
ই-কমার্সের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন খোদ বাণিজ্যমন্ত্রীও। আজ রোববার এ কথা গণমাধ্যমে জানান তিনি। সূত্র মতে, ই-কমার্সের একটি সাইটে কোরবানির গরু অর্ডার দিয়ে কাঙ্ক্ষিত গরু পাননি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
মন্ত্রী বলেন, “আমি গত কোরবানির ঈদের আগের কোরবানি ঈদে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করি। তাদেরকে নিজের কুরবানির জন্য একটি গরু কিনতে এক লাখ টাকা দিই। কিন্তু আমাকে যে গরুটি দেখিয়েছিল, আমি সেটি পাইনি। আমি নিজেই তখন অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছিলাম।”
তিনি বলেন, “একটি জিনিস নতুন করে চালু করলে, সেটা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তার ভুক্তভোগী আমি নিজেই।”
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “ডেসটিনি ও যুবকের অনেক সম্পদ রয়েছে। সম্পদগুলোর দামও বেড়েছে অনেক। ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করলেও যে টাকা পাওয়া যাবে তা দিয়ে গ্রাহকদের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ টাকা ফেরত দেওয়া যাবে।”
এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, “আইনমন্ত্রী আমাকে বললেন এটা আদালতের বিষয়। কাউকে (কোনো সংস্থা) দিয়ে সংযুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে। আইন মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে।”
মূলত আজ রোববার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সম্মেলন কক্ষে ‘প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আয়োজনে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মফিজুল ইসলাম বলেন, “২০২০ সালের নভেম্বরে ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করা হয় কমিশনের পক্ষ থেকে। মামলাটা আদালতে চলমান। শিগগিরই রায় হবে।”
মফিজুল ইসলাম আরও বলেন, “সারা বিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ব্যবসার সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য পরিচালিত হবে।”
তিনি বলেন, “করোনাকালে ই-কমার্স সুনাম অর্জন করেছে, মানুষ উপকৃত হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অসৎ ব্যবসা ও প্রতারণার কারণে সব ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “ই-কমার্স বন্ধ না করে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। এখান থেকে ই-কমার্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা হবে এবং কঠোরভাবে ডিজিটাল বাণিজ্য মনিটরিং করা হবে। একই সঙ্গে যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ ধরনের প্রতারণার সুযোগ না পায়, সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণও করেছে।”
এ সময় ই-কমার্সের সমস্যা সমাধানে সবাই মিলে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আইনি প্রক্রিয়া আরও কঠোর করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি আইন পরিবর্তন করে ই-কমার্স খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার। এই তিন-চার কিংবা ১৫-২০টা কোম্পানির জন্য ই-কমার্স খাতকে বিপদে ফেলতে চাই না। এ জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, যুবক ও ডেসটিনির কথা শুনেছি। বাণিজ্যমন্ত্রণালয় যদি প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে, তাহলে ৫০-৬০ শতাংশ মানুষের টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু সেটা আমি চাইলে তো হবে না। আইনমন্ত্রীর সহযোগিতা লাগবে। মন্ত্রীকে বলেছি, তিনি বলেন, এটা আদালতের ব্যাপার। আইনের ঝামেলা মেটাতে আদালতের রায় পেতে হবে।
ইভ্যালিসহ এসব প্রতিষ্ঠানকে ছেড়ে দিলে ভালো হবে না। এ জন্য অর্থমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইনমন্ত্রণালয়ের সাহায্য দরকার। কারণ, বর্তমান আইন পরিবর্তন করতে হবে। সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে।
এসডব্লিউ/এসএস/২২২০
আপনার মতামত জানানঃ