শত শত মৃত কচ্ছপ সমুদ্রতীরে ভেসে উঠছে। সম্প্রতি জুন মাসে শ্রীলঙ্কা উপকূলে আগুন লাগায় ডুবে যাওয়া রাসায়নিক ভর্তি একটি কার্গো জাহাজ থেকে সামুদ্রিক পরিবেশের এই বিপর্যয়। পরিবেশবিদদের মতে এ দুর্ঘটনা দেশটির সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট সামুদ্রিক দুর্যোগ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পরে উপকূল ধরে প্রচুর মরা সামুদ্রিক কচ্ছপ, পাখি এবং ছোট মাছ দেখা যাচ্ছে।
সূত্র মতে, সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এক্স-প্রেস পার্ল নামের জাহাজটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে জ্বলতে থাকে। এই কার্গোতে ১ হাজার ৪৮৬টি কন্টেইনার ছিল। যার মধ্যে ২৫ টন নাইট্রিক এসিডসহ অন্যান্য ক্যামিকেল এবং কসমেটিক ছিল।
এই জাহাজ থেকে ছড়িয়ে পড়া বিষক্রিয়ায় এ অব্দি ১৭৬ টি কচ্ছপ, ২০ টি ডলফিন এবং ৪ টি তিমি মারা গেছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত লোকাল টেলিভিশনের এক ভিডিওতো দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলে সামুদ্রিক কচ্ছপের মৃতদেহ এবং অসংখ্য প্লাস্টিকে টুকরো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। স্বেচ্ছাসেবীরা সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার পরিবেশ মন্ত্রী মাহিন্দা আমারাওয়েরা বলেন, ডুবে যাওয়া কার্গোতে ১৯০ টিরও বেশি পণ্য ছিল, যার অধিকাংশই প্লাস্টিক।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর এই ঋতুতে কখনওই এভাবে সামুদ্রিক প্রাণী মারা যায় না। অধিকাংশ মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে পশ্চিম উপকূলে, যা কিনা ওই জাহাজ ডুবির ঘটনায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
যদিও কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে এই ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলে মাছ ধরার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুর্যোগের প্রভাবে এখনও সামুদ্রিক পরিবেশ ঝুঁকিতে আছে।
দেশটির মেরিন এনভায়রনমেন্ট পলিউশন অথরিটি (এমইপিএ) এর চেয়ারপারসন দর্শনি লহন্ডপুরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এটি দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে খারাপ সামুদ্রিক পরিবেশ বিপর্যয়। পর্যটন কেন্দ্রগুলির প্রধান আকর্ষণ নেগোম্বো লেগুনের চারপাশে ফিশিং ব্রিডিং পয়েন্ট এবং ম্যানগ্রোভগুলি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং দূষণ এগুলোকে প্রভাবিত করছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৮২০
আপনার মতামত জানানঃ