ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী। রবিবার দুপুর সোয়া একটায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হেফাজত মহাসচিবের প্রেস সচিব মনির আহমেদ।
শ্বাসকষ্ট হওয়ায় পহেলা ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার তার অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিইউ সাপোর্টে যেতে হয় বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
প্রেস সচিব মনির আহমেদ হেফাজতের মহাসচিত কাসেমীর করোনাভাইরাস পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ এসেছে বলে গণমাধ্যমে জানালেও ইউনাইটেড হাসপাতালের গণসংযোগ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান শুভ বাংলা ট্রিবিউনকে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানান।
গত ১৫ই নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের সম্মেলনে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয় নূর হোসাইন কাসেমীকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি এই সংগঠনের নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর আমীর ছিলেন।এছাড়া বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসচিব, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন।
বর্তমানে চলমান হেফাজতে ইসলামের ভাস্কর্যবিরোধী কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন নূর হোসাইন কাসেমী।
বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে পড়ার উদ্দেশ্যে ভারতে যান। পরে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে না পেরে ভর্তি হন ভারতের সাহারানপুর জেলার বেড়ীতাজপুর মাদ্রাসায়। সেখানে জামাতে জালালাইন (স্নাতক) সমাপ্তির পর দারুল উলুম দেওবন্দে চলে যান। দেওবন্দ মাদ্রাসায় তার অধ্যয়নকাল মোট ৩ বছর। সেখানে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) সমাপ্তির পর আরবি সাহিত্য ও দর্শনে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি।
১৯৮৮ সালে তিনি জামিয়া মাদানিয়া এবং ১৯৯৮ সালে জামিয়া সোবহানিয়া মাহমুদ নগর প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানের শায়খুল হাদীস ও মহাপরিচালক ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি প্রায় ৪৫টি মাদ্রাসা পরিচালনার কাজে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি খতমে নবুয়ত আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এসডব্লিউ/নসদ/১৬০৭
আপনার মতামত জানানঃ