সিরিয়ায় আবারো ইসরায়েল হামলা করেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চলে এ হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে প্রাণ হারিয়েছেন একজন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন ৩ সেনাসদস্য। আজ বুধবার(৩০ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা।
জানা যায়, ইসরায়েল অধিকৃত গোলান উপত্যকা থেকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের চারপাশে স্থানীয় সময় মধ্যরাত দেড়টা নাগাদ একাধিক মিসাইল ছোঁড়া হয়। মূল লক্ষ্যস্থল ছিল গ্যালিলি শহরের উত্তরাঞ্চল এবং নবী হাবিল এলাকার বিমান বাহিনীর ঘাঁটি। অবশ্য সিরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা অনেকগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে সক্ষম হয়। তবুও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সামরিক ঘাঁটির একাংশ। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
এর আগে গত মাসে দামেস্কে সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও সিরিয়ায় মোতায়েন ইরানি কুদস বাহিনীর ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী।ওই হামলায় সামরিক বাহিনীর ১০ সদস্য নিহত ও একজন আহত হয়েছিল।
২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ায় প্রায় নিয়মিত বিরতিতেই কয়েকশো বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী ও সরকারি সেনাদের লক্ষ্য করেই মূলত হামলা চালানো হচ্ছে বলে দাবি ইসরায়েলের৷ ইসরায়েল মনে করে, সিরিয়ায় স্থায়ীভাবে অবস্থান নেয়ার জন্যই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সহায়তায় সেনা পাঠিয়েছে ইরান৷ সিরিয়ায় ইরানের সেনা সদস্যদের অবস্থান মেনে নেয়া হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল৷
#UPDATE: Video of the Israeli airstrikes on an arms depot in Syria near A-Zabadani pic.twitter.com/wUN8A43MuI
— ELINT News (@ELINTNews) December 30, 2020
এদিকে আগামী জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অফিস ছাড়ার আগে শেষবারের মতো ইসরায়েল সফর করবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। ট্রাম্পকে ‘হোয়াইট হাউসে থাকা ইসরায়েলের সবচেয়ে শক্তিশালী বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরানের প্রতি কঠোর মনোভাবের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রশংসাও করেন তিনি।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে হেরে যাওয়া ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছাড়ার আগে বড় কোনো যুদ্ধ বাঁধাতে পারেন বলে আগে থেকেই আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের আশঙ্কা ছিল। সিরিয়ায় ইসরায়েল হামলায় সেই ধারণা আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে করেন অনেকে। এমনিতে নির্বাচনে হেরে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে থাকার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন। একই সাথে ছড়াচ্ছেন বিভিন্ন প্রপাগন্ডা। যে কোনো সময় বিশ্ব নতুন কোনো যুদ্ধ দেখতে পারে বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন। তবে অনেকে মনে করেন, করোনা পরিস্থিতি ট্রাম্প-ইসরায়েল দ্বৈরথ হয়তো যুদ্ধের পরিকল্পনা থামিয়ে রেখেছেন। কিন্তু গতকালের হামলা থেকে তারা আবারো আগের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তারা মনে করেন, করোনা পরিস্থিতিতেও ইসরায়েল যেহেতু সিরিয়ায় হামলা অব্যাহত রেখেছে, ট্রাম্প ইসরায়েল দ্বৈরথ যেকোনো সময় যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এসডাব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৩৬
আপনার মতামত জানানঃ