও আলাদা। কিন্তু সারা সৌরমণ্ডলে একইভাবে অরোরা সৃষ্টি হয়। সেই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন।
ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা ইসা ও জাপানের মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা জাক্সার যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয় বেপিকলোম্বো মহাকাশযানটি। সেটি বুধের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দি করেছে।
প্রসঙ্গত পৃথিবীর তুলনায় বুধের বায়ুমণ্ডল অনেকটাই ক্ষুদ্র। তাই এখানে সরাসরি ইলেকট্রন বুধের মাটি স্পর্শ করছে। তার পর সৃষ্টি হচ্ছে অরোরা। পৃথিবীতে এই ঘটনা বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে উপরের স্তরে ঘটে।
এসডব্লিউএসএস/২০৪৫
আপনার মতামত জানানঃ