State Watch
    Facebook Twitter Instagram
    সর্বশেষ প্রকাশিত
    • শুরু হল আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর বেআইনি হত্যার তদন্ত
    • ছবিতে দেখুন ১৯ শতকের বরফে মোড়া নায়াগ্রা জলপ্রপাত
    • উত্তাল ভারত, মোদিকে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের জেল
    • সমকামী পরিচয় দিলেই পেতে হবে কঠিন সাজা
    • প্রায় ৪ লাখ বছর পুরনো প্রাচীনতম অস্ত্র আবিষ্কার
    • দেশের মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন: কী বলছে সরকার?
    • কেন বিদ্যুতে সরকারের ভুল পরিকল্পনার দায় চাপছে ভোক্তার উপর?
    • ভয়াবহ বিষাক্ত ঢাকার বায়ু, ঝুঁকিতে মাতৃগর্ভের শিশুরাও
    State Watch
    • প্রধান পাতা
    • আইনপ্রয়োগ
      1. গুম-অপহরণ
      2. গ্রেপ্তার-নিপীড়ন
      3. নিপীড়নমূলক আইন
      4. প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি
      5. বিচার বহির্ভূত হত্যা
      6. রাষ্ট্রীয় বাহিনী
      Featured
      মার্চ ১২, ২০২৩

      সরকারি অর্থায়নের হাসপাতালে বেসরকারি ফি, বিপাকে রোগীরা

      Recent
      মার্চ ২২, ২০২৩

      বাংলাদেশের পুলিশ কেন আইনের উর্ধ্বে?

      মার্চ ১৯, ২০২৩

      র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা ও প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘাবড়ানোর কিছু নেই’

      মার্চ ১২, ২০২৩

      সরকারি অর্থায়নের হাসপাতালে বেসরকারি ফি, বিপাকে রোগীরা

    • আক্রান্ত জনগোষ্ঠী
      1. আদিবাসী
      2. গণমাধ্যম
      3. ধর্মীয় সংখ্যালঘু
      4. নারী ও শিশু
      5. প্রাণ-প্রকৃতি-কৃষি
      6. ভিন্ন মতাবলম্বী
      7. রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ
      8. শ্রমজীবী
      Featured
      ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩

      বাংলাদেশে গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন মনিটর করবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯ রাষ্ট্র

      Recent
      মার্চ ৭, ২০২৩

      গত বছর দেশে ৯ হাজার ৭৬৪ জন নারী সহিংসতার শিকার

      ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩

      কেন বান্দরবান থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিল পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশি?

      ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩

      বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ক্রমবর্ধমান হারে চাপ বেড়েছে: আইপিআইয়ের

    • বিশেষায়িত
      1. করোনাভাইরাস
      2. ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট
      3. নির্বাচন
      4. বিশ্ব
      5. মানবাধিকার
      6. রোহিঙ্গা জাতি
      7. সীমান্ত ইস্যু
      Featured
      মার্চ ১৯, ২০২৩

      পুতিন যুদ্ধাপরাধী হলে বুশ, ব্লেয়ার বা সৌদি যুবরাজ কেন নয়?

      Recent
      মার্চ ২৩, ২০২৩

      শুরু হল আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর বেআইনি হত্যার তদন্ত

      মার্চ ২৩, ২০২৩

      উত্তাল ভারত, মোদিকে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের জেল

      মার্চ ২২, ২০২৩

      সমকামী পরিচয় দিলেই পেতে হবে কঠিন সাজা

    • রাজনীতি-প্রশাসন
      1. অর্থনীতি ও বাণিজ্য
      2. আইন-আদালত
      3. ক্ষমতাসীন দল
      4. জাতীয় সংসদ
      5. রাজনীতি
      6. রাষ্ট্র-সরকার
      Featured
      ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩

      যেভাবে গ্যাস খাতকে ধ্বংস করছে সরকারের আমদানি নির্ভরতা

      Recent
      মার্চ ১৭, ২০২৩

      উন্নয়নের ফাঁদে বাংলাদেশ: যে কারণে বাড়ছে সঞ্চয়পত্র ভাঙার প্রবণতা

      মার্চ ১১, ২০২৩

      দেশের ব্যাংকিং খাতকে ‘নেগেটিভ’ রেটিং মুডিসের: কয়েক দশক পেছাবে অর্থনীতি

      মার্চ ১১, ২০২৩

      যুক্তরাষ্ট্রে কমেছে রপ্তানি: কী পরিণতির দিকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প?

    • মতামত
      • বিশ্লেষণ
      • সম্পাদকীয়
      • সাক্ষাৎকার
    • গবেষণা ও প্রতিবেদন
      1. বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন
      2. চলতি প্রবণতা
      3. নীতি নির্দেশনা
      Featured
      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      আবারো অবনমন: সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২

      Recent
      মার্চ ২২, ২০২৩

      ভয়াবহ বিষাক্ত ঢাকার বায়ু, ঝুঁকিতে মাতৃগর্ভের শিশুরাও

      মার্চ ৭, ২০২৩

      গত বছর দেশে ৯ হাজার ৭৬৪ জন নারী সহিংসতার শিকার

      ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩

      সড়ক দুর্ঘটনা: জানুয়ারিতে ঝরেছে নিরীহ ৬৪২ প্রাণ

    • আর্কাইভ
    State Watch
    অর্থনীতি ও বাণিজ্য

    বাংলাদেশের ব্যাংক মালিক: শেয়ালের কাছে মুরগি জমা রাখা

    ডেস্ক রিপোর্টBy ডেস্ক রিপোর্টডিসেম্বর ২, ২০২২Updated:ডিসেম্বর ৩, ২০২২No Comments8 Mins Read
    ছবি: ব্যাংকিং

    আশির দশক থেকেই নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে দেশের ব্যাংক খাত। দাতাদের পরামর্শ ও ঋণে একাধিক সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়। গঠন করা হয় একাধিক কমিশন ও কমিটি। অনুসরণ করা হয় ব্যাংক পরিচালনার আন্তর্জাতিক রীতিনীতি। এতে সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের অবস্থা কিছুটা ভালো হয়েছিল। কিন্তু এক দশক ধরে উল্টো পথে চলেছে ব্যাংক খাত। নজরদারি শিথিল হয়েছে। ঘটেছে বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি। বেড়েছে খেলাপি ঋণ। অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পাশ কাটিয়ে।

    আর ব্যাংক খাতে এখন হাহাকার। কান পাতলেই শোনা যায় টাকা নেই। টান পড়েছে নগদ টাকার। কমছে আমানত। কমেছে ঋণ আদায়। সংকট ডলারেরও। অথচ দুই বছর আগেও ব্যাংক যেন নগদ টাকার ওপর ভাসছিল। এই দুই বছরে দেশের অর্থনীতির বড় কোনো পালাবদল হয়নি। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে প্রকট হয়েছে ব্যাংক খাতের তারল্যসংকট। কমেছে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল। যে ব্যাংক দুই বছর আগেও সাধারণ মানুষের আমানত রাখতে আগ্রহী ছিল না, তারাই এখন হন্যে হয়ে আমানত খুঁজছে। এমনকি অর্থের পরিমাণ বেশি হলে সাড়ে ১০ শতাংশ সুদও দিতে রাজি কিছু ব্যাংক।

    সরকার ও ব্যাংকমালিকদের সিদ্ধান্ত ছিল, ব্যাংক ঋণের সুদহার হবে ৯ শতাংশ আর আমানতের সুদ ৬ শতাংশ। সুদ কমলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের খরচ কমবে, এতে নতুন বিনিয়োগও বাড়বে। অথচ ঘটছে উল্টোটা। বাড়ছে সব ধরনের সুদহার। অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, ভুল নীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পাশ কাটিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সাধারণ মানুষের আস্থার অভাবের কারণেই ব্যাংক খাতের তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে বলে ব্যাংকার ও গবেষকেরা মনে করেন। আর এই সবকিছুর পেছনে আছে ব্যাংকমালিকদের গুণ্ডামি।

    ব্যাংক কেলেঙ্কারি বলতে একসময় প্রধানত রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎকেই বোঝানো হতো। এ ক্ষেত্রে কখনো নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণপত্র (এলসি) খুলে, কখনো ভুয়া আমদানি-রপ্তানির হিসাব দেখিয়ে, ব্যাংকের পরিচালক বা ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ঋণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এসব জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের সহায়ক ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সোনালী ব্যাংকের হল-মার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, জনতা ব্যাংকে বিসমিল্লাহ গ্রুপ, অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ অনিয়ম ইত্যাদি সাম্প্রতিক কালের উল্লেখযোগ্য কতগুলো ব্যাংক কেলেঙ্কারি, যেগুলো ঘটেছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংককে কেন্দ্র করে।

    রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ছাড়াও গত এক দশকে বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বহু ঋণ কেলেঙ্কারি ঘটেছে, যেগুলো ব্যাংক কেলেঙ্কারির ভিন্ন একটা ধরনকে নির্দেশ করে। আর তা হলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে এরপর নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা জনগণের আমানত লোপাট করা।

    ব্যাংক আর দশটা প্রাইভেট বা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মতো নয়। একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে মোটামুটি ৪০০ কোটি টাকা পেইড-আপ ক্যাপিটাল লাগে। যাঁরা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, তাঁরা এই টাকা বিনিয়োগ করেন। এরপর এই ব্যাংকে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ আমানত রাখেন। ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ব্যাংকের পরিচালকেরা এই হাজার হাজার কোটি টাকার আমানত নিয়ন্ত্রণ করেন, কোথায় বিনিয়োগ করবেন, কাকে ঋণ দেবেন তার সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে ব্যাংক উদ্যোক্তা হয়ে হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠনের জন্য প্রথমে রাজনৈতিক ক্ষমতা ও পৃষ্ঠপোষকতা কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়া হয়, তারপর ব্যাংকে জমা পড়া জনগণের আমানত ঋণের নামে লুটপাট করা হয়।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক পরিচালক তাঁর মোট শেয়ারের ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ নিজ ব্যাংক থেকে নিতে পারেন না। স্বনামে নিজ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার এই ‘অসুবিধা’ দূর করতে তাঁরা একদিকে বেনামে আত্মীয়-পরিজনের মাধ্যমে কিংবা কাগুজে কোম্পানি খুলে নিজ ব্যাংক থেকে ঋণ নেন, অন্যদিকে পারস্পরিক যোগসাজশে ও সমঝোতার মাধ্যমে অন্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ লুণ্ঠন করেন।

    সংবাদমাধ্যমে আসা এ রকম কিছু ঘটনার উদাহরণ দেখা যাক। মোট ৩৯ জন ব্যক্তি উদ্যোক্তা ও ১২টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে ২০১৩ সালে যাত্রা করে ফারমার্স ব্যাংক। খোদ মালিকপক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ৪০০ কোটি টাকা নিয়ে কার্যক্রমে আসা ব্যাংকটি খুব দ্রুতই ২৮৩ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়ে। আমানতের চেয়ে ঋণ বেশি হওয়ায় ফারমার্স ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ফেরত প্রদান বন্ধ হয়ে যায় এবং অন্যদিকে নানা অনিয়ম করে দেওয়া ঋণও আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

    ২০০৯ সালে সরকার পরিবর্তনের পরপর ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) কর্তৃত্ব চলে যায় সিকদার গ্রুপের হাতে। ওই সময় থেকে সিকদার পরিবারের সম্পদ বাড়তে থাকে আর খারাপ হতে থাকে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা। ব্যাংকের কার্যক্রমে পরিচালনা পরিষদের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বেনামি ঋণের কারণে ২০১৪ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।

    ২০০৯ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৩৮৮ কোটি টাকা, মার্চ ২০২০ নাগাদ যা বেড়ে হয় ২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। আবার যথাযথভাবে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার কারণে খেলাপি ঋণের এই চিত্রও প্রকৃত চিত্র নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের অনেকগুলোই নামে-বেনামে সিকদার পরিবার ও তাঁদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে।

    ব্যাংকের মালিকানা দখলের মাধ্যমে কীভাবে ঋণের নামে জনগণের আমানতের অর্থ লুণ্ঠন করা হয়, তার একটি বড় দৃষ্টান্ত হতে পারে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এস আলম গ্রুপের হাতে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা আসার মাত্র ১৫ মাসের মাথায়ই তীব্র আর্থিক সংকটে পড়ে যায় ব্যাংকটি। সর্বশেষ পরিস্থিতি হলো, ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে কোম্পানি ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে চলতি বছরেই প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিটের সূত্র ধরে নিউএজ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক থেকে এভাবে নানা উপায়ে বিভিন্ন কোম্পানির নামে মোট ৩০ হাজার কোটি ঋণ হিসেবে বের করে নিয়েছে।

    বাংলাদেশে বেসরকারি ব্যাংকে একের পর এক জালিয়াতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটার পরও নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি প্রতিষ্ঠার বদলে উল্টো ব্যাংকমালিকদের হাতে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ অবারিত করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের আইনি ও নীতিগত সহায়তার মাধ্যমে।

    শুধু ব্যাংক নয়, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দখল করেও বিপুল ঋণ নিয়ে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময় সবচেয়ে আলোচিত হলো পি কে হালদার কর্তৃক চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান—ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে বিপুল অর্থ ঋণ হিসেবে নিয়ে আত্মসাৎ করা।

    ২২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, দেশের ৫৫টি ব্যাংকের পরিচালকেরা একে অন্যের ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬১৬ কোটি ১২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন, যা সেসময় ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের ১১ দশমিক ২১ শতাংশ। লক্ষণীয় হলো, পরিচালকদের নিজ ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬১৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ। কিন্তু মুশকিল হলো, ঋণ অনুমোদন থেকে শুরু করে ঋণ পুনর্গঠন বা অবলোপনের কর্তৃত্ব ব্যাংক পরিচালকদের হাতে থাকার কারণে এই বিপুল পরিমাণ ঋণের ঠিক কত অংশ আসলে খেলাপি, কত অঙ্কের ঋণ পুনর্গঠন করা হয় কিংবা অবলোপন করা হয়, তা নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।

    বাংলাদেশে বেসরকারি ব্যাংকে একের পর এক জালিয়াতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটার পরও নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি প্রতিষ্ঠার বদলে উল্টো ব্যাংকমালিকদের হাতে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ অবারিত করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের আইনি ও নীতিগত সহায়তার মাধ্যমে। ২০১৮ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে একই পরিবার থেকে চারজনকে টানা ৯ বছর বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক থাকার সুযোগ করে দেওয়া হয়। এর আগে কোনো বেসরকারি ব্যাংকে এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুজন পরিচালক হতে পারতেন। আর তিন বছর করে দুই মেয়াদে ছয় বছর পরিচালক থাকার পর তিন বছর বিরতি দিয়ে আবারও পরিচালক হওয়ার সুযোগ ছিল।

    মালিকপক্ষের লুটপাটে বিপর্যস্ত বেসরকারি ফারমার্স (বর্তমানে পদ্মা) ব্যাংককে ২০১৮ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দেওয়া হয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কর্তৃক বিশেষ আদেশ জারি করে—এক ব্যাংকের কাছে অন্য কোনো ব্যাংকের ১০ শতাংশের বেশি মালিকানা না থাকা কিংবা একই সঙ্গে একাধিক ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে না থাকার যে বাধ্যবাধকতা ছিল ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসারে, তা থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পদ্মা ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদনে লোকসানের তথ্য গোপন রাখার মতো ব্যতিক্রমী সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

    এ ছাড়া লুটপাটের শিকার বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে বেইল আউট করতে সরকার জনগণের অর্থ আরও বেশি পরিমাণে বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখার সুযোগ করে দিয়েছে। ২০১৮ সালের এপ্রিলে সরকারি সংস্থাগুলোর তহবিলের ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে রাখার যে বিধান ছিল, সেটা পরিবর্তন করে ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়, যার ফলে বেসরকারি ব্যাংকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর তহবিলের ২৫ শতাংশের বদলে ৫০ শতাংশ রাখার সুযোগ তৈরি হয়। শুধু তা-ই নয়, সব ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার (সিআরআর) রাখতে হয়, তা-ও ৬.৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ কমিয়ে ৫.৫ শতাংশ করা হয়, যার ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর হাতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা অবমুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

    সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সিআরআর-এর মতো মুদ্রানীতির গুরুত্বপূর্ণ এই হাতিয়ারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় একটি হোটেলে ব্যাংকমালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাদের দাবির মুখে।

    রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিপুল খেলাপি ঋণের সমস্যার সমাধান হিসেবে অনেক সময় এগুলোকে বেসরকারীকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রশ্ন হলো, এখন বেসরকারি ব্যাংকের খোদ মালিকপক্ষ যে জনগণের আমানত খেয়ানত করছেন, তার নিদান কী হবে! আসলে যদি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকির কাজ যথাযথভাবে পালন করতে না পারে, যদি নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করা ব্যবসায়ীরাই ঠিক করেন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন পদে কারা আসবেন, যদি ক্ষমতা-ঘনিষ্ঠ বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের লাগামহীন খেলাপি ঋণ ও ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা বহাল থাকে, যদি লুটপাটের শিকার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে বেইল আউট করতে সরকার জনগণের অর্থ ঢালতে থাকে, ব্যাংক কেলেঙ্কারির মূল হোতাদের কারও বিচার ও শাস্তি না হয় তাহলে সরকারি-বেসরকারি কোনো ব্যাংকেই গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।

    এসডব্লিউএসএস/১৮৪৬

    ছড়িয়ে দিনঃ

    আপনার মতামত জানানঃ

    State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
    Donate
    অর্থ আত্মসাৎ ব্যাংক

    Related Posts

    ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ১ লাখ ৪৬ হাজার ডলার গেল কই?

    দেশের ব্যাংকিং খাতকে ‘নেগেটিভ’ রেটিং মুডিসের: কয়েক দশক পেছাবে অর্থনীতি

    জানুয়ারিতে ব্যাংকিং খাতে তারল্য কমেছে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি

    বিজ্ঞাপন

    সর্বশেষ প্রকাশিত
    মার্চ ২৩, ২০২৩

    শুরু হল আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর বেআইনি হত্যার তদন্ত

    মার্চ ২৩, ২০২৩

    ছবিতে দেখুন ১৯ শতকের বরফে মোড়া নায়াগ্রা জলপ্রপাত

    মার্চ ২৩, ২০২৩

    উত্তাল ভারত, মোদিকে মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের জেল

    মার্চ ২২, ২০২৩

    সমকামী পরিচয় দিলেই পেতে হবে কঠিন সাজা

    মার্চ ২২, ২০২৩

    প্রায় ৪ লাখ বছর পুরনো প্রাচীনতম অস্ত্র আবিষ্কার

    বিজ্ঞাপন

    সর্বাধিক পঠিত
    • প্রায় ৪ লাখ বছর পুরনো প্রাচীনতম অস্ত্র আবিষ্কার
      মার্চ ২২, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      জার্মানির একটি রাজ্য লোয়ার স্যাক্সোনির ছোট্ট শহর শোনিঙ্গেন। মাত্র দশ-এগারো হাজার লোকের শহরে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে নির্মাণ করা হয়েছে শোনিঙ্গেন...
    • ছবিতে দেখুন ১৯ শতকের বরফে মোড়া নায়াগ্রা জলপ্রপাত
      মার্চ ২৩, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      প্রতিবছরই বরফে মুড়ে যায়নায়াগ্রা ফলস। কানাডার হাড়হিম করা ঠান্ডায় বরফ হয়ে যায় নায়াগ্রা ফলসের পানি। নায়াগ্রা ফলসে বেড়াতে গিয়ে চোখধাঁধানো...
    • ভেঙে দুই টুকরো হবে আফ্রিকা মহাদেশ, তৈরি হবে নতুন এক সমুদ্র
      মার্চ ১৯, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      সেই কোন কালে তৈরি হয়েছিল বিশ্ব মানচিত্র। আজও তা অনুসরণ করে চলছে গোটা দুনিয়া। ছোটখাটো পরিবর্তন যে ঘটেনি, তা নয়।...
    • ধর্ম এবং কুসংস্কার একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ!
      মার্চ ১৮, ২০২৩
      By স্টেটওয়াচ ডেস্ক
      জাকির হোসেন মনে করা হয় যে মানুষের কুসংস্কার বা অতিপ্রাকৃত বিশ্বাসগুলি সভ্যতার প্রথম দিক্কার এবং তারা  প্রথম প্রাগৌতিহাসিক ধর্ম সৃষ্টি...
    • ডারউইনের হাজার বছর আগে বিবর্তনবাদের তত্ত্ব দিয়েছিলেন যে মুসলিম দার্শনিক
      মার্চ ২২, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      আধুনিক বিজ্ঞানের যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার তার অন্যতম ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব। তার এই তত্ত্বে দেখানো হয়েছে প্রাণীরা সময়ের...
    আজকের ভিডিও
    https://youtu.be/k-yAjxNV02I
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    স্টেট ওয়াচ, বাংলাদেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণামূলক একটি প্রয়াস।
    বিস্তারিত...

    ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

    Donate Us!
    statewatch.net (Karigor Media Network), Hamburg, Germany. Email: statewatch.sa@gmail.com © ২০২৩ State Watch. Designed by @.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.