মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে চীনের নিক্ষেপ করা রকেটের ধ্বংসাবশেষ।রকেটটির ধ্বংসাবশেষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে এই সপ্তাহে (শনি-রবি) পৃথিবীতে নেমে এসে বিধ্বস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রকেটের ধ্বংসাবশেষ কোনো জনবহুল এলাকায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে এনিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে এক দেশের নিক্ষেপ করা রকেটের দায়িত্ব কেন অন্য দেশ নেবে।
তিয়ানগং নামের স্পেস স্টেশন নির্মাণ শুরু করেছে চীন। এতে পাঠানো হচ্ছে অনেক রকেট। এসব রকেট পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় ফিরে আসার সক্ষমতা কম।
চীনের সর্বশেষ রকেট উৎক্ষেপণ ছিল গত রবিবার। একটি লং মার্চ ৫ রকেট একটি ল্যাবের অংশ নিয়ে তিয়ানগং স্টেশনে পৌঁছেছে। চীন সরকার বুধবার বলেছে, তাদের রকেটের পুনঃপ্রবেশ পৃথিবীর স্থলভাগে কারও জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে না বললেই চলে। কারণ এটি সম্ভবত সমুদ্রে পড়বে।
রকেটের ধ্বংসাবশেষ কোনো জনবহুল এলাকায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে এনিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে এক দেশের নিক্ষেপ করা রকেটের দায়িত্ব কেন অন্য দেশ নেবে।
তবে রকেটের টুকরোগুলো জনবহুল এলাকায় নেমে আসার সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই তাও নয়। ২০২০ সালের মে মাসে আইভরি কোস্টের এরকম ঘটনায় প্রাণহানি না হলেও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
চীনা রকেটের খালি অংশটি এখন পৃথিবীর চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে রয়েছে। এটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টানে ক্রমেই একটি অনিয়ন্ত্রিত পুনঃপ্রবেশের পথে এগোচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা দ্য অ্যারোস্পেস করপোরেশনের মতে, রবিবার গ্রিনিচ মান সময় মধ্যরাতের পর (১৬ ঘণ্টা কমবেশি হতে পারে) এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকবে।
২৫ টন ওজনের ধ্বংসাবশেষটি ঠিক কোথায় পড়বে তা সঠিকভাবে বলা এত আগে সম্ভব নয়। অ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, ধ্বংসাবশেষ পড়ার সম্ভাব্য অঞ্চল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।
চীনের মহাকাশ সংস্থার কাছে এর আগে নাসা আহ্বান জানিয়েছিল যাতে তারা রকেট এমনভাবে নকশা করে যে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় তা ছোট ছোট টুকরো হয়ে যায় এবং এটাই আন্তর্জাতিক নিয়ম। চীনের নির্মাণাধীন তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে যাওয়া সাম্প্রতিক রকেটগুলোতে পৃথিবীতে পড়ার সময় নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা নেই।
বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা একমাত্র মহাকাশ স্টেশন আইএসএসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা, জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে অংশ নিতে দেয়া হয়নি চীনকে। ২০২৪ সালেই মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আইএসএসের। ধারণা করা হচ্ছে, এরপর পৃথিবীর কক্ষপথে একমাত্র মহাকাশ স্টেশনটি হবে চীনের। আকারে চীনেরটি আইএসএসের চার ভাগের এক ভাগ। কিন্তু এতে মহাকাশ গবেষণাগারের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকবে পূর্ব এশিয়ার দেশটির।
চীন মহাকাশে নিজের আধিপত্য কায়েম করতে যে আচরণ করছে তা বিশ্বের সুরক্ষার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠছে। চীন ইতিমধ্যে বিশ্বকে করোনা ভাইরাস উপহার দিয়েছে ,যার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে বিশ্বের অর্থব্যবস্থা। এখন চীনের রকেট বিশ্বের জন্য একটি নতুন সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪৩৫
আপনার মতামত জানানঃ