পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গ্রাহক চাটমোহর পৌরশহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা শ্রী অধীর কুমার সরকার আগস্ট মাসে তার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল দিয়েছেন ৮২২ টাকা। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে তার বিল এসেছে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৬১ টাকা! বাড়িতে তার নামে একটি পল্লী বিদ্যুতের মিটার রয়েছে।
এদিকে, চাটমোহর পৌর সদরের একটি আবাসিক ভবনের মিটারে সেপ্টেম্বর মাসের ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ভবনে কেউ বসবাস না করলেও বিল এসেছে ১১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৭ টাকা।
আর ব্যবহার হয়েছে ৯০ হাজার ১ শত ৫০ ইউনিট। বিল প্রস্তুতকারী আসমা ও এজিএম (অর্থ) এর স্বাক্ষরসহ বিলটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা হাতে পান। কিন্তু মিটার গ্রহীতার পরিবার জানায় গত ৬ মাসে পরিবারের কোনো সদস্যই থাকেন না বাড়িতে। এরকম ভৌতিক বিল পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অফিসে নতুন কোনো বিষয় নয়। কারো নজরদারি না থাকায় এসব ঘটনা ঘটলেও পবিস-১ প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। জোর করেই দোষ চাপানো হয় গ্রাহকের ঘাড়ে।
অভিযোগ আছে, অদক্ষ অপারেটর দ্বারা বিদ্যুৎ বিল তৈরির ফলে বিদ্যুৎ বিলের কপিতে নাম, পিতার নাম, মোবাইল নম্বর ভুলে ভরা। তারা মিটার রিডিং না করে অফিসে বসেই বিদ্যুৎ বিল তৈরি করেন। এজিএম (অর্থ) এর এই বিল ক্রসচেক করার কথা থাকলেও তিনি কিছুই করেন না।
এছাড়া মিটারে কম বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখিয়ে বছর শেষে হাতিয়ে নেন অতিরিক্ত টাকা। ফলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন নানা সময়।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় অধীর কুমার সরকারের জিরো পয়েন্ট বাড়ির ৪৭৬৬ নম্বর হিসাবের সেপ্টেম্বর মাসের বিদ্যুৎ বিল দায়িত্বরত লোকের কাছে দিয়ে চলে যান মিটার রিডার। এসময় পরিবারের লোকজন বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দেখে আঁতকে ওঠেন।
মিটার রিডার রেজাউলকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ‘দেখছি’ বলে এই বিলের কপিটি নিয়ে নিতে চান। পরে রাতে আবারো নতুন করে প্রিন্ট দেওয়া হয় এই বিল। সকালে এজিএম অর্থকে দিয়ে জোরপূর্বক আগের বিল নিয়ে নতুন বিল চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন মিটার রিডার।
এসব বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অদক্ষ লোকবল আর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান সমিতির সদস্যরা।
বিল প্রস্তুতকারী আসমা খাতুন ভুল স্বীকার করে বলেন, কাজ করতে গেলে একটু ভুল হতেই পারে। তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে পাবনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আকমল হোসেন বলেন, বিলটি কেউ ক্রসচেক করলে এমনটি হতো না। যদি কারো দোষ থাকে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসডব্লিউ/এসএস/০৮৪৭
আপনার মতামত জানানঃ