State Watch
    Facebook Twitter Instagram
    সর্বশেষ প্রকাশিত
    • বিশ্বের বিভিন্ন সৈকতে ভেসে উঠছে মৃত প্রাণী: কেন?
    • যে গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে পশুপাখি সবাই অন্ধ
    • রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন-এর আড়ালে যেভাবে ভিন্নমত দমন করছে সরকার
    • তিন হাজার কোটি সূর্য এঁটে যাবে এমন ব্ল্যাক হোলের সন্ধান
    • মধ্যযুগে নারীদের আকৃষ্ট করতেই সুগন্ধির ব্যবহার শুরু
    • কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল মহাবিশ্ব?
    • ৮০০ বছরের পুরোনো যে দুর্গে একই সাথে আছে মন্দির ও মসজিদ
    • চাঁদে বিশাল জলাধারের সন্ধান বিজ্ঞানীদের
    State Watch
    • প্রধান পাতা
    • আইনপ্রয়োগ
      1. গুম-অপহরণ
      2. গ্রেপ্তার-নিপীড়ন
      3. নিপীড়নমূলক আইন
      4. প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি
      5. বিচার বহির্ভূত হত্যা
      6. রাষ্ট্রীয় বাহিনী
      Featured
      মার্চ ১২, ২০২৩

      সরকারি অর্থায়নের হাসপাতালে বেসরকারি ফি, বিপাকে রোগীরা

      Recent
      মার্চ ২৮, ২০২৩

      র‍্যাবের নির্যাতনেই মৃত্যু জেসমিনের! এবার নিখোঁজ নিহতের সন্তান

      মার্চ ২৬, ২০২৩

      র‍্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যু: নির্যাতনের চিহ্ন শরীরে!

      মার্চ ২৫, ২০২৩

      মাদকাসক্ত ১১৬ পুলিশ চাকরিচ্যুত

    • আক্রান্ত জনগোষ্ঠী
      1. আদিবাসী
      2. গণমাধ্যম
      3. ধর্মীয় সংখ্যালঘু
      4. নারী ও শিশু
      5. প্রাণ-প্রকৃতি-কৃষি
      6. ভিন্ন মতাবলম্বী
      7. রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ
      8. শ্রমজীবী
      Featured
      ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩

      বাংলাদেশে গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন মনিটর করবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯ রাষ্ট্র

      Recent
      মার্চ ৩১, ২০২৩

      যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২ দেশ উদ্বিগ্ন: মধ্যরাতে সাংবাদিক গ্রেপ্তারকে ঘিরে স্বৈরতন্ত্রের পোস্টমর্টেম

      মার্চ ২৯, ২০২৩

      যেখানে বাকস্বাধীনতা নেই, সেখানে মাছ মাংস চাইলের স্বাধীনতা চাইলেন সাংবাদিক!

      মার্চ ২৮, ২০২৩

      শরীয়তপুরে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর

    • বিশেষায়িত
      1. করোনাভাইরাস
      2. ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট
      3. নির্বাচন
      4. বিশ্ব
      5. মানবাধিকার
      6. রোহিঙ্গা জাতি
      7. সীমান্ত ইস্যু
      Featured
      মার্চ ২৬, ২০২৩

      রাহুল গান্ধীর জেল যাওয়া কি মোদিকে সিংহাসন থেকে নামাতে পারবে?

      Recent
      এপ্রিল ১, ২০২৩

      বিশ্বের বিভিন্ন সৈকতে ভেসে উঠছে মৃত প্রাণী: কেন?

      এপ্রিল ১, ২০২৩

      রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন-এর আড়ালে যেভাবে ভিন্নমত দমন করছে সরকার

      মার্চ ২৯, ২০২৩

      যে দেশে প্রতি ১৩ ঘণ্টায় একজন সাংবাদিক নির্যাতিত হয়

    • রাজনীতি-প্রশাসন
      1. অর্থনীতি ও বাণিজ্য
      2. আইন-আদালত
      3. ক্ষমতাসীন দল
      4. জাতীয় সংসদ
      5. রাজনীতি
      6. রাষ্ট্র-সরকার
      Featured
      মার্চ ২৫, ২০২৩

      রমজানেও ব্যবসায়ীদের লোভ-লালসায় দ্রব্যমূল্যের চাপে নিম্নমধ্যবিত্তরা

      Recent
      মার্চ ২৮, ২০২৩

      পোশাক রপ্তানির যে ক্ষেত্রে বিশ্বকে শাসন করছে বাংলাদেশ

      মার্চ ২৫, ২০২৩

      রমজানেও ব্যবসায়ীদের লোভ-লালসায় দ্রব্যমূল্যের চাপে নিম্নমধ্যবিত্তরা

      মার্চ ২৪, ২০২৩

      মন্ত্রীর ফোনে অবৈধ সোনা উদ্ধার পুলিশের, যুবককে থানায় মারল পাচারকারী

    • মতামত
      • বিশ্লেষণ
      • সম্পাদকীয়
      • সাক্ষাৎকার
    • গবেষণা ও প্রতিবেদন
      1. বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন
      2. চলতি প্রবণতা
      3. নীতি নির্দেশনা
      Featured
      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      আবারো অবনমন: সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২

      Recent
      মার্চ ২৬, ২০২৩

      প্রযুক্তির কারণে চিন্তা করার ক্ষমতা হারাচ্ছে মানুষ: গবেষণা

      মার্চ ২২, ২০২৩

      ভয়াবহ বিষাক্ত ঢাকার বায়ু, ঝুঁকিতে মাতৃগর্ভের শিশুরাও

      মার্চ ৭, ২০২৩

      গত বছর দেশে ৯ হাজার ৭৬৪ জন নারী সহিংসতার শিকার

    • আর্কাইভ
    State Watch
    ইতিহাস

    ইংরেজদের কাছে সিরাজের পরাজয়ের কারণ মীরজাফরদের বিশ্বাসঘাতকতা নাকি অন্যকিছু?

    ডেস্ক রিপোর্টBy ডেস্ক রিপোর্টফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩No Comments7 Mins Read

    ঐতিহাসিক ব্রুক অ্যাডামস ১৮৯৬ সালে লিখেছিলেন যে, এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, ইউরোপের ভাগ্য বাংলা বিজয়ের উপর নির্ভর ছিলো। জনগণ আজকে যে দরিদ্র বাংলাদেশকে দেখছে, তা সে সময় কল্পনাতেও ছিলো না। আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে বাংলা ছিলো এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল।

    নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাংলা তখন বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা থেকে উত্তর ভারতের বেনারস পর্যন্ত বিস্তৃত এক এলাকা। এই স্বাধীন দেশের জনসংখ্যা ছিল ২৫ মিলিয়ন, যা সেই সময়ের ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার প্রায় চারগুণ বেশি। বাংলার গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে তখন প্রচুর চাল, মাছ এবং পাট উৎপাদিত হতো। প্রদেশটি ছিল উৎপাদন কার্যক্রমে সর্বদা কর্মচঞ্চল। তখন ঢাকা ও মুর্শিদাবাদের সূক্ষ্ম মসলিন কাপড় বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। ইউরোপে তা চড়া দামে বিক্রি হতো। এছাড়া আফ্রিকার তানজানিয়া থেকে আমদানি করা লোহার আকরিক ব্যবহার করে বাংলা সেরা ইস্পাত তৈরি করতো, যা ছিল বৃটিশদের কাছে আরো লোভনীয় পণ্য।

    তাই সস্তা ও উন্নত কাঁচামালের জন্য ইউরোপীয়রাও সমৃদ্ধ বাংলায় একের পর এক বাণিজ্য জাহাজ নিয়ে ছুটে এসেছে। পর্তুগীজ, ডাচ, ওলন্দাজ, ফরাসি, জার্মানি ও ইংরেজ বণিকরা এদেশে এসেছিলেন। এমনকি আমেরিকান বণিকরাও বাদ যায়নি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পুরো ইউরোপের ভাগ্য বদলে যায় বাংলায় আসার ফলে। আর এই বাংলা বিজয়ের উপরেই আজকের লন্ডন গড়ে উঠেছে। অনুসন্ধান করে দেখা যায় যে, বৃটিশদের দখলের দশ বছরের মধ্যেই এশিয়ার এককালের সবচেয়ে ধনী প্রদেশ বাংলা একবারে নিঃস্ব হয়ে যায়। চলুন এর পেছনের ইতিহাস আর কার দায়ী, তা জানা যাক আজ।

    ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে, মাত্র কয়েক হাজার ইংরেজ সৈন্যের কাছে পরাজয় হয় বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলার। আর অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। যদিও বাংলায় কোম্পানির শাসন শুরু হয় তারও এক দশক পরে।

    প্রসঙ্গত, যুদ্ধে নবাব সিরাজের পক্ষে প্রধান সেনাপতি ছিলেন মোহন লাল, অশ্বারোহী বাহিনীর প্রধান ছিলেন মীর জাফর। ইংরেজদের পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল রবার্ট ক্লাইভ। নবাব সিরাজের সেনাবাহিনী ছিল পঞ্চাশ হাজার সদস্যের, তার মধ্যে যুদ্ধে সিরাজের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন মাত্র পাঁচ হাজার সৈন্য।

    বিশ্বাসঘাতকতা করেন মীর জাফর, খুদা-ইয়ার লুৎফ খান, রায় দুর্লভের মতো সেনাপতিরা। বিশ্বাসঘাতকতা করেন উমিচাঁদ, জগৎশেঠ, রাজা রাজবল্লভ, মহারাজা স্বরূপচাঁদের মতো কুলীনরাও।

    পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নবাব সিরাজ দ্রুত রাজধানী মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন, চেষ্টা করেন রাজধানীকে রক্ষা করতে। আমলাদের নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে নবাব সিরাজ রাজকোষ উন্মুক্ত করে দেন, আমলারাও রাজকোষ থেকে অর্থ নিয়ে সৈন্য সংগ্রহ করে রাজধানীকে রক্ষা করার বদলে রাজধানী থেকে পালিয়ে যান।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় নবাব সিরাজ ছদ্মবেশে রাজধানী ত্যাগ করেন। নবাব পরবর্তীতে ধরা পড়েন মীর মীরানের হাতে, মীর মীরানের অনুগত মোহাম্মদী বেগই কারাগারে হত্যা করেন সিরাজকে। কর্নেল ক্লাইভের সমর্থনে বাংলার মসনদে বসেন মীর জাফর।

    ইতিহাসবিদদের মতে, বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যাওয়ার ক্ষেত্রে ইংরেজ সৈন্যদের বীরত্বের চেয়ে বাংলার সেনাপতি আর কুলীনদের বিশ্বাসঘাতকতার দায়ই বেশি, দায় রয়েছে নবাব সিরাজের ব্যর্থ নেতৃত্বেরও।

    এখানে প্রশ্ন মীর জাফররা যদি বিশ্বাসঘাতকতা না করতেন, তাহলে কি বাংলা স্বাধীন থাকতো? নাকি মীর জাফররা বিশ্বাসঘাতকতা না করলেও বাংলা পরাধীন হতো?

    পলাশীর যুদ্ধের পর পরই বাংলায় ইংরেজ শাসন শুরু হয়নি। বরং, পলাশীর যুদ্ধের পরে বাংলার মসনদে বসেন সেনাপতি মীর জাফর, যিনি ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে নবাব সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন। মীর জাফরের শাসনে ডি ফেক্টো রুলার হিসেবে আবির্ভূত হয় তার ছেলে মীরান, পরবর্তীতে মীর কাসিমের স্বাধীনতা রক্ষায় ব্যর্থ চেষ্টার পরে বাংলা যায় ইংরেজ শাসনের অধীনে।

    ভারতীয় উপমহাদেশে যখন বিশাল মোগল সাম্রাজ্যের আবির্ভাব ঘটেছে, একই সময়ে ইউরোপ বিভক্ত ছিল ডজনখানেক সাম্রাজ্য আর কয়েক ডজন ছোট ছোট রাজ্যে। এসব রাজ্য ক্রমাগত একে অন্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতো, যুদ্ধের মাধ্যমে বার বার নির্ধারিত হতো ইউরোপের রাজ্যগুলোর সীমান্ত। ক্রমাগত যুদ্ধের কারণে ইউরোপীয় সামরিক শক্তিগুলো দ্রুত সামরিক প্রযুক্তিতে অগ্রগতি অর্জন করে, ইউরোপের মাধ্যমেই শুরু হয় আগ্নেয়াস্ত্রের বহুল ব্যবহার।

    অন্যান্য সামরিক শক্তিগুলোর সাথে যুদ্ধে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার প্রেরণা নিয়েই ইউরোপে শুরু হয় বাণিজ্যিক স্কেলে ইস্পাত উৎপাদন, যেটি লোহার চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক হালকা। ইস্পাত দিয়ে তৈরি নৌযানগুলোও ছিল তুলনামূলকভাবে হালকা। এই নৌযানগুলো আবার তুলনামূলকভাবে বেশি ভার বহনের পাশাপাশি ছুটতে পারত দ্রুত।

    ফলে, ইউরোপীয় জাহাজগুলো লম্বা দূরত্ব পাড়ি দিতে পারত। একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় অস্ত্রের ক্ষেত্রেও। অস্ত্র আর যোগাযোগ প্রযুক্তিতে এই তুলনামূলক সুবিধা ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে বিশ্বজয়ের নেশায় উন্মুখ করে তোলে। প্রযুক্তিগত এই উৎকর্ষই ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে এশিয়ার দ্বার খুলে দেয়, পরাক্রমশালী অটোমান সাম্রাজ্যের অংশ যেতে থাকে ইউরোপীয় শাসকদের অধীনে, ইউরোপীয় দেশগুলো বাণিজ্য শুরু করে আফ্রিকা আর আমেরিকার দেশগুলোর সাথেও।

    ইউরোপের সাম্রাজ্যগুলো যখন প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার দিকে ছুটেছে, মোগল সম্রাটরা তখন ব্যস্ত ছিলেন স্থাপত্য নির্মাণ করে নিজেদেরকে ইতিহাসের অংশ করার তাড়না নিয়ে। ইউরোপীয় দেশগুলোর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রাজস্ব আসা সত্ত্বেও, ভারতীয় উপমহাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতা আসেনি শাসকদের ভুল জায়গায় মনোযোগের কারণে।

    মোগল সাম্রাজ্যের অনবদ্য সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা তাজমহলকে। তাজমহল নির্মাণে দুই দশক সময় কাজ করেছে বিশ থেকে বাইশ হাজার শ্রমিক, তাজমহলের গায়ে স্থাপন করা হয় বহুমূল্য রত্ন। বর্তমানে তাজমহল থেকে ভারতীয় সরকার ভালো আয় করলেও যাদের করের টাকায় তাজমহল নির্মিত হয়েছিলো, তাদের জন্য এটি কেবলই অর্থ অপচয়ের বিভীষিকা ছিল। সম্রাট শাহজাহানের স্থাপত্যপ্রেমকে লালন করতে উৎপাদিত পণ্যের উপর দেড়গুণ বৃদ্ধি করা হয় রাজস্ব আদায়ের হার।

    বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ছিল বক্সারের যুদ্ধে, যেখানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মীর কাসিমের সাথে যুক্ত হন নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং মোগল সম্রাট শাহ আলম। গিরিয়া, কাটোয়া ও উদয়নালার যুদ্ধের পর বক্সারের যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজয় ঘটে মীর কাসিমের।

    মোগল সম্রাট শাহ আলম ইংরেজদের পক্ষে যোগ দিলে পুরোপুরিভাবে পতন হয় বাংলায় ইংরেজবিরোধী শক্তির। এই যুদ্ধগুলোতে ইংরেজ বাহিনীর বিজয়ের কারণ তাদের রণকৌশল এবং আধুনিক ও হালকা অস্ত্র।

    মোগল আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে স্থাপত্যশিল্পের বিপুল প্রসার ঘটলেও, ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মুখে স্বাধীনভাবে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে ওঠেনি। ইউরোপীয় যে সামরিক নেতৃত্ব ভারতীয় উপমহাদেশে আসছিল, তারা বিদ্যমান শাসকদের চেয়ে অনেক বেশি কৌশলী এবং বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রমাণ দিয়েছেন।

    সম্রাট শাহজাহানের পর মোগল সম্রাট হন সম্রাট আওরঙ্গজেব। তিনি একাধারে নয় বছর দিল্লীর বাইরে ছিলেন কেবল যুদ্ধের জন্য। সম্রাট আওরঙ্গজেবের যুদ্ধ ছিল অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে, যারা একসময় মোগল সম্রাজ্যের বিস্তারে একসাথে যুদ্ধ করেছে। নয় বছরের যুদ্ধ মোগল সাম্রাজ্যকে দুর্বল করে দেয়। সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রিয় সুবা ছিল বাংলা, কারণ তার যুদ্ধের খরচের জন্য এই সুবা অকাতরে অর্থের যোগান দিয়েছে।

    মোগল আমলে শাসকদের সাথে প্রজাদের কার্যত কোনো সম্পর্কই ছিল না, শাসকদের হয়ে খাজনা আদায় করতেন স্থানীয় জমিদার আর তালুকদাররা। শাসকের সাথে প্রজাদের সম্পর্ক গড়ে না ওঠার কারণে, বাংলায় শাসকের নিয়মিত পরিবর্তন হলেও প্রজাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ সেদিকে ছিল না। রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলো প্রজাদের গুরুত্বহীন করে তোলার ফলাফল বাংলার শাসকেরা পায় সংকটের সময়।

    নবাব সিরাজের মৃতদেহ পুরো মুর্শিদাবাদ হাতির পিঠে করে ঘোরানো হলেও কেউ পাল্টা প্রতিরোধের প্রচেষ্টা করেনি। বক্সারের যুদ্ধের পরে যখন ইংরেজরা শাসনক্ষমতা নিয়েছে, তখনও প্রজাদের দিক থেকে কোনো প্রতিরোধ আসেনি।

    মোগল রাজকোষকে বিপুল খাজনার যোগান দিতে এখানকার শাসকেরা প্রজাদের মধ্যে একটি ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিলেন। একসময়ে বাংলার শাসকেরা পরিবর্তন হয়ে যখন ইংরেজরা আসলো, তখনও প্রজারা ভয়ের সংস্কৃতি থেকেই তাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে।

    বাংলায় নিয়মিত শাসক পরিবর্তন হতো, শাসক পরিবর্তন হতো হত্যা আর ক্ষমতাচ্যুতির মাধ্যমে। অস্থিতিশীল এই রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অভিজ্ঞ শাসক পাওয়া দুরূহ ছিল, দুরূহ ছিলো শাসকদের মধ্য থেকে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার দেখা পাওয়াও। এই কারণেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে অভিজাত শ্রেণি (কুলীনরা), আবার উত্তরাধিকার নির্ধারণ সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ রেষারেষিও ছিল নিয়মিত ঘটনা।

    রাজতন্ত্রের মধ্যে শাসনকাঠামোতে প্রজাদের অন্তর্ভুক্ত করার যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আমরা ইউরোপীয় দেশগুলোতে দেখেছি, সেগুলোও ছিল না বাংলার শাসকদের মধ্যে। ইউরোপের নগররাষ্ট্রগুলোতে এসেম্বলির মাধ্যমে কর নির্ধারণ করা হতো, বাংলায় শাসকেরা কর নির্ধারণ করতেন আমলাদের সহযোগিতা নিয়ে। জনগণ থাকতেন এই পুরো প্রক্রিয়ার বাইরে।

    নবাব সিরাজের নেতৃত্বে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার একই ধরনের অভাব দেখা গেছে, অভাব দেখা গেছে সামরিক বাহিনীতে ঐক্য আনার প্রচেষ্টায়। নানা আলীবর্দী খানের প্রিয় নাতির হওয়ার যোগ্যতার নবাব হয়ে যাওয়া এই শাসকের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র আর কুলীনদের ভূমিকা।

    এই কথার প্রাসঙ্গিকতা পরবর্তীতে আরো প্রমাণিত হবে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের দিকে নজর দিলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতা আসে সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর প্রচেষ্টায়, স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি। মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাত ধরেই রাজনৈতিক সচেতনতার সংস্কৃতি দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে পরবর্তীতে।

    উপমহাদেশের কৃষক শ্রেণির রাজনৈতিক অবস্থান এখনও স্থিতিশীলতার পক্ষেই রয়ে গেছে। এজন্য ভারতীয় উপমহাদেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতার ধারণার বিকাশ ঘটেনি, বিকাশ ঘটেনি নাগরিক অধিকারের ধারণার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে জাতিরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ধরে রাখতে তাই নতুন করে রাজনৈতিক সচেতনতার সংস্কৃতির বিকাশ প্রয়োজন।

    এসডব্লিউএসএস/১৯০৫

    ছড়িয়ে দিনঃ

    আপনার মতামত জানানঃ

    State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
    Donate
    ইতিহাস

    Related Posts

    যে গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে পশুপাখি সবাই অন্ধ

    মধ্যযুগে নারীদের আকৃষ্ট করতেই সুগন্ধির ব্যবহার শুরু

    ৮০০ বছরের পুরোনো যে দুর্গে একই সাথে আছে মন্দির ও মসজিদ

    বিজ্ঞাপন

    সর্বশেষ প্রকাশিত
    এপ্রিল ১, ২০২৩

    বিশ্বের বিভিন্ন সৈকতে ভেসে উঠছে মৃত প্রাণী: কেন?

    এপ্রিল ১, ২০২৩

    যে গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে পশুপাখি সবাই অন্ধ

    এপ্রিল ১, ২০২৩

    রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন-এর আড়ালে যেভাবে ভিন্নমত দমন করছে সরকার

    এপ্রিল ১, ২০২৩

    তিন হাজার কোটি সূর্য এঁটে যাবে এমন ব্ল্যাক হোলের সন্ধান

    এপ্রিল ১, ২০২৩

    মধ্যযুগে নারীদের আকৃষ্ট করতেই সুগন্ধির ব্যবহার শুরু

    বিজ্ঞাপন

    সর্বাধিক পঠিত
    • মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই আছে পর্নোগ্রাফি: জানুন ইতিহাস
      মার্চ ২৯, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      বর্তমান যুবসমাজকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে যে ব্যাপারগুলো, তাদের মধ্যে পর্নোগ্রাফি অন্যতম। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পর্নোগ্রাফি...
    • ডাইনোসরের মতো পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে আরও যে ৬ প্রাণী
      মার্চ ২৯, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর তালিকায় সর্বপ্রথম আসে ডাইনোসরের নাম। সম্ভবত হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর তালিকায় ডাইনোসরের মতো বিকল্প আর কোনো নাম সহজে...
    • প্রায় ৪ হাজার বছর পুরনো প্রাণীর প্রোটিন দিয়ে কৃত্রিম মাংস তৈরি
      মার্চ ২৯, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      লুপ্তপ্রায় প্রাণী ম্যামথের ‘ডিএনএ’ থেকে তৈরি কৃত্রিম মাংসের বৃহত্তম বল উন্মোচন করা হল লেদারল্যান্ডের সায়েন্স মিউজ়িয়ামে। কৃত্রিম মাংস উৎপাদনকারী একটি...
    • ধর্মহীন আদিম একদল মানুষের ইতিহাস
      মার্চ ২৭, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      ২৫-৪০ হাজার বছরের মধ্যবর্তী কোনো একসময়, কাঠের নৌকা করে ভানুয়াতু, টুভ্যালু ও অন্য কোনো নিকটবর্তী নির্জন দ্বীপ থেকে ছোট্ট এই...
    • দাসপ্রথার সঙ্গে যুক্ত ছিল দ্য গার্ডিয়ান: চাঞ্চল্যকর তথ্য গবেষণার
      মার্চ ২৯, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      একসময় গবাদী পশুর মতোই হাটে-বাজারে কেনাবেচা হতো মানুষ। দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হতো তাদের। ঊনিশ শতকের শেষার্ধ্ব থেকে পুরো...
    আজকের ভিডিও
    https://youtu.be/0GMaF2T95wg
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    স্টেট ওয়াচ, বাংলাদেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণামূলক একটি প্রয়াস।
    বিস্তারিত...

    ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

    Donate Us!
    statewatch.net (Karigor Media Network), Hamburg, Germany. Email: statewatch.sa@gmail.com © ২০২৩ State Watch. Designed by @.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.