ব্যাপক খরার মুখে পড়েছে আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চল। সেই কারণে মিড লেকের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। আর হ্রদের পানিরস্তর কমে যেতেই উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক মৃতদেহ। ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের পক্ষথেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গত সোমবার বিকেলেও এই হ্রদের ন্যাশনাল রিক্রিয়েশন এরিয়ার তটে অজ্ঞাতপরিচয় একটি মানব দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সম্বন্ধে জানতে বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। নেভাদা এবং অ্যারিজোনার মধ্যে হুভার বাঁধ তৈরির ফলে আমেরিকার এই হ্রদটি তৈরি হয়। এই এলাকাকে ঘিরে একটি ছোট পর্যটন কেন্দ্রও গড়ে উঠেছে। হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় তট থেকে মৃত দেহাবশেষগুলো উদ্ধার হতে শুরু করে। এর আগেও এই হ্রদ থেকে দুইটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পানিরস্তর নামতে প্রথমে বাক্সবন্দি এক ব্যক্তির দেহ পাওয়া যায়। মাথায় গুলি লাগার কারণে এই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর লাস ভেগাসের পুলিশ জানিয়েছে, সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে আশির দশকের শুরুর মধ্যে এই ব্যক্তি মারা যান। এই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছিল বলেই মনে করছেন এই ঘটনার তদন্তকারীরা।
এর কিছু দিন পর দুইজন নারী এই লেকে বোটিং করার সময় তাদের বোট হঠাৎই কোনো কিছুতে লেগে আটকে যায়। ঐ নারীরা দেখেন তাদের বোট কয়েকটি মানব হাড়ে আটকে গিয়েছে। এরপর সেখানে খোঁজাখুঁজি করতেই বেরিয়ে আসে একটি মানব কঙ্কাল। তবে এই ব্যক্তির মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল তা নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারীরা।
দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকায় বসবাসকারী মানুষদের কাছে এই জলাধারের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে সুবিশাল এই জলাধারের পানিরস্তর ১৯৮৩ সাল থেকে প্রায় ১৭০ ফুট নেমে গিয়েছে। এই হ্রদের জলধারণের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। জলাধারে পানিরস্তর এতই কমে গিয়েছে যে, শীঘ্রই এই হ্রদ ‘মৃত হ্রদ’-এর তকমা পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হ্রদের পানিস্তর কমে যাওয়ায় এই মাসের শুরুর দিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলের একটি নৌকার খোঁজ মেলে।
উদ্ধার হওয়া এই নৌকাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সমুদ্র সৈকতে সৈন্য অবতরণ করার জন্য ব্যবহার করা হত বলেও বিশেষজ্ঞজদের দাবি। এ ছাড়াও এই হ্রদের তলা থেকে আরো বহু জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। তবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মৃতদেহগুলো আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, আগে মানুষকে হত্যা করে অপরাধ লুকনোর জন্য এই জলাশয়ে মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হত। পানিরস্তর আরো নামলে এই হ্রদ থেকে আরো দেহাবশেষ পাওয়া যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৯৫০
আপনার মতামত জানানঃ