ময়মনসিংহের ভালুকায় বনভূমি দখলের সংবাদ প্রচার করতে ঘটনাস্থলে গেলে সাংবাদিকদের বেঁধে পেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন রেজাউল করিম রিপন নামে যুবলীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত এক নেতা। তিনি হবিরবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
সোমবার সকালে উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নে প্রস্তাবিত ইকোপার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি মাইকে ওই বক্তব্য দেন।
সাবেক যুবলীগ নেতার ওই বক্তব্যের পর স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ভালুকা প্রেস ক্লাবে তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভালুকা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামরুল হাসান পাঠান কামাল জানান, কোনো সাংবাদিক অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। ঢালাওভাবে সবাইকে পেটানোর নির্দেশ দেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়।
ওই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং ক্লাবে অনুষ্ঠিত তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সভায় ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ওই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং ক্লাবে অনুষ্ঠিত তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সভায় ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এজাদুল হক পারুল বলেন, ওই যুবলীগ নেতা আমাদের সংগঠনের কেউ নয়। সাংবাদিকদের পেটানোর এমন ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সাংবাদিকরা আমাদের বন্ধু।
এ বিষয়ে রেজাউল করিম রিপন বলেন, আমি সব সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলিনি। কতিপয় সাংবাদিকদের বলেছি।
ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন যুবলীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল করিম রিপনের বিরুদ্ধে বনভূমি দখলের মামলা রয়েছে। সে একজন তালিকাভুক্ত বনভূমি জবরদখলকারী।
এর আগে সকালে উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে এলাকাবাসী সিডস্টোর এলাকায় প্রস্তাবিত ইকোপার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। ওই মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, হবিরবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহম্মেদ বাচ্চু, রেজাউল করিম রিপনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে-ই সুযোগ পাচ্ছে সে-ই সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন করছে৷ সেটা যে শুধু সরকারি দলের লোক তা নয়, ব্যবসায়ীরা করছে, অর্থশালীরা করছে৷ আসলে সাংবাদিকদের খবরটি যাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তারাই এটা করছে৷
তারা মনে করেন নির্যাতনকারীদের কঠোর শাস্তি হলে বারবার নির্যাতনের ঘটনা ঘটতো না৷
তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী৷ বিচারের জন্য বছরের পর বছর ঘুরতে হচ্ছে৷ এই যে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ১২ বছরে পুলিশ ৮৯ বার আদালত থেকে সময় নিয়েছে, অথচ খুনিদের ধরতে পারেনি৷ বিচারহীনতার এই সংস্কৃতিটাই সাংবাদিকতা পেশাকে আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে৷
তারা আরও বলেন, যাদের বিরুদ্ধে খবর হচ্ছে, তারাই হামলা করছে৷ যারা অন্যায় করে, দখল করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তারাই হামলাকারী৷ আবার নির্দিষ্ট কোনো পেশার সবাই কিন্তু এটা করেন না৷ এই খারাপ মানুষগুলোই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কথা বলেন৷ আমাদের এখন থেকে শক্তভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬৫৭
আপনার মতামত জানানঃ