যুক্তরাজ্যে করোনার একটি নতুন ধরন খুঁজে পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ করোনার চেয়ে অনেক দ্রুত ছড়াচ্ছে নতুন এই করোনার স্টেইনটি। যে কারণে যুক্তরাজ্যের মানুষকে নতুন করে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সাথেও বৈঠক করেছে। নতুন করোনাভাইরাসের কথা শোনার পরেই ইউরোপের সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের সাথে যাতায়াত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোববার জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রথমে টুইট করে বিমান বন্ধের ঘোষণা করেন। পরে সরকারের মুখপাত্রও সে কথা জানান। বলা হয়েছে, রোববার সকাল ছয়টা থেকে এই নিয়ম কার্যকরী করা হয়েছে। আপাতত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
শুধু জার্মানি নয়, নেদারল্যান্ডসও ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। নদীপথের যাত্রীদেরও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে পণ্যবাহী পরিবহণ বা বিমান চলাচল করতে পারবে। ফ্রান্স অবশ্য ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থল ও আকাশ পথের সব ধরনের পরিবহন বন্ধ ঘোষণা করেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার লরি চলাচল করে দেশ দুটির মধ্যে।
আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে ইতালি। দেশটিতে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে।
আয়ারল্যান্ডে বছরের এই সময়টাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করে। তবে আয়ারল্যান্ড সরকার ঘোষণা করেছে, ইংল্যান্ড, ওয়ালেস এবং স্কটল্যান্ড থেকে আসা ফ্লাইটগুলোকে মধ্যরাত থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ করা হবে। তারা বলেছে, ‘জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে, ব্রিটেনের জনগণ আকাশ বা সমুদ্রপথে আয়ারল্যান্ডে ভ্রমণ করা উচিত নয়’।
যুক্তরাজ্য থেকে বিভিন্ন ফ্লাইট নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে অস্ট্রিয়া। বুলগেরিয়া মধ্যরাত থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যাওয়া ও আসার সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে। তবে অন্যান্য দেশের স্বল্পমেয়াদী ব্যবস্থার বিপরীতে, তাদের নিষেধাজ্ঞানটি ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী করা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের মতো তুরস্কও সাময়িকভাবে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট বাতিল করেছে।
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরবও এমন পদক্ষেপ নিল। সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরব কোনো ব্যতিক্রম ছাড়া এক সপ্তাহের জন্য সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করছে। এই স্থগিতাদেশের সময় আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়তে পারে। বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর জন্য এই স্থগিতাদেশ প্রযোজ্য হবে না। তারা সৌদি আরব ত্যাগ করতে পারবে।
সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে—ইউরোপের এমন কোনো দেশ বা অন্য যেকোনো দেশ থেকে যাঁরা ইতিমধ্যে সৌদি আরবে এসেছেন, তাঁদের দুই সপ্তাহ সেলফ আইসোলেশনে থাকতে হবে। এ ছাড়া করোনা পরীক্ষা করতে হবে।
সর্বশেষ কানাডাও দেশটির সঙ্গে ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। একইসঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, চিলি এবং কলম্বিয়া যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত করেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশ দেশটির সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল বন্ধের কথা ভাবছে।
এসডাব্লিউ/এসকেএইস/আরা/০৫৫০
আপনার মতামত জানানঃ