এক বছরের ব্যবধানে সাংবাদিক নির্যাতন বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে পারিবারিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি ও শিশু হত্যার ঘটনা। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) গত বছর ও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসের জরিপ পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো আসকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে নির্যাতনের শিকার হন ৮৮ জন সাংবাদিক। চলতি বছরের ৯ মাসে সেই সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এ বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ২০৯ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮১ জন সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করায় হুমকি, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩৫ জন সাংবাদিক। এই ৯ মাসে মোবাইল ফোনে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন ২৩ জন সাংবাদিক। সন্ত্রাসীদের নির্যাতন, হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৫ জন।
আসকের জরিপ পর্যালোচনা
এ ছাড়া গত বছরের চেয়ে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে পারিবারিক নির্যাতন ও শিশু হত্যার ঘটনা। গত বছরের প্রথম ৯ মাসে ২৯৭ জন নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হলেও চলতি বছরের এ সময়ে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ৪৩২ জন। গত বছর প্রথম ৯ মাসে ৩৩২ জন শিশুকে হত্যা করা হয়। চলতি বছরের এ সময়ে শিশু হত্যার ঘটনা ৪৪৫টি। শিশু হত্যার ঘটনায় এ বছর ৬০টি মামলা বেশি হয়েছে। গত বছর ২২৫ জন নারী ও পুরুষ যৌন হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হলেও এ বছর সেই সংখ্যা ২৪৫। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পারিবারিক নির্যাতনের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯৭৫ জন নারী ও শিশু। একই সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে এক হাজার ৭৮ শিশু। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা গত বছরের চেয়ে বাড়লেও কিছুটা কমেছে ধর্ষণের ঘটনা।দেশের প্রথম সারির কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নিজস্ব সংগৃহীত তথ্য নিয়ে পারিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ১৬৮ নারী। হত্যার শিকার হন ১১ জন গৃহকর্মী এবং বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হন ৩২ জন গৃহকর্মী। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়েছেন চারজন এবং আত্মহত্যা করেছেন দুজন গৃহকর্মী। এই সময়কালে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন ২১ নারী। এ সময়ের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪৭টি প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ভারত সীমান্তে নিহত হয়েছে ৩৯ জন। গণপিটুনির ঘটনায় মারা গেছে মোট ৩০ জন। ৯ মাসে দেশের কারাগারগুলোতে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা যায় ৫৮ জন।
আপনার মতামত জানানঃ