আফগানিস্তানে তালিবানের অন্তর্বর্তী সরকার পশ্চিমাসমর্থিত প্রশাসনের সময়ে আফগানিস্তানে নির্বাচনী কার্যকলাপ তদারকির দায়িত্বে থাকা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে শান্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও স্বাধীন নির্বাচনী অভিযোগ কমিশনও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আফগান সরকারের এক মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনের কোনো ইস্যুতে অভিযোগের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান দুটির দিকে ইঙ্গিত করে মুখপাত্র বিলাল কারিমি বলেন, এ কমিশন দুটির আর কোনো প্রয়োজন নেই। কখনও যদি আমরা এর প্রয়োজন মনে করি, তবে ইসলামিক আমিরাত এটা আবার গঠন করবে।
কারিমি আরও বলেন, এ সপ্তাহে সরকারের আরও দুটি মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো শান্তিবিষয়ক ও সংসদবিষয়ক। এর আগে তালিবান নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দেয়।
বিলুপ্ত ঘোষিত মন্ত্রণালয় ও কমিশনের কর্মীদের বেতনভাতা পরিশোধসহ সব কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আর এ জন্য একমাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, এখন যে কমিশন তালিবান বিলুপ্ত করলো রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ আফগানিস্তানে যেকেনো নির্বাচন আয়োজন ও তদারকির দায়িত্ব ছিল তাদের কাঁধে।
একসময়ে ওই নির্বচন কমিশনের নেতৃত্ব দেওয়া আওরঙ্গজেব বলেন, ওরা তাড়াহুড়া করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর কমিশন বিলুপ্ত করার জন্য অনেক কিছু প্রভাবিত হবে। এ কাঠামো যদি না থাকে, তবে আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আফগানিস্তানের সমস্যারও সমাধান হবে না, কারণ সেখানে কোনো নির্বাচনই হবে না।
গত ২০ বছরে চারটি প্রদেশে গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছেন এই হালিম ফিদাই। এই জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ বলেন, নির্বাচন কমিশন বিলুপ্তির এ সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে তালিবানরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তারা বুলেটের জোরে ক্ষমতায় এসেছে, ব্যালটের জোরে নয়।
তালিবানরা ক্ষমতায় আসার আগে বেশ কয়েকজন নির্বাচনী কর্মকর্তাকে হত্যা করে অস্ত্রধারী সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়া চলতি সপ্তাহে শান্তি মন্ত্রণালয় ও সংসদ সংক্রান্ত একটি মন্ত্রণালয়ও বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছের তালিবান মুখপাত্র কারিমি।
এছাড়া আফগানিস্তানের প্রাক্তন সরকারের নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় আগেই বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে চালু করা হয়েছে পূন্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধী মন্ত্রণালয়। নব্বইয়ের দশকে তালিবান যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন এই মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ ছিল।
গত ১৫ আগস্ট পশ্চিমা–সমর্থিত সরকারকে সরিয়ে তালিবান বাহিনী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সালে আইইসি গঠন হয়। এ সংস্থার নির্বাচন পরিচালনার বাধ্যবাধকতা ছিল এবং সব ধরনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করত।
এসডব্লিউ/এসএস/১১৫০
আপনার মতামত জানানঃ