টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই ধ্বসে পড়েছে যে বাড়ির অংশ, সেখানে বসবাস করা ফুটপাথে থাকার চেয়ে বেশি বিপদজনক। ভূমিকম্প বা কলবৈশাখী ঝড় হলে এই বাসস্থানগুলোর ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাকে এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। মুজিবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া বাড়ি বছরখানিক হবার আগেই ধ্বসে যাওয়া থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, বাড়িগুলো কতটা মানসম্মত করে নিমার্ণ করা হয়েছে।
বৃষ্টিতে ধ্বসে পড়ছে ঘর
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বারান্দা ধ্বসে পড়েছে। ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে আছে আরও কয়েকটি ঘর। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উপজেলায় ২৮টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে শুক্রবার সকালে ওই স্থানের ২৮টি ঘরের মধ্যে ২৭ নম্বর ঘরের বারান্দার অংশ এবং একটি কলম ভেঙে পড়ে। ঘরের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকলেও স্থান নির্বাচন এবং কাজের মান নিয়ে রয়েছে বিস্তর প্রশ্ন। সরকারি অনেক খাস জমি থাকা সত্ত্বেও গজারিয়া উপজেলার অধিকাংশ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে নদীর ধারে। যেকোনাে সময় বন্যা এবং বৃষ্টিপাতে ঘরগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাশের ২৮ নম্বর ঘরটিরও একই অবস্থা। ঘরের নিচের মাটি সরে যাওয়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে সেটা ভেঙে পড়তে পারে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে একই সারির অন্তত ছয়টি ঘর। ভেঙে যাওয়া ঘরের মালিক ওমর আলীর কাছে জানতে তার সঙ্গে যােগাযােগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীদের ভোগান্তির যখন শেষ নেই
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বড় রায়পাড়ায় গৃহহীন পরিবারের মধ্যে যে ২৮টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কেবল পাঁচটি পরিবার সেখানে থাকছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, তারাও এখানে নিয়মিত থাকেন না। শুধু প্রশাসনের ভয়ে দিনে এসে ঘােরাফেরা করেন। এখানে না থাকলে ঘরের বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে। এই ভয়ে অনেকে সকালে রান্না করে নিয়ে আসেন, দুপরে পর্যন্ত থেকে বিকেলে অন্যত্র চলে যান। বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং রান্না করার ব্যবস্থা না থাকায় আপাতত এখানে থাকা সম্ভব নয় বলে জানান তারা।
গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির ফলে একটি ঘরের নিচের মাটি সরে গিয়ে তার কিছু অংশ ও একটি কলম ভেঙে পড়েছে। এসব ঘরের ভিত্তি বেশি গভীর নয় বিধায় এ সমস্যাটি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানালেও বাড়ি তৈরী নিয়ে সরকারী কর্মকর্তাদের বেপরোয়াতাকে ছোট ভুল হিসেবে দেখার উপায় নেই।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/১৫০১
আপনার মতামত জানানঃ