বেপোরোয়া শিল্পায়ণ, পরিবেশ দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানবজাতি হারাতে বসেছে পৃথিবীর মহামূল্যবান সম্পদরাজি। অ্যামাজন থেকে মৃত সাগর (ডেড সি) পর্যন্ত এমন কিছু স্থান বা প্রাকৃতিক সম্পদ পৃথিবীতে আছে যেগুলো এখন হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ১০টি প্রকৃতি ও মানুষসৃষ্ট সম্পদ অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে। খবর ডিডাব্লিউ।
পৃথিবীর ফুসফুস অ্যামাজন : দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্টে রয়েছে অনেক রকমের গাছপালা এবং প্রাণী। গত ১২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাছ ধ্বংস হয়েছে চলতি ২০২০ সালে।
দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ : অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলের দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের অর্ধেক ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। তাপমাত্রা চলতি হারে বাড়তে থাকলে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচয়ে বড় এই প্রবালের মৃত্যু হতে পারে।
গালপাগোস দ্বীপ : ইকুয়েডরের গালপাগোস দ্বীপ। এখানকার কিছু বিরল প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের বিবর্তনই ডারউইনকে প্রেরণা জুগিয়েছিল বিবর্তণবাদ আবিষ্কারে। কিন্তু এই প্রাকৃতিক ভূস্বর্গের ভবিষ্যতও আজ হুমকির মুখে।
হিমালয় : উষ্ণায়নের কারণে আশঙ্কাজনক হারে হিমবাহ গলছে। পাশাপাশি আবর্জনা যে হারে বাড়ছে, তাতে হিমালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও জাগছে শঙ্কা।
জোসুয়া ট্রি ন্যাশনাল পার্ক : ক্যালিফোর্নিয়ার জোসুয়া ট্রি ন্যাশনাল পার্কে জোসুয়া গাছ খরার কারণে মরে যাচ্ছে। এতে বিলুপ্তির শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।
কিলিমানজারো : গবেষকরা বলছেন, ১৯১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৮৫ শতাংশ বরফই হারিয়েছে আফ্রিকার উচ্চতম পর্বত কিলিমানজারো।
মাচু পিচু : পর্যটকের চাপে এই ইনকা নিদর্শনের কাঠামো ক্রমশ নড়বড়ে হচ্ছে। প্রতি বছর অন্তত ১৫ লাখ পর্যটকের পা পড়ে পেরুর এই বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া ইনকা নিদর্শনে।
মালদ্বীপ : দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে উষ্ণায়নের কারণে প্রতি বছর ৩ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। এতে বিলুপ্তির পথে অগ্রসর হচ্ছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি।
লেক নিকারাগুয়া : প্রস্তাবিত নিকারাগুয়া খাল হয়ে গেলে ক্যারিবীয় সাগরের সঙ্গে যুক্ত হবে প্রশান্ত মহাসাগর। মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে বড় হ্রদটিতে তখন ডিঙি নৌকা উধাও হয়ে যেতে পারে, শুরু হতে পারে বড় বড় অনেক কন্টেইনার জাহাজের আনাগোনা। আর সেই দূষণে বিলুপ্ত হতে পারে খালটি।
মৃত সাগর : এই জলাধার কিছুই ডুবতে দেয় না। সাঁতার না জানলেও অনায়াসে ভেসে থাকতে পারবেন এখানে। তবে নিজেই ডুবতে বসেছে জলাধারটি। জর্ডান নদী থেকে পানীয় জল আহরণ করছে ইসরায়েল ও জর্ডান যার প্রভাবে বিশ্বের সবচেয়ে নিচু জলাধার মৃত সাগরটি ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর গড়ে এক মিটারের মতো নেমে যাচ্ছে এর পানির উচ্চতা। এতে মৃত সাগরের মৃত্যু সংবাদের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
এসডাব্লিউ/ডিআর/নাসি/১৩৪৫
আপনার মতামত জানানঃ