কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ভেজাল সার ও কীটনাশক ওষুধ দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে চলতি মৌসুমের ইরি-বোরো আবাদের ক্ষতি হওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ ভেজাল সারে ফসলের কাজ উন্নতি না হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। সেই সাথে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করলেও কমছে না এর বিস্তার।
উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের গাবেরতল এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম (৬০) জানান, থানাহাট বাজারের দোকান থেকে থেকে সার কিনে আমার ইরি-বোরোর জমিতে দিয়েছি। কিন্তু সার প্রয়োগের ১০ দিন পার হলেও সারের প্রতিক্রিয়া আবাদে কোনো ফেলেনি। জমিতে ফসলের কোন প্রকার উন্নতি হয়নি।
একইভাবে বালাবাড়ীহাট এলাকার কৃষক আবু সাইদ জানান, থানাহাট বাজার থেকে কীটনাশক ওষুধ ক্রয় করে আমি সম্প্রতি আমার জমিতে দেই। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
চিলমারী অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাবু জানান, সার ও কীটনাশক দোকানগুলোতে নজরদারি না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল সার ও কীটনাশক ওষুধ দেদারছে বিক্রি করছে। প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে দোকানগুলোতে যদি অভিযান চালানো হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা ভেজাল সার ও কীটনাশক বিক্রি করতে পারবে না।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ ভেজাল সারে ফসলের কাজ উন্নতি না হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। সেই সাথে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করলেও কমছে না এর বিস্তার।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রনয় বিষান দাস জানান, অনেক কৃষক সার ও ওষুধ প্রয়োগ করে কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ায় কৃষি বিভাগে অভিযোগ করেছেন। এর ফলে গত মাসের শেষের দিকে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এতে থানাহাট বাজারের এক দোকান থেকে নকল সার, ভিটামিনের প্যাকেট জব্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। অবশ্যই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ অভিযুক্ত সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, নকল সার ও কীটনাশক তৈরির কারখানায় অভিযানের খবর গণমাধ্যমে মাঝে মধ্যে দেখা যায়। ওই সব অভিযানে কারখানা থেকে কাঁচামাল হিসেবে যা উদ্ধার করা হয় তা রীতিমতো বিস্ময়কর। এসব কাঁচামাল দিয়ে সার ও কীটনাশক নামের যা তৈরি হয় তাতে ফসলের তো উপকার করে না। বরং জমির উর্বরতা নষ্ট করে।
মানুষ অখাদ্য খেলে যেমন অসুস্থ হয় উদ্ভিদও তেমনি উপযোগী খাদ্য না পেলে বেড়ে উঠতে পারে না। এর অশুভ প্রতিক্রিয়া হিসেবে আশাব্যঞ্জক ফলন দিতে ব্যর্থ হয়। এর ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ায় শুধু কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হোন না। জাতীয় উৎপাদনে ঘাটতি সৃষ্টি হয়। যারা এই ঘাটতি সৃষ্টির নেপথ্য নায়ক তারা জাতির শত্রু। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯২২
আপনার মতামত জানানঃ