থার্ড টেম্পল নির্মাণ কি ইহুদিরা শুরু করেছে? জেরুজালেমের বায়তুল মোকাদ্দাস এলাকা মুসলিমদের দখলে, তাহলে কীভাবে ইহুদিরা থার্ড টেম্পল নির্মাণ করবে এবং সেখান থেকে তাদের মেসিয়াহ শাসনকার্য পরিচালনা করবেন? থার্ড টেম্পলকে ঘিরে ইহুদিরা কী কী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমেরিকার লিবার্টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রত্মতত্ত্ববিদ ড. র্যান্ডল প্রাইস রচিত একটি আর্টিকেলে চোখ বোলানো যাক। Jewish Voice নামক ওয়েবসাইটে Update on the Building of the Third Temple শিরোনামে আর্টিকেলটি প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে ড. র্যান্ডল প্রাইস ইহুদিদের থার্ড টেম্পল নির্মাণের প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোচনা করেন। নিচে আর্টিকেলটির বাংলা ভাষান্তর তুলে দেওয়া হলো :
যারা ইহুদি ধর্মশাস্ত্রে উল্লেখিত ইহুদি জাতি এবং ইসরাইলের ভূমির সাথে বাইবেলের চুক্তিতে বিশ্বাস করেন তারা জানেন, টেম্পলের পুনর্নির্মাণ করা প্রতিশ্রুত ভবিষ্যতের একটি অংশ। ইসরাইলের জন্য নতুন চুক্তি সম্পর্কে Book of Jeremiah-তে বলা আছে-
“প্রভু ঘোষণা করেন, ‘দেখো, সেই দিন আসছে। যখন আমি ইসরাইল এবং ইহুদি বংশধরদের জন্য যে সুদিনের প্রতিশ্রুতি করেছি তা পূর্ণ করব। সেই সময়ে আমি ডেভিডের একজন ধার্মিক বংশধরকে সামনে নিয়ে আসব। সে পৃথিবীতে ন্যায় ও সততা প্রতিষ্ঠা করবে। সেই সময়ে ইহুদি জাতি ও জেরুজালেম নিরাপদে থাকবে এবং সবাই তাঁকে বলবে, ‘প্রভুই আমাদের ধার্মিকতা।’ ইসরাইলের সিংহাসনে বসার জন্য সবসময়ই ডেভিডের বংশের কেউ না কেউ থাকবে এবং লেবীয় যাজকদের কেউ না কেউ সর্বদা নাম নৈবদ্য, বলি দেওয়ার জন্য থাকবে।” (Jeremiah 3:14-18)
ওপরের অনুচ্ছেদে মেসিয়ানিক যুগের কথা বলা হয়েছে, যখন সমগ্র ইসরাইল পুনঃস্থাপিত হবে এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ হবে। সেসময়ে ডেভিডের যোগ্য এক বংশধর ইসরাইলের সিংহাসনে বসবেন এবং টেম্পল তৃতীয়বআরের মতো স্থাপিত হবে এবং লেবীয় যাজকদের দ্বারা পরিচালিত হতে থাকবে। আর এটিই যদি হয় ভবিষ্যতের বাস্তবতা, তাহলে কি ইসরাইলে থার্ড টেম্পল স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে?
১৯৮৭ সালে যখন থার্ড টেম্পল স্থাপনের জন্য টেম্পল আন্দোলন শুরু হয়, তখন থেকে উপরোক্ত বাণীটিকে বাস্তবে পরিণত করার কাজ ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছে। তবে অর্থোডক্স ইহুদিদের মতে, আজকের আধুনিক ইসরাইল ও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ইহুদি অধিবাসীদের বেশিরভাগই সেক্যুলার। তাই টেম্পল পুনঃস্থাপন করার ক্ষেত্রে তারা কোনো কাজে আসবে না। কারণ টেম্পল স্থাপন একটি অত্যন্ত পবিত্র ও আধ্যাত্মিক কাজ। অর্থোডক্স ইহুদিদের মাঝে যারা সানহেড্রিনকে গ্রহণ করেছিলেন, তারাই টেম্পল তৈরির তদারকি এবং এসংক্রান্ত সব আইনগত কর্মকান্ড সম্পন্ন করে, পরিপূর্ণভাবে টেম্পল পুনঃস্থাপনের কাজটি করতে চান।
অর্থোডক্ত বা গোঁড়া ইহুদিদের মতে, টেম্পল পুনঃস্থাপন পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও মানবজাতির মুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। গের্শন সলোমন, মাউন্ট ফেইথফুল টেম্পলের পরিচালক। ইসরাইলি সমাজকে টেম্পল পুনর্নির্মাণের জন্য প্রস্তুত করতে তার সংস্থা কাজ করছে, যেন তারা টেম্পল পুনর্নির্মাণের বিষয়টি গ্রহণ করতে পারে এবং প্রচার করতে পারে। তারাই থার্ড টেম্পলের ভিত্তি স্থাপন করেছেন এবং টেম্পল প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করেছেন। গের্শন বলেন-
“এই থার্ড টেম্পল স্থাপন করা এমন একটি কাজ যা বাইবেলের ভূখন্ডে, বাইবেলের অনুসারীদের মুক্তির জন্য করতেই হবে। আমি কল্পনাই করতে পারি না এমন ইসরাইল বা ইসরাইলি জীবন; যাদের জীবনের কেন্দ্রে এই টেম্পল নেই।”
তবে এমন অনেক ইহুদি আছেন যারা এই টেম্পল স্থাপনের ব্যাপারে একমত নন। কারণ দীর্ঘকাল যাবত প্রবাসে বসবাসের ফলে তারা প্রবাসী মানসিকতা ও আধ্যাত্মিকতা ধারণ করেছেন। মূলত এরাই বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীর আক্ষরিক পরিপূর্ণতা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। তাদের নিটক মাউন্ট টেম্পলের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা (যার ফলে টেম্পলের জায়গাটি এখন মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে) গ্রহণযোগ্য। টেম্পল আন্দোলনের সাথে জড়িত ইহুদি নেতারা বিশ্বাস করেন, বর্তমান পৃথিবীতে ইয়াহওয়েহ কর্তৃক প্রেরিত কোনো ব্যক্তি বা শেকিনাহর অনুপস্থিতির কারণে যতটুকু ইহুদিদের আধ্যাত্মিকতা সেই স্তরে নেই যে স্তরে ইয়াহওয়েহ চান। টেম্পল ইন্সটিটেউটের পরিচালক রাবি চাইম রিচম্যান, তিনি টেম্পলের আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক পাত্র তৈরি করেছেন এবং ভবিষ্যতে টেম্পলের অনুষ্ঠান পালনের জন্য যাজকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তিনি বলেন-
“শেকিনাহ কেবল মন্দিরের মধ্যে দিয়েই আনা হয়েছিল, এবং মানুষ হিসেবে আমাদের যে মিশন তাতে আমরা টেম্পল ছাড়া কখনই প্রয়োজনীয় আধ্যাত্মিক স্তরে পৌঁছুতে পারব না।”
এজন্য অর্থোডক্স ইহুদিরা টেম্পল পুনর্নিমাণ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কারণ তারা বিশ্বাস করেন বর্তমান বিশ্বে এবং ইহুদিদের যত সমস্যা রয়েছে তার সমাধান একমাত্র টেম্পল পুনর্নির্মাণের মাধ্যমেই সম্ভব।
আজ আমরা কি টেম্পল পুনর্নির্মাণের কাছাকাছি আছি? সারা বিশ্বের মানুষ ইসরাইলের জেরুজালেমের ওপর ইহুদিদের দাবির বিরোধীতা করছে এবং মাউন্ট টেম্পলের মালিকানা নিয়েও প্রতিদ্বন্দিতা করছে। বাস্তবিক অর্থেই ইসরাইলের আইনানুসারে ইহুদিদের টেম্পল বা টেম্পল প্রাঙ্গনে প্রার্থনা করা নিষেধ। শুধু তাই নয়, যারা টেম্পল দর্শনের জন্যও যান তাদের ওপর মুসলিমরা ছদ্মবেশে নজরদারিও করে। মুসলিম কর্তৃপক্ষ অফিসিয়ালি এটিও ঘোষণা দিয়েছে যে, ওই প্রাঙ্গনে কোনো টেম্পলের অস্তিত্ব ছিল না। তারপরও বলা যায়, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো টেম্পল আন্দোলনের লক্ষ্য পূরণে এবং আমাদের সময়েই টেম্পল পুনঃস্থাপনের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।
কয়েক দশক পুরাতন এক গবেষণায় প্রত্মতাত্ত্বিকরা পেয়েছেন, মুসলিমদের মতে যে আল আকসা মসজিদ ইব্রাহিমের সময়কালে নির্মিত হয়েছিল, সেই জায়গাটি ইহুদিদের টেম্পলে প্রবেশের প্রস্তুতি নেওয়ার স্থান ছিল।
ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক রবার্ট হ্যামিলটন কর্তৃক নথিভুক্ত করা একটি ফাইল থেকে এ বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি ১৯২৭ সালে ভূমিকম্পের ফলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর খনন করে এই প্রমাণ পেয়েছিলেন। মসজিদের ছাউনির নিচে তিনি একটু ইহুদি মিকভেহর ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছিলেন, যা সেকেন্ড টেম্পল যুগের। তৎকালে এই অঞ্চল ইহুদিদের দখলে ছিল এই নথিপত্রগুলো ব্রিটিশ ম্যান্ডাটরির আর্কাইভে খুব গভীরভাবে লুকোনো ছিল, কারণ এই নথিগুলো মুসলিম কর্তৃপক্ষকে বিব্রত করে। কিন্তু এরপরেও এসব প্রমাণ সামনে এসেছে এবং প্রমাণিত হয়েছে যে, বর্তমান টেম্পল মাউন্টেই প্রাচীন টেম্পলটি ছিল এবং এখানে ইহুদিদের উপস্থিতি ছিল।
ভবিষ্যত টেম্পলের পরিসেবা নিশ্চিত করার জন্য সানহেড্রিন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন এবং এদের একটি দল বাইবেলে বর্ণিত টেম্পলের বনাঞ্চল নিশ্চিত করার জন্য প্রচুর বৃক্ষরোপণ করছে। এই ভবিষ্যতে থার্ড টেম্পলের কৃষি চাহিদা পূরণ করবে। সানহেড্রিনের মুখপাত্র রাবি হিল্লেল ওয়েইস বলেন, টেম্পলটি ছিল ভূমি ও ঐশ্বরিক উপস্থিতির একটি যোগসূত্র। তিনি আরো বলেন-
“যখন আমরা ত্যাগের বিষয়ে ভাবি, তখন আমরা শুধু প্রানী ও রক্তের ব্যাপারে চিন্তা করি। কিন্তু আসলে ত্যাগ করা হয়েছে ইসরাইলের বনাঞ্চল বা গাছপালা।”
সানহেড্রিনের আরেক সদস্য রাবি রিচম্যান ইসরাইলে পবিত্র রেড হেইফার (ইহুদিদের পবিত্র লাল গোরু) পুনরুদ্ধার প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হিব্রু বাইবেল (নাম্বার ১৯) অনুযায়ী, টেম্পলের সেবা করার জন্য ইহুদিদের পবিত্রতা অর্জনে ব্যবহৃত জলে মিশ্রিত রেড হেইফারের ছাই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ফার্স্ট টেম্পল থেকে সেকেন্ড টেম্পলের মধ্যবর্তী প্রায় এক হাজার বছরে ইহুদিদের পবিত্রতা অর্জনের জল প্রস্তুত করার জন্য মাত্র ৯টি রেড হেইফার ব্যবহার করা হয়েছিল। ইহুদি ঐতিহ্যে বলা হয়ে থাকে, ১০ম রেড হেইফারটি ব্যবহার করবেন স্বয়ং মেসিয়াহ। রিচম্যান ও টেম্পল ইনস্টিটিউটের অন্যান্য রাবিরা এই প্রকল্পের তদারকি ও দেখভাল করছেন এবং এতে অংশীদার হিসেবে রয়েছে ইসরাইলি এক পশুপালক যিনি গবাদিপশু ও কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তিনি উত্তর আমেরিকার রেড হেইফারের একটি প্রজাতি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন।
ইহুদি ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী, রেড হেইফার অনুষ্ঠানের জন্য বাইরে থেকে রেড হেইফার ইসরাইলে স্থানান্তরিত করা যাবে না। যেহেতু পশুটি অবশ্যই ইসরাইলেরই হতে হবে তাই ইসরাইলিরা তাদের দেশেই এই প্রাণী উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রকল্পটি হলো টেম্পল ইন্সটিটিউটের কয়েক বছরের গবেষণার ফসল যা প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ এমনকি বিজ্ঞানকেও স্তব্ধ করে দিয়েছে!
সানহেড্রিন ও টেম্পল আন্দোলন কর্তৃপক্ষ কোহেনিম যাজকদের সঠিকভাবে প্রস্তুত হিসেবে গড়ে তোলার জন্য টেম্পলের আচার অনুষ্ঠান সমূহও আবার শুরু করেছে। তাদের এই প্রশিক্ষণের আওতায় রয়েছে, যাজকীয় দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে সঠিকভাবে জ্ঞান দেওয়া, থার্ড টেম্পলে ব্যবহারের জন্য আচারের পাত্রগুলোর ব্যবহার ও নতুন নির্মিত বেদীর ওপর পোড়া নৈবদ্য উপস্থাপনের অনুশীলন ইত্যাদি। নতুন তৈরি বেদীটি একটু ভিন্ন ধরনের। এটি তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে যেন সঠিক জায়গায় নিয়ে খুব দ্রুত একত্রিত করে একে জুড়ে দেওয়া যায়। কারণ ইসরাইলিদের মোরিয় পর্বতে যেটি টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত, সেখানেই এই বেদী স্থাপন করতে হবে। অতি শীঘ্রই এই বেদীটি টেম্পল মাউন্টে স্থাপিত হবে এবং তারপরই নৈবদ্য সেবা চালু হবে।
টেম্পল ইন্সটিটিউটের সাম্প্রতিক আরেকটি আবিষ্কার হলো বাইবেলে বর্ণিত ক্রিমসন রং তৈরির বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি উদ্ভাবন। টেম্পলের যাজকদের পোষাকে এবং টেম্পলের বিভিন্ন পবিত্র স্থান চিহ্নিত করার জন্য এই রংটি ব্যবহৃত হতো। এছাড়াও রেড হেইফারের ছাই দিয়ে যে মিশ্রণ তৈরি করা হয়, সে মিশ্রণেও এই রং ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে বার ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর জোহার আমার আবিষ্কার করেন, ইসরাইলে পাওয়া এক জাতীয় কৃমি টোলাট শামির ডিম থেকে ক্রিমসন রং প্রস্তুত করা সম্ভব।
যদিও টেম্পল আন্দোলন পুনরায় টেম্পল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু এখানে আরেকটি গুরুতর বাধা রয়েছে। টেম্পল মাউন্ট এখনো মুসলিমদের আয়ত্বাধীন। সেখানে ইহুদিদের প্রবেশ নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আনতে হবে, হয়তো তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই টেম্পল মাউন্টের মালিকানা কাদের হবে এই প্রসঙ্গে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্ট একটি রায় দিয়েছে-
“টেম্পল মাউন্টের বাস্তবতা… একটি কোনোভাবেই সরল নয়। ব্যাপারটি অত্যন্ত জটিল এবং নাজুক। এটি সেই কেসগুলোর একটি যেখানে কাকে বঞ্চিত করা হবে আর কার পক্ষে রায় দেওয়া হবে তা আইনের মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। কারণ এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া আইনের আওতায় নেই। এটি একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ; বিচারের নয়। এটি এমন একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ যার মাঝে ‘এই টেম্পল মাউন্ট আমাদের’ কথাটির সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই এটি কোনোভাবেই আদালতের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এক্ষত্রে যারা ৭০তম সপ্তাহের ড্যানিয়েছেন ভবিষ্যদ্বাণীটি (Daniel 9:27) বুঝতে পারে তারা জানে, সেখানে একজন ভবিষ্যৎ নেতার কথা বলা হয়েছে যিনি Revelation 13 -এ উল্লেখিত প্রকাশ্য মেসিয়াহ শত্রু, তিনি ইহুদি নেতাদের সঙ্গে প্রতারণামূলক চুক্তি করবেন এবং এর মাধ্যমে থার্ড টেম্পল পুনঃস্থাপনের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।”
কিন্তু কীভাবে এটি হবে? টেম্পল মাউন্টের রাজনীতি বিষয়ক একটি একাডেমিক বইয়ে এই সম্পর্কে একটি সম্ভাব্য উত্তর পাওয়া যায়-
“মানবজাতির ঐতিহ্যের ধারণার ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক মহলে টেম্পলের প্রতি আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতাকারী এবং জামিনদার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এজন্য জাতিসংঘ (ইউনেস্কো), বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থা যেমন : আরব লিগ, ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত ও রাশিয়ার মতো আগ্রহী দেশ সমূহ থেকেও সাহায্য পাওয়া যাবে। যেকোনো প্রস্তাবিত আইনী বস্থার জন্য এসব অঞ্চলের ধর্মীয় নেতাদের সমন্বয়ে আন্তঃসংযোগ সহযোগীতা প্রয়োজন। এটি করা যেতে পারে আঞ্চলিক ধর্মীয় নেতাদের দ্বারা, যারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করবে।”
বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী যারা বুঝতে পারেন, তারা জানেন মেসিয়াহ বিরোধীরা রাজনৈতিক ও ধর্মীয়; উভয় ধরনের নেতাদের অনুসরণ করবে এবং তারাই এই জাতীয় প্রস্তাবকে বাস্তবে পরিণত করতে পারবে।
যেহেতু মেসিয়াহের আগমনের জন্য ইহুদি জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, তাই ইসরাইলের ভূমিতে এই সব ঘটনা ঘটতে দেখা পুরো ইহুদি জাতির জন্য যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক।
তথ্যসূত্র :
David Guinn, Protecting Jerusalem’s Holy Sites: A Strategy for Negotiating a Sacred Peace, Cambridge University Press, 2006, pages 180-183
জুদাইজম – মাশরুর ইশরাক
আপনার মতামত জানানঃ