তালিবানরা আফগানিস্তান দখলের পর থেকেই নিজেদের জন্য সুবিধাজনক রীতিনীতি তৈরী করে নিচ্ছে। এর মধ্যে আফগানিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান তালিবানের জ্যেষ্ঠ নেতা কারি ফসিহউদ্দিন নতুন একটি ঘোষনা দিলেন যে, তালিবানের বিরোধিতাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
তালিবান সেনাপ্রধান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা কোনো গৃহযুদ্ধ ঘটতে দেব না। যারা দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করছে তাদের দমন করা হবে। যারা তালিবানের বিরোধিতা করবে তাদের গ্রেফতার করা হবে।’
পরে তালিবানের মুখপাত্র আহমাদুল্লাহ মুত্তাকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া আফগান সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন নিয়ে নিজের পরিকল্পনা জানিয়েছেন তালিবান সেনাপ্রধান।
কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সুসংগঠিত কাঠামোর সঙ্গে দেশের একটি নিজস্ব ‘নিয়মিত এবং সুশৃঙ্খল’ সেনাবাহিনী থাকবে। এই সেনাবাহিনীর সৈন্যদের আফগানিস্তানের সীমান্ত রক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আফগান সেনাবাহিনীর পুনর্গঠনের জন্য আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তালিবান সেনাপ্রধান।
তিনি আরও জানান, এই আফগান সেনা হবে নিয়মিত, সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী। তালিবান আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু করতে দেবে না বলেও এ সময় জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মুত্তাকী টুইটারে জানান, আফগানিস্তানে শিগগিরই একটি সুসংগঠিত সেনাবাহিনী গঠন করা হবে। আফগানিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য যেসব সৈন্য নিয়োগ করা হবে তাদের আফগানিস্তান রক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এর আগে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নারীদের অধিকার আদায়ের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালিবান।
বিক্ষোভকারী নারীদের ভাষ্য, অধিকার আদায়ের দাবিতে তারা কাবুলে একটি বিক্ষোভ বের করেন। তারা একটি ব্রিজ থেকে হেঁটে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও পিপার স্প্রে করে তালিবান।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালিবান। সে সময় নারী অধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটে। শিক্ষাসহ বিভিন্ন মৌলিক ও মানবিক অধিকার থেকে নারীদের বঞ্চিত করে তালিবান। তালিবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করায় নারীরা তাদের অধিকারের বিষয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন।
তালিবান সদস্যরা বিক্ষোভকারী নারীদের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন সোরায়া নামের এক নারী। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, তালিবানের হামলায় অনেক নারী রক্তাক্ত হন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তালিবানের এমন সহিংস চেহারা পুনরায় ফিরে আসবে এমন আশঙ্কা বরাবরই ছিলো। যতই তালিবানরা ক্ষমা প্রার্থনা করুক কিংবা নিজেদের পরিবর্তন নিয়ে আস্থা দিক, তাতে করে তাদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা সম্ভব ছিলো না প্রথম থেকেই। এখন একে একে তালিবানের বর্তমান রূপ বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। এতে তাদের পশুর মত অমানবিক ও কট্টরপন্থী আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে।
এমন চলতে থাকলে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি পুনরায় ২০ বছর আগের মত অবস্থানে ফিরে যাবে। এ পরিস্থিতি রুখতে বিশ্বের সংশ্লিষ্টদের দ্রুত তালিবানদের দিকে নজর দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/০০০৬
আপনার মতামত জানানঃ