গত প্রায় ১৫০ বছর ধরে অন্য কোনও গ্রহের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে নাসা। জানা গিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। যার নাম, ‘Beacon in the Galaxy’ (BITG)।
এবার বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, ২০২৯ সালের প্রথম দিকে আমরা বহির্জাগতিক জীবন থেকে একটি বার্তা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণ হল কিছু শক্তিশালী রেডিও সংকেত যা আমরা প্রেরণ করেছি তা দূরবর্তী নক্ষত্রে পৌঁছেছে এবং যদি এই নক্ষত্রগুলির মধ্যে যেকোনো একটি এলিয়েন হোস্ট করে তাহলে আমাদের সংকেত সাড়া দিতে পারে।
তবে এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আমাদের সংকেতগুলি দুর্বল এবং বিরল, এবং আমাদের ছায়াপথে বিদ্যমান অন্য সভ্যতা থাকার সম্ভাবনা এখনও বেশ ক্ষীণ মনে হচ্ছে। তবে সম্ভাবনা কম হলেও, কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে এটি নিয়ে এখনও গবেষণা করা যায়।
ভিনগ্রহের সভ্যতার প্রমাণ খোঁজার জন্য, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল গভীর-মহাকাশের রেডিও সংকেত অনুসরণ করেছিল ও তাদের মধ্যে কেউ আমাদের বার্তা পেয়েছে কিনা সেটাও দেখা হচ্ছে।
এলিয়েনের সাথে যোগাযোগ করার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য অধ্যয়নের পিছনের দলটি দেখতে চেয়েছিল যে, নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক (DSN) থেকে সংকেতগুলি এখন পর্যন্ত এমন কোনও এক্সোপ্ল্যানেটে গেছে কিনা যা এলিয়েন হোস্ট করতে পারে। ডিএসএন একটি শক্তিশালী রেডিও অ্যারে যা গভীর মহাকাশ মিশনের যোগাযোগ করতে ব্যবহৃত হয়।
দলটি DSN দ্বারা প্রেরিত সংকেতগুলি ট্র্যাক করছে। নিকটতম নক্ষত্র ২৭ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি সাদা বামন নক্ষত্র। যদি সেই নক্ষত্রের চারপাশে এমন কোনো গ্রহ থাকে যা আমাদের বার্তায় সাড়া দেয়, তাহলে দ্রুত রেসপন্স করা সম্ভব হবে৷ অন্যান্য বার্তা ২০৩০ এর দশকে বিভিন্ন সম্ভাব্য তারকা সিস্টেম থেকে আমাদের কাছে ফেরত আসতে পারে।
এদিকে, স্পেস ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতেই এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসীর অস্তিত্বের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আমাদের এই ছায়াপথে পৃথিবী ও মঙ্গলের মতো পাথুরে গ্রহ বেশি। সেই তুলনায় বৃহস্পতি বা শনির মতো গ্যাসীয় গ্রহের সংখ্যা কম। তাই অধিকাংশ তত্ত্বই বলে, পাথুরে গ্রহগুলো জীবনধারণের উপযোগী হতে পারে।
নাসার অ্যাস্ট্রোফিজিকস বিভাগের পরিচালক পল হার্জ মিল্কি ওয়ে ছায়াপথকে ‘আর্দ্র স্থান’ বলে উল্লেখ করেছেন। এখানে মহাকাশীয় মেঘের পানির অস্তিত্ব দেখা যায় বলেই তাঁর মত।
এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসীর খোঁজে নাসার বর্তমান পরিকল্পনা হচ্ছে, মঙ্গল গ্রহের বরফাচ্ছাদিত চাঁদ ইউরোপাতে আরও বেশি রোভার পাঠানো। এ ছাড়াও হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁরা জটিল গাণিতিক নকশার রেডিও সংকেত ধরতে পেরেছেন যা কোনো বুদ্ধিমান ভিনগ্রহবাসীর পাঠানো সংকেত হতে পারে।
এসবের মাঝেই এক গবেষক ইউএফও নিয়ে গবেষণা করার সময় ইন্টারেস্টিং তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এন্টার্কটিকায় ভিনগ্রহীদের দ্বারা গোপন ঘাঁটি নির্মাণ করা হয়েছে। সম্ভবত এটি এলিয়েন সভ্যতার কাজ। আবার প্রাচীন মানব সভ্যতার অবশিষ্ট অংশ হতে পারে এ ঘাঁটি।
স্যাটেলাইট ছবি থেকে পাওয়া অদ্ভুত বস্তুটিকে বরফের বড় শিলার মতোই মনে হয়েছে। আসলে অনেক বছর ধরেই এদের অস্তিত্ব ছিল। সাম্প্রতিক সময় সেখানে খনন কার্য চালানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সেখানে তুষারপাতের ট্রাক খুঁজে পাওয়া গেছে।
তবে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো বলেনি যে সেখানে কী পাওয়া গেছে। ১৯৮৫ এবং ২০১৩ সালে সেখানের কিছু ছবি তোলা হয়েছিল। ওই অঞ্চলের পাশে একটি বড় বিমানের রানওয়ে যুক্ত করা হয়েছে।
স্কট ওয়ারিং যিনি এ অবজেক্টটি আবিষ্কার করার পর বিশ্বাস করেন যে, গভীর ভূগর্ভস্থ এ কাঠামোটি এলিয়েন সভ্যতাই নির্মাণ করেছে। তিনি আরো বলেন যে, অথরিটি এ তথ্য জনগণের কাছ থেকে গোপন রেখেছেন।
স্কট আরো বিশ্বাস করেন যে, তিনি এন্টারটিকায় আরো একটি ইন্টারেস্টিং ফিচার খুঁজে পেয়েছেন। ওই স্থাপনাটি দেখতে যীশু খ্রিস্টের মুখের মত। এটি প্রমাণ করে যে, প্রাচীন এলিয়ান সভ্যতা একবার দক্ষিণ মেরুতে সমৃদ্ধ জীবন যাপন করেছিল।
তবে এই বিষয়টি শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির মতামত। অন্য বিশেষজ্ঞরা স্কুট এর সাথে একমত নাও হতে পারেন। এই বিষয়টির আরো যৌক্তিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে। এ ধরনের তথ্য বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আগ্রহ এবং উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।
ভবিষ্যতে ইউএফও এবং বহির্জাগতিক জীবন নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তারা আমাদের চারপাশের মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৪৫৫
আপনার মতামত জানানঃ