আসলেই কী ভিনগ্রহবাসী বা এলিয়েনদের দেখা মিলবে? দীর্ঘদিন ধরেই মানুষের মনে এই প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই এলিয়েনদের খুঁজে পাওয়া কিংবা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিছকই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বিষয় বলেই মনে করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলছে ভিন্ন কথা।
মহাকাশ, মহাজাগতিক ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই, জানার চেষ্টারও শেষ নেই মানুষের। নানা সময়ে নানা কিছু তাই সামনে আসে আমাদের।
ইদানীং যেমন, এক বিরল জিনিস জানা গেল! উত্তর মিলল ‘এই ব্রহ্মাণ্ডে এলিয়েনের কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন পৃথিবী আছে?’ এই প্রশ্নের।
নির্দিষ্ট করে সে কথা বলা কঠিন। শুধু কঠিনই নয়, সে কথা বলা অসম্ভবও। তবে সেই অসম্ভব প্রশ্নেরই জবাব পেয়ে গিয়েছে আমেরিকার স্পেস এজেন্সি নাসা।
জানা গেছে, আমাদের ব্রহ্মাণ্ডে কম করে অন্তত পাঁচ হাজার ‘এলিয়েনের পৃথিবী’ আছে। এই কাজে নাসাকে সাহায্য করেছে ‘ট্রানজিটিং এক্সোপ্লানেট সার্ভে স্যাটেলাইট’ (টেসস)।
এলিয়েনের পৃথিবী বা গ্রহের যে খোঁজ মিলেছে, তা রয়েছে আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে। ৫ হাজার এলিয়েনের পৃথিবীকে খুঁজে পাওয়ার গিয়েছে বলে বলা হচ্ছে, তবে আপাতত তাদের নাম দেওয়া হয়েছে টিওআই বা ‘টেস্ট অবজেক্টস অফ ইনটারেস্ট’। এগুলো থেকে কোনও-না-কোনওভাবে সিগনাল পাওয়া যাচ্ছে।
‘ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র মিশেল কুনিমতো এ বিষয়টি নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র আওতায় ‘ফেন্ট স্টার সার্চ’ নামের এটি প্রকল্প ছিল।
সেই প্রকল্পের অধীনে নানা রিসার্চ হয়েছে। মিশেল কুনিমতো বলেছেন, আমরা আগামী দিনে এরকম আরও অনেক ‘টেস্ট অবজেক্টস অফ ইনটারেস্ট’-এর খোঁজ পাব।
এমআইটি’র-ই একটি বয়ানে বলা হয়েছে, গত বছর ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত টেসস-এর অধীনে ২৪০০ টিওআই’য়ের খোঁজ মিলেছে। যখন টেসস লঞ্চ হয়, তখন থেকে এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত ১৭৬ টি টিওআই পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে তথ্য জমা করা এবং সেগুলিকে সরাসরি গ্রহের তকমা দেওয়া কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়।
টেসস-এর আগে কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ ২৭৮০ এক্সোপ্লানেটের খোঁজ পেয়েছিল। তবে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার কোনও তথ্য মেলেনি। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত ওই সব বস্তুগুলিকে গ্রহের পদমর্যাদা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে রিসার্চ চলবে।
টেসস কোনও গ্রহের দিকে প্রায় এক মাস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে। তারপর তার সঙ্গে সম্বন্ধিত ডেটা কন্ট্রোল রুমে পাঠাতে থাকে। যাতে এটা জানা যায় যে ওই গ্রহ বা আশপাশে কোনও সূর্যের মতো কোনও নক্ষত্র আছে কি না। এর মধ্যে বেশ কিছু গ্রহ নিজেদের তারার চারিদিকে ১৬ ঘণ্টার এই নিজেদের পূর্ণ প্রদক্ষিণ সেরে ফেলে।
টেসস এমনই খোঁজ পেয়েছে, যাতে পাঁচটি গ্রহ একটা তারার চারদিকে সারিবদ্ধভাবে চক্কর কাটছে। যেখানে জল এবং মেঘের থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়া এমন গ্রহ আছে যেখানে যেগুলিকে তাদের নক্ষত্রগুলো গিলে ফেলতে পারে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৬৪০
আপনার মতামত জানানঃ