ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কথিত কটূক্তির অভিযোগে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার নাটঘর এলাকা থেকে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরকে আটক করা হয়।
নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নাটঘর গ্রামের এক সৌদিপ্রবাসী ফেসবুকে ইসলাম নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই কিশোর সেখানে কমেন্ট করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সেখানে বিতণ্ডা হয়। পরে তাদের এ কথার স্ক্রিনশট গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন কেউ। এতে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে ওই কিশোরকে আটক করে নবীনগর থানা পুলিশ।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল বলেন, ‘নবীনগর এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন নষ্ট না হয় এবং আসন্ন দুর্গাপূজার আনন্দ বিনষ্ট না হয়, সে জন্য দ্রুত ওই কিশোরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখম মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর বাংলাদেশে এ আইন নিয়ে বিতর্ক এবং সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। অনেকেরই অভিযোগ এ আইন অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়রানির এবং অপব্যহারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসবের মধ্যেই প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হচ্ছে শিশু-কিশোরদের বিরুদ্ধেও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূক্তি ছড়ানো, ধর্ম অবমাননা, এমনকি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে জুয়া খেলার অভিযোগেও অল্প বয়সীদের বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা হয়েছে।
এদিকে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম কর্মীরা আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতেই সরকার এমন আইন করেছে। তবে এসব অপরাধের বিচারে প্রচলিত আইনই যথেষ্ট।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সরকারের সমালোচনা করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। এই আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের যেসব ঘটনা ঘটছে, পরিষ্কারভাবে তা গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি।
তারা বলেন, বাংলাদেশে হত্যার আসামির দণ্ড মওকুফ হয় অথবা দ্রুত জামিন হয়, ঋণখেলাপি ও আর্থিক খাত থেকে লুটপাটকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে, হাজার-কোটি টাকা বিদেশে পাচারকারী সহজেই দেশ ছাড়তে পারে, কিন্তু ফেসবুকে সরকারবিরোধী কিংবা ক্ষমতাসীন সরকারের লোকজনের বিরুদ্ধে কিছু লেখা যেন তার চাইতে বড় অপরাধ!
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪১১
আপনার মতামত জানানঃ