ফ্রান্সে ইমামের বিরুদ্ধে চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে এক মসজিদ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ফ্রান্স। মসজিদটি আগামী ছয় মাসের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলের ওইসের একটি মসজিদের ইমাম তার বক্তব্যে “জিহাদকে সমর্থন করেছেন” বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এই কট্টরপন্থী বক্তৃতা দেয়ার কারণে ওই মসদিজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বুভে শহরে অবস্থিত মসজিদটি ছয় মাসের জন্য বন্ধ থাকবে। ওইসের কর্তৃত্ব স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেছেন যে, ইমাম তার বক্তৃতায় জিহাদি যোদ্ধাদের ‘বীর’ হিসেবে তুলে ধরেছেন এবং ঘৃণা ও সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ মসজিদটিকে জবাব দিতে ১০ দিন সময় দিয়েছিল। পাশাপাশি উগ্রবাদের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ফ্রান্স ইসলামিক স্থাপনাগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।
দুই সপ্তাহ আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছিলেন যে, তিনি প্যারিসের ১০০ কিলোমিটার উত্তরে বুভে শহরের গ্রেট মসজিদটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করছেন। কারণ সেখানকার ইমাম তার বক্তৃতায় “খ্রিস্টান, সমকামী এবং ইহুদিদের” টার্গেট করছিলেন।
এএফপি স্থানীয় সংবাদপত্র কুরিয়ার পিকার্ডকে উদ্ধৃত করে বলেছে, মসজিদের ইমাম সম্প্রতি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
মসজিদ পরিচালনাকারী অ্যাসোসিয়েশনের একজন আইনজীবী সংবাদপত্রটিকে বলেছেন, তার মন্তব্য প্রাসঙ্গিক হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। আইনজীবী বলেছেন, ওই ইমাম যিনি স্বেচ্ছায় বক্তৃতা করছিলেন, তাকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যে ইমামকে একজন অনিয়মিত বক্তা হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল, বাস্তবে তিনি একজন নিয়মিত ইমাম হিসাবে কাজ করেন।
তিনি কট্টর ইসলামী অনুশাসন চর্চার প্রতি সমর্থন এবং প্রজাতন্ত্রের আইনে উপর এর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে বলে দাবি করেছেন।
গত বছর দারমানিন চরমপন্থি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন মসজিদ গুলোতে কঠোর অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেসময় তিনি বলেছিলেন যে বিচ্ছিন্নতাবাদ উৎসাহিত করা হলে সেই মসজিদগুলো বন্ধ করে দেয়া যেতে পারে।
শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির শিরশ্ছেদ এবং ২০২০ সালের অক্টোবরে নিসে একটি ক্যাথেড্রালে তিন জনকে মারাত্মকভাবে ছুরিকাঘাতের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। এসব ঘটনার জন্য ইসলামী চরমপন্থিদের দায়ী করা হয়েছিল।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ ধরণের চরমপন্থার সন্ধানে ফ্রান্সের ২৬২০টি মসজিদের মধ্যে গত কয়েক মাসে তারা ১০০টির বেশি মসজিদ ও নামাজের স্থানে তদন্ত চালিয়েছেন।
দু’ সপ্তাহ আগে চরমপন্থা ছড়ানোর কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনে ফ্রান্সে আরও ২১ মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগেও বেশ কয়েকটি মসজিদ বন্ধ করে দেয় ইউরোপের দেশটির সরকার।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ‘ইসলামী বিচ্ছিন্নতাবাদের’ বিরুদ্ধে জাতীয় লড়াই ঘোষণার এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে
এসডব্লিউ/এসএস/১৩৩০
আপনার মতামত জানানঃ