রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা ইউক্রেনীয় বাহিনীও করছে। কিন্তু, দ্রুত গতিতে ফুরিয়ে আসছে তাদের গোলাবারুদের মজুদ। যুদ্ধের প্রথমদিকের তুলনায় এখন তাদের মধ্যে অনেক উচ্চ হারে পৌঁছেছে দৈনিক হতাহতের সংখ্যা।
গত মাসে দৈনিক গড়ে ১০০ জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা নিহত হয়। চলতি মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ জনে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে গতকাল শুক্রবার (১০ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন খোদ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদমোর জেলেনস্কির একজন সহকারী।
অর্থাৎ, আহত ও নিহত মিলিয়ে লড়াইয়ের ময়দান থেকে প্রতিদিন ১,০০০ ইউক্রেনীয় বাদ পড়ছে। তারা যখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বা গোরস্থানে অন্তিম শয্যায়- তখন রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে আরও বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের সুস্থ ও জীবিত সহযোদ্ধাদের।
যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার এলোমেলো কৌশলের সুযোগে বেশকিছু সহজ জয় পেয়ে যায় ইউক্রেন। রুশ বাহিনীর আক্রমণে পরিকল্পনার অভাব ছিল, ফলে তাদের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। মস্কো এসব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে, পাল্টেছে রণ-কৌশল; আর নিজস্ব শক্তি ও সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো শুরু করেছে। দূরপাল্লার কামান, রকেট আর্টিলারি ও মর্টারে রাশিয়ার শক্তির তুলনায় ইউক্রেন নগণ্য। এই গোলন্দাজ শক্তিকে পুঁজি করে মারণ আঘাত হানছে রাশিয়া, তাতে শত্রুর চেয়ে কম সংখ্যক গোলন্দাজ ইউনিটে সজ্জিত ইউক্রেনীয়রা এবার বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
ইউক্রেনকে অস্ত্র সাহায্য এপর্যন্ত উদারহস্তে দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু, নতুন মারণাস্ত্রের সরবরাহ এখন আসছে অনেক ধীর গতিতে। পূর্বের ডনবাস অঞ্চলে রুশ সেনাদের নিত্যনতুন এলাকা দখল নেওয়া ঠেকাতেও এই সরবরাহ অপর্যাপ্ত।
রুশ বাহিনী একেবারে ভুল করছে না- এমন নয়; বরং ভুল সিদ্ধান্তে মাঝেমধ্যে মূল্যবান সরঞ্জাম ও সেনা সদস্যদের হারাচ্ছে। যুদ্ধের শুরুর দিকের তুলনায় অবশ্য এই সংখ্যা অনেক কমেছে। আবার কিছু অঞ্চলে রুশ বাহিনী যুদ্ধ সরঞ্জামের অভাবে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সোভিয়েত যুগে তৈরি মান্ধাতার টি-৬২ ট্যাংক ট্রেনে করে রণাঙ্গনে নিয়ে আসার দৃশ্য।
এতকিছুর পরও যুদ্ধের মোড় বদলে এবার রাশিয়ার অনুকূলে চলে এসেছে। শক্তি ও সামর্থ্যের প্রমাণও রাখছে রুশ বাহিনী।
ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, পশ্চিমা অস্ত্র- যুদ্ধের মোড় আবার তাদের অনুকূলে ফেরাবে এবং গত ২৪ ফেব্রুয়ারির পর রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া অন্তত ২০ শতাংশ এলাকার পুনরায় নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে কিয়েভ। কিন্তু, এ প্রত্যাশাটি বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে পূরণ হওয়া দিনে দিনে অবাস্তব হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বিষয়ক ইউক্রেন সরকারের উপদেষ্টা ওলেক্সান্ডার ভি ড্যানিলিউক।
“বর্তমানে রুশ বাহিনীর যুদ্ধ কৌশল সম্পূর্ণ আলাদা। তারা অনেক বেশি সাফল্য পাচ্ছে। তাদের হাতে অনেক বেশি সরবরাহ আছে, আর কোনো তাড়াহুড়োও করছে না। তাই আমাদের জন্য আশাবাদী হওয়ার সুযোগ খুবই কম।”
কিছু এলাকায় কিয়েভের অনুগত বাহিনী প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও শেষপর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। দোভহেঙ্কে শহর থেকে পশ্চাপসরণ করা এমন দুজন ইউক্রেনীয় সেনার সাথে কথা বলেছেন ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক। ওই সেনারা জানান, দোভহেঙ্কে শহর ঘিরে ফেলে রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে মুহুর্মুহ ভারী গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এই আক্রমণে তাদের শতাধিক সদস্যের সেনা ইউনিটের ৩৫ জন নিহত হয়।
ঠিক এই কৌশলই এখন বেশি ব্যবহার করছে রাশিয়া। ভিটালি মার্টসিয়েভ নামের এক সেনার ভাষায়, “প্রথমে তারা সবকিছু ধবংস করে দিয়ে তারপর এগিয়ে আসে।”
তিনি আরও জানান, আমাদের সেনারা হতাহত হতে শুরু করলেও বাকিরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার সাহস হারায়নি। তবে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণের মুখে শেষপর্যন্ত পিছু হটতেই হয়।
ওই দুজন সেনা সদস্য আরও জানান, যখন আমাদের এক-তৃতীয়াংশ সেনা নিহত হয়, আরও অনেকে আহত হয়—তখন বাদবাকিদের সামনে পিছু হটা ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না।
তিহোনেঙ্কো বলেন, “পালিয়ে এসে আমাদের অনেকের মনে হয়েছে, শহরটি রক্ষায় আমাদের অনেক সহযোদ্ধা তবে কী অহেতুক প্রাণ দিলেন! আপনি এসব ভাবনায় মুষড়ে পড়বেন কখনোসখনো। তারপর বুঝতে পারবেন- এটাই যুদ্ধের বাস্তবতা। শত্রু যা শুরু করেছে তা শেষ করার দায়িত্ব আমাদের।”
ইউক্রেন সরকারের উপদেষ্টা ভি ড্যানিলিউক মনে করছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর সামনে এখন দুর্বার শক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে রাশিয়া।
“রুশ বাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে দূরপাল্লার কামান ব্যবহার করছে। আমাদের হাতে এ ধরনের অস্ত্রের ঘাটতি থাকায় বেশিরভাগ সময় পাল্টা জবাব দিতে পারছি না। শত্রু তিন-চল্লিশ কিলোমিটার দূর থেকে আঘাত হানছে, কিন্তু আমাদের হাতে এত দূরপাল্লার কামান খুবই কম। ফলে শত্রুর গোলন্দাজ ইউনিটগুলির নির্ভুল অবস্থান জানার পরও আমাদের হাতে তাদের ওপর আক্রমণ চালানোর সামর্থ্য নেই।”
সোভিয়েত আমলের যেসব কামান ইউক্রেনের হাতে ছিল- প্রায় নিঃশেষ সেগুলির গোলা। পূর্ব ইউরোপের অন্য যেসব দেশের হাতে একই ধরনের গোলার মজুদ ছিল- তাদের কাছেও এখন ইউক্রেনকে দেওয়ার মতো উদ্বৃত্ত মজুদ নেই বলে জানান ড্যানিলিউক।
এই বাস্তবতায় ইউক্রেনকে খুব দ্রুতগতিতে পশ্চিমাদের দেওয়া দূরপাল্লার কামানের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল হতে হবে। অথচ প্রযুক্তি ও সক্ষমতায় উন্নত হলেও, এসব অস্ত্র যথেষ্ট পরিমাণে যে পাওয়া যায়নি- তাও উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে বিপুল অগ্নিবৃষ্টি করছে রাশিয়ান গোলন্দাজ ইউনিট। প্রতিদিন রুশ কামানগুলি ইউক্রেনীয় অবস্থান লক্ষ্য করে গড়ে ৫০ হাজার গোলা ছুঁড়ছে। সে তুলনায় ইউক্রেনীয় কামান ছুড়তে পারছে মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার রাউন্ড। মিত্ররা যে সহযোগিতা দিচ্ছে, তা শুনতে বেশ বড় হলেও বাস্তব চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ২ লাখ ২০ হাজার রাউন্ড গোলা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রুশ বাহিনী এ পরিমাণ গোলা ছুঁড়ছে মাত্র চারদিনেই।
কিছুদিন আগেই ইউক্রেনকে শতাধিক অত্যাধুনিক এম-৭৭৭ হাউইৎজার কামান সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। সাহায্য হিসেবে পাওয়া এ অস্ত্রের অধিকাংশ এখন যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবু থামানো যাচ্ছে না রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রা। তারা দিন দিন আরও নতুন এলাকা দখলে নিচ্ছে।
এরমধ্যেই আমেরিকার কাছ থেকে হিমার্সের মতো একাধিক রকেট নিক্ষেপক অস্ত্র (এমএলআরএস) পাচ্ছে ইউক্রেন। একই ধরনের অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্রিটেন। কিন্তু, শুধু অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ হয় না। সর্বাধুনিক পশ্চিমা সরঞ্জাম ব্যবহারে চাই দীর্ঘ প্রশিক্ষণ, যা ইউক্রেনীয়দের নেই। বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েও অনেককে এই সঙ্গিন সময়ে যুদ্ধের বাইরে থাকতে হচ্ছে। দক্ষ যোদ্ধার এই অভাব যুদ্ধের ময়দানে ভালোভাবেই অনুধাবন করছে ইউক্রেন। কিয়েভের উদ্বেগ দূর করতে এরমধ্যেই আরও গোলন্দাজ সরঞ্জাম পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছে পেন্টাগন।
তবে রাশিয়া প্রায় ৯০০টি দূরপাল্লার কামান নিয়ে যুদ্ধে নেমেছে। এরমধ্যে শতাধিক অস্ত্র ইউক্রেন ধবংসের দাবি করেছে। কিন্তু, তাতে রাশিয়ার হাতে থাকা শত শত কামানের ভাণ্ডারে তেমন ঘাটতি তৈরি হয়নি বলেই মনে করছেন ড্যানিলিউক।
তাছাড়া, ঠিক যেভাবে করা উচিত দূরপাল্লার কামান এখন সেভাবেই ব্যবহার করছে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় বাহিনীর ওপর যতোটা সম্ভব দূর থেকে গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রথমে অবিরাম গোলাবর্ষণ করে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থান গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর, কোনো এলাকা দখলে নিতে এগোচ্ছে রুশ পদাধিক সেনা ও সাঁজোয়া যান। এতে তাদের ক্ষয়ক্ষতি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ও সাবেক মার্কিন নৌসেনা রব লী বলেন, রাশিয়ানরা এখন স্থল ও আকাশ শক্তির মিশ্র আক্রমণেও সঠিক কৌশল গ্রহণ করছে। এখন রুশ পদাধিক বাহিনীকে কাছে থেকে সমর্থন দিচ্ছে তাদের বিমান বাহিনী। বিমানে করে রণাঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনা মোতায়েনও বাড়ছে।
রুশ সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, বেসামরিক প্রাণহানি সীমিত রাখতেই তারা আগের মতো দ্রুত শত্রুর এলাকা দখলে অভিযান চালাচ্ছেন না। তবে বাস্তবতা হলো- এই কৌশলে আসলে রুশ সেনাদের হতাহত হওয়া কমেছে। কিন্তু, তাদের ভারী গোলাবর্ষণে ধবংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে অনেক শহর ও গ্রাম।
তবে সুযোগ পেলে ইউক্রেনীয়রাও রাশিয়াকে একহাত দেখে নিতে ছাড়ছে না বলে মন্তব্য করেন দিমিত্রি আলপেরোভিচ নামের এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা। উদাহরণস্বরুপ সেভেরস্কি দনেৎসক নদী পার হওয়ার চেষ্টাকালে রাশিয়ান বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা উল্লেখ করেন তিনি। পশ্চিমা ও ইউক্রেনীয় সূত্রগুলির দাবি, নদী পার হওয়ার সময় রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয় গোলাবর্ষণের শিকার হয়। এতে শত শত রুশ সেনা নিহত হয়েছে। ধবংস হয়েছে অনেক সরঞ্জাম ও সাঁজোয়া যান।
রুশ বাহিনীর রসদ সরবরাহ লাইনে ইউক্রেনীয়রা আরও সফলভাবে ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন আলপেরোভিচ।
গত মার্চের পর থেকে রাশিয়া নতুন করে তাদের হতাহত সেনার সংখ্যা প্রকাশ করেনি। বিষয়টি উল্লেখ করে আলপেরোভিচ আরও দাবি করেন, “যুদ্ধ পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে- রাশিয়ান বাহিনী হয়তো আমাদের মতো একইহারে হতাহতের শিকার হচ্ছে।”
ইউক্রেনের জন্য জনশক্তির চেয়ে গোলাবারুদ ও যুদ্ধাস্ত্রের ঘাটতি প্রধান সমস্যা বলে উল্লেখ করেন ড্যানিলিউক। তার দাবি, এরমধ্যেই ৬০ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে নাম লিখিয়েছে। কিন্তু, সে তুলনায় অস্ত্র নেই কিয়েভের কাছে। রয়েছে সুরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রেরও ঘাটতি। দূরপাল্লার কামান ছাড়াও স্বল্প পাল্লার গোলন্দাজ ইউনিটও কম দেশটির। তাছাড়া, বেসামরিক নাগরিকদের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এসব অস্ত্র চালনার সঠিক প্রশিক্ষণও চটজলদি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ড্যানিলিউক বলেন, “সঠিক অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ ছাড়া তাদের রণাঙ্গনে পাঠানো হবে- নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার শামিল।”
অন্যদিকে, রাশিয়ার বড় সমস্যা জনবল সংকট। যুদ্ধের প্রথমদিকে বিপুল হতাহত হয়েছে রুশ বাহিনীতে। পশ্চিমা কর্মকর্তাদের দাবি, এসময় প্রায় ১৫-২০ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তারও বেশি। সব মিলিয়ে মূল আগ্রাসী বাহিনীর এক-তৃতীয়াংশ আহত, নিহত ও শত্রুর হাতে বন্দী হয়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে এ পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির অনুমান করছেন তারা।
অবশ্য এখন রাশিয়া নিজ বাহিনীকে সুসংহত ও পুনর্গঠিত করেছে। পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষকরা যতোটা ধারণা করেছিলেন, তার চেয়েও দ্রুততার সাথে পূরণ করেছে সেনা ঘাটতি। গত দুই মাসে ৪০-৫০ হাজার রাশিয়ান সেনা ইউক্রেনে যোগ দিয়েছে। বাড়ানো হয়েছে রিজার্ভ বাহিনীর বয়স সীমা। এভাবে সংখ্যায় কমে আসা ইউনিটগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করছে ক্রেমলিন।
বর্তমানে রুশ বাহিনী রয়েছে দনেৎসক নদীর অপর পাড়ে। এটি অতিক্রম করলেই তারা ইউক্রেনের আরও ভেতরে সহজে প্রবেশ করতে পারবে। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অচিরেই সেভেরদনেৎস্ক শহরের পূর্ণ দখল নিবে রুশ বাহিনী। তারপর নদী অতিক্রম করে অপর পাড়ের লিসিশানস্ক শহর দখলের চেষ্টা করবে। এর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেই সম্পূর্ণ লুহানস্ক অঞ্চলের দখল পাবে রাশিয়া। এরপর সম্পূর্ণ দনেৎস্ক অঞ্চল দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে।
পোল্যান্ডের ওয়ারশ-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা পরামর্শক সংস্থা- রোচান কনসালটেন্সির বিশেষজ্ঞ কনরাড মুজিকা মনে করেন, উচ্চ ভূমি ইউক্রেনীয় সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় লিসিশানস্ক দখল করা রাশিয়ার জন্য সহজ হবে না।
তিনি বলেন, “দনেৎস্ক নদীর অপরপাড়ে ইউক্রেনীয়রা তাদের প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করেছে। রুশ বাহিনী যদি সফলভাবে নদী পার করে হামলা চালাতে পারে- তাহলে দনেৎস্ক অঞ্চলে তারা পূর্ণশক্তি নিয়ে প্রবেশ করবে। আমার ভয় হয়, ইউক্রেনীয় বাহিনী তখন দিশেহারা হয়ে পড়বে।
এসডব্লিউ/এসএস/১০২০
আপনার মতামত জানানঃ