হ্যাড্রিয়ানের প্রাচীরের একটি রোমান দুর্গে পাওয়া একটি কাঠের বস্তুকে ঘিরে বেশ কয়েক বছর ধরেই গবেষণা চালাচ্ছিলেন গবেষকরা। প্রাথমিকভাবে সেলাইয়ের হাতিয়ার বলে মনে করা হলেও এখন গবেষকরা মনে করছেন, কাঠের বস্তুটি দ্বিতীয় শতাব্দীর যৌন খেলনা হতে পারে।
১৯৯২ সালে হেক্সহ্যামের ভিনডোলান্ডায় একটি খাদ থেকে এই বস্তুটি উদ্ধার করা হয়। এই বস্তুটির পাশাপাশি কয়েক ডজন জুতা এবং পোশাক, চামড়ার অফ-কাট এবং ওয়ার্কড অ্যান্টলারের মতো অন্যান্য ছোট সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়।
নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের গবেষকদের বিশ্লেষণে দেখানো হয়েছে যে এটি সম্ভবত রোমান সভ্যতার উদ্ধার হওয়া প্রথম ‘সেক্স টয়’।
গবেষকরা মনে করছেন যে, ৬.২ ইঞ্চি লম্বা এই কাঠের ফলকটি নারীদের যৌন চাহিদা পূরণের কাজেই ব্যবহার করা হত।
কাঠের বস্তুটির দুইদিকই ভীষণ মসৃণ, যা দেখে গবেষকরা মনে করছেন বস্তুটি একাধিক বার যৌন চাহিদাপূরণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে প্রাচীন কালে।
নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ রব কলিন্স এই বিষয় বলেন, আমরা জানি যে প্রাচীন রোমান এবং গ্রিকরা যৌন সরঞ্জাম ব্যবহার করত, ভিনডোলান্ডার খাদ থেকে পাওয়া এই বস্তুটি এই বক্তব্যের সাপেক্ষে যোগ্য উদাহরণ হতেই পারে।
তবে গবেষকরা এও বলছেন যে, এই কাঠের বস্তুটি রূপচর্চা কিংবা ওষুধ প্রস্তুত করার কাজেও লাগানো হতে পারে।
এবার চলুন সেক্স টয়ের ইতিহাসটা একবার জেনে নেওয়া যাক। বিশ্বের প্রথম ‘ডিলডো’ কিন্তু জার্মানিতেই আবিষ্কার হয়েছিল, তাও আবার ২৮,০০০ বছর আগে। ২০ সেন্টিমিটার লম্বা এই পাথরটি কেবল যে ‘সেক্স টয়’ হিসেবে ব্যবহৃত হতো তা-ই নয়, আগুন জ্বালানোর কাজেও ব্যবহৃত হতো।
ডিলডো শব্দটি প্রথম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ডিলাটারে’ থেকে, ১৪০০ শতাব্দিতে। এর মানে হচ্ছে খুলে দাও। আর ইতালিতে দিলেত্তো মানে খোল। ইতালীয় রেনেঁসার একশ বছর পর চামড়া ও অলিভ অয়েল দিয়ে যৌন খেলনা তৈরি হতো। তবে ইতিহাস বলে শুনতে যতটা আনন্দদায়ক হওয়ার কথা খেলনাটি ততটা ছিল না।
প্রাচীন গ্রিসে গ্রিকদের স্থাপত্য খুঁড়ে প্রথমে মাটির তৈরি ডিলডোর সন্ধান পাওয়া যায়। যা তৎকালীন রানী ও অভিজত নারীরা নিজেদের যৌন সুখের জন্য ব্যবহার হতো।
মধ্যযুগেও নারীরা যৌনসুখের জন্য নানা উপায় অবলম্বন করতো। বিশেষ করে সেই সময় নারীরা একটি যৌনাঙ্গ আকারের পাত্রে বা চামড়ায় গরম পানি নিয়ে সেটা ব্যবহার করে যৌনসুখ উপভোগ করতেন।
চৌদ্দশ শতাব্দিতে এসে ইতালির মেয়েরা ডিলডোর আকারে এক বিস্ময়কর পরিবর্তন আনে- চামড়া, পাথর, হাতির, দাঁত দিয়ে এটা তৈরি ডিলডো যৌনানন্দের জন্য ব্যবহার করতেন।
১৫০০ শতাব্দিতে প্রথম ব্রিটেনের নারীরা ডিলডোর ব্যবহার শুরু করেন। এর কিছু শতক পরেই ডিলডোতে ইলেকটনিক্স ডিভাইস ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৫০ সালে এসে এটি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। তবে সেটা ছিল গোপনে। সর্বশেষ একুশ শতকে এসে এটা পরিপূর্ণতা পায়।
এসডব্লিউএসএস/১৩৩০
আপনার মতামত জানানঃ