বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা এবং ‘সংবিধান অবমাননা’ করায় হেফাজতে ইসলামের নতুন আমির জুনাইদ বাবুনগরী এবং যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যৌথভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবীদের ৬৫ সংগঠন।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর মৎস ভবন থেকে শুরু করে শাহবাগ হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছবির হাট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করায় বাবুনগরী ও মামুনুলকে তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারের দাবির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠন এবং সাম্প্রদায়িক ভাষণ নিষিদ্ধ করা, পহেলা ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসাবে ঘোষণা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদানকালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তাদের (হেফাজত নেতাদের) উচিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করা। অন্যথায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা উপযুক্ত জবাব দেবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘অপ্রত্যাশিতভাবে আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি, কতিপয় ধর্মান্ধ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছে।’
‘আমি তাদের এ অবস্থানের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদের সতর্ক করছি যে বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতাকারী কাউকে আমাদের জনগণ ছাড়বে না,’ বলেন তিনি।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাংবাদিক আবেদ খান, ইতিহাসের অধ্যাপক ও গবেষক মুনতাসীর মামুন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টরস কমান্ডারস ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশন, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, প্রজন্ম ’৭১, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, ইতিহাস সম্মিলনী, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), জাতীয় যুব জোট, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ কেন্দ্র, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলন, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ, ’৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রবর্তন জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় খেলাঘর, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদ, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ), বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরাম, গৌরব ’৭১, অপরাজেয় বাংলা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার, কর্মজীবী নারী, জাতীয় নারী জোট, নারী মুক্তি সংসদ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন ইউএসএ (বাংলাদেশ চ্যাপটার), জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চা, সেক্যুলার ইউনিটি বাংলাদেশ, ইয়ুথ ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ঘাসফুল শিশু কিশোর সংগঠন, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ ও আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
আপনার মতামত জানানঃ