ইসরায়েলের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ইসরায়েলি প্রত্নতাত্ত্বিকরা বহু বছর আগের দুটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন। যেখানে বিরল গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছেন তারা। ইসরায়েলের প্রাচীন শহর সিজারিয়ারের কাছে পাওয়া এসব মূল্যবান সম্পদ রোমান ও মামলুক যুগের। যা ১৭০০ থেকে ৬০০ বছর আগের বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ধ্বংসাবশেষ জাহাজ থেকে উদ্ধার হওয়ার মধ্যে শত শত রোপা এবং তামার মুদ্রার রয়েছে। মধ্যযুগের পাঁচ শতাধিক রোপার মুদ্রা আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
সাগরের তলদেশে একটি জরিপ পরিচালনা করতে গিয়েই বিলুপ্ত মুদ্রার সন্ধান লাভের কথা জানালেন ইউনিটের প্রধান জ্যাকব শারভিট। প্রত্নতাত্ত্বিকরা একটি রোমান যুগের আংটিও আবিষ্কার করেছেন। আংটির মধ্যে একটি বালকের চিত্র খোদাই করা আছে। যাকে যিশুর প্রতীক বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ ।
আংটিটি একটি সবুজ পাথর দিয়ে খোদাই করা, মেষ পালক বালক কাঁধে একটি ভেড়া বহন করছে। আংটিটিকে ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ বিরল আবিষ্কার হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা এই নিদর্শনটি পাওয়াকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলছেন। কারণ ওই আংটিতে থাকা চিত্রটি হচ্ছে একেবারে প্রথম দিকের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত যিশুখ্রিস্টের প্রতীক।
ইসরায়েলের পুরাকীর্তিবিষয়ক কর্তৃপক্ষ (আইএএ) বলেছে, আংটিটির মাঝখানে বাঁধানো রয়েছে একটি সবুজ রত্নপাথর। ওই পাথরে আছে কাঁধে একটি ভেড়া বহন করা একটি মেষপালক বালকের ছবি। উল্লেখ্য, বাইবেলে যিশুকে ‘উত্তম মেষপালক’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রাচীন সিজারিয়া বন্দরের কাছে দুটি জাহাজডুবির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। সেখানে পাওয়া বেশ কিছুসংখ্যক প্রত্নবস্তুর একটি ওই আংটি। উদ্ধার হওয়া অন্যান্য মূল্যবান সম্পদের মধ্যে রয়েছে তৃতীয় শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের শত শত রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ রোমান মুদ্রা এবং চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথম দিকের মামলুক আমলের বেশ কিছু রৌপ্যমুদ্রার একটি বড় মজুদ।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা ইগল ও মুখোশ পরা মঞ্চের অভিনেতাসহ রোমান যুগের ক্ষুদ্র মূর্তি, কথিত ‘মন্দ আত্মা’ তাড়ানোর ব্রোঞ্জের ঘণ্টা আর বীণার নকশা করা একটি লাল পাথর বসানো আংটি পেয়েছেন। ইসরায়েলের পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজের মূল কাঠামোর ধ্বংসাবশেষ ও তাদের মালপত্র সাগরের মাত্র ১৩ ফুট গভীর পানির নিচে ছিল।
আংটিটি একটি সবুজ পাথর দিয়ে খোদাই করা, মেষ পালক বালক কাঁধে একটি ভেড়া বহন করছে। আংটিটিকে ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ বিরল আবিষ্কার হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা এই নিদর্শনটি পাওয়াকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলছেন। কারণ ওই আংটিতে থাকা চিত্রটি হচ্ছে একেবারে প্রথম দিকের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত যিশুখ্রিস্টের প্রতীক।
এর আগেও সাগরের তলায় প্রাচীনকালের জাহাজ ‘সান জোস’র ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে।সেই জাহাজটি সম্ভবত বহন করছিল ১৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ!
ইতিহাস বলছে, ৩১০ বছরের পুরনো এই স্প্যানিশ গ্যালিয়ন ঘরানার জাহাজটির নাম সান জোস। তখন চলছিল ওয়ার অব স্প্যানিশ সাকসেশন। ১৭০৮ সালে ব্রিটিশ জাহাজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে এটা ডুবে যায় ক্যারিবিয়ান সাগরে।
ওটা মূল্যবান স্বর্ণ, রৌপ্য আর রত্নপাথর বহন করছিল। এগুলো এখন পানির দুই হাজার ফুট গভীরে পড়ে রয়েছে। এটা কলোম্বিয়ার কার্তাজেনা উপকূলের কোনো এক জায়গায় রয়েছে।
আসলে উডস হোল ওসেনোগ্রাফিক ইন্সটিটিউটের একটি সাবমেরিন ড্রোন রেমুস ৬০০০ এর প্রকৌশলীরা এই জাহাজটি খুঁজে পান। এই সাবমেরিনের মালিক বিলিয়নিয়ার রে দালিও। তিনি দালিও ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এটা পরিচালনা করেন।
আসলে ২০১৫ সালেই এই জাহাজটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তখন থেকেই এর খবর গোপন করা হয়। জাহাজটি কামানে খোদাই করে ডলফিন আঁকানো ছিল। এতে নিশ্চিত হওয়া গেছে জাহাজটি ‘সান জোস’।
এদিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বেশ কয়েকটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে তুরস্কে সাগরতলে চালু হয়েছে ঐতিহাসিক জাদুঘর। পানির নিচে গড়ে তোলা ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত এই জাদুঘরটি সম্প্রতি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। আর শতাব্দী প্রাচীন জাহাজের ধ্বংসাবশেষগুলো হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
তুরস্কের গ্যালিপোলি শহর ঘেঁষে বয়ে যাওয়া প্রণালি দারদানেলেস। মারমারা সাগরকে এজিয়ান সাগরের সাথে যুক্ত করা এই প্রণালির পানির নিচেই গড়ে তোলা হয়েছে ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত এই জাদুঘর। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ১০৬ বছর পর উদ্বোধন করা হয়েছে ‘দ্য গ্যালিপোলি হিস্টোরিক আন্ডারওয়াটার পার্ক’ জাদুঘরটি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪৪৪
আপনার মতামত জানানঃ