বরিশালে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে মো. টিনা নামে জিআর মামলার এক আসামিকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার উজিরপুর থানায় এ নির্যাতন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান।
আসামির স্ত্রী পারভীন বেগমের অভিযোগ, ‘গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির মো. খালিদ আসামি মো. টিনাকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও কোনো ধরনের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন না করার আদেশ দেন। কিন্তু এ নির্দেশ অমান্য করে ৪ অক্টোবর বিকেলে উজিরপুর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে টিনাকে নির্যাতন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।’ তিনি আরও বলেন, ‘রিমান্ডে নির্যাতন না করার শর্তে আমার থেকে ৩০ হাজার টাকা নেন মাহবুবুর রহমান। কিন্তু তিনি টাকা খেয়েও আমার স্বামীর ওপর নির্মম নির্যাতন করেছেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’আদালত অবমাননায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘নির্দেশনা সত্ত্বেও থানায় এনে আসামিকে নির্যাতনের ঘটনা সুস্পষ্টভাবে আদালত অবমাননা। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’
এ বিষয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. শাহ আলম বলেন, ‘আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আদালতের এ ধরনের আদেশ আমি আগে কখনো দেখিনি। রিমান্ড মানেই সেটি কারাগারের বাইরে হয়। ফলে আসামিকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’তবে বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা দেখভালের দায়িত্ব কারা কর্র্তৃপক্ষের। এ ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তার কর্তব্যে কোনো গাফিলতি হলে, তদন্তসাপেক্ষে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে উজিরপুরের ওটরা ইউনিয়নের পূর্ব কেশবকাঠী গ্রামের শাহিন হাওলাদারের বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। রাতের খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে দুর্বৃত্তরা বাড়ির মূল্যবান মালামাল লুটে নেয়। এ ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর শাহিন হাওলাদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় ২৪ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে মো. টিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশের আবেদনে তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
আপনার মতামত জানানঃ