পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এবার অভিনবভাবে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল ফিরলেন প্রায় ২০০ জন কর্মী সমর্থক। বিজেপির কর্মী হওয়াকে ভুল কাজ বলে স্বীকার করে মাথা ন্যাড়া করে যোগ দিয়েছেন তারা। খবর জিনিউজের।
খবরে বলা হয়, বিজেপির কর্মী হওয়াকে ভুল কাজ বলে স্বীকার করে মাথা ন্যাড়া করে যোগ দিয়ে এবার ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন খানাকুলের বলপাই বিজেপি নেতা বিভাস মালিকের নেতৃত্বে একঝাঁক বিজেপি নেতাকর্মী। মঙ্গলবার তারা মমতার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। অধিকাংশ নেতাকর্মীই মাথা ন্যাড়া হয়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। আলোচিত ওই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরামবাগের সংসদ সদস্য অপরূপা পোদ্দার।
তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেওয়া বিজেপি কর্মীদের বরাত দিয়ে জিনিউজ জানায়, বিজেপিতে গিয়ে তারা ভুল করেছিলেন। সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতেই মাথা ন্যাড়া হলেন। এখন থেকে তারা তৃণমূলের আদর্শ মেনেই কাজ করবেন।
হুগলির আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার থেকে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন ওই কর্মী সমর্থকেরা। এই বিষয়ে সাংসদ অপরূপা পোদ্দার জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার আরামবাগে দুঃস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করে তৃণমূল। সেই সময় দলিত সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ গিয়ে তাকে বলেন বিজেপিতে যোগ দিয়ে তারা ভুল করেছেন এবং মাথা ন্যাড়া করে প্রায়শ্চিত্তের মধ্যে দিয়ে তারা তৃণমূলে ফিরতে চান।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে বীরভূমেও বেশকিছু বিজেপির কার্যকর্তা গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধিকরণের মধ্যে দিয়ে তৃণমূলে ফেরেন।
নিজেদের দুর্বলতার কথা অস্বীকার করে বিজেপির আরামবাগ জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ দাবি করেছেন, খানাকুলে বিভাস মালিকসহ কয়েকজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। ওরা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছিল। এখন দেখছে বিজেপিতে এসে কোনও লাভ নেই। আসলে ওরা ইনকাম করার জন্য এসেছিল। এখন ওরা সেটা বুঝতে পেরেছে। এরা কোনও দলের সম্পদ হতে পারে না। এরা ভবঘুরে। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। দলের আসল সমর্থকরা এখনও অত্যাচারিত হয়ে বিজেপিতেই রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ভোটের ফলাফলের পর থেকে তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’র পালা জারি রয়েছে। যদিও বিজেপি অবশ্য এই ধরনের ঘটনাকে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ফলাফল হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। গেরুয়া শিবিরের দাবি যেভাবে নির্বাচনের পর হিংসা হয়েছে, তাতে তাদের কার্যকর্তারা ভয় পেয়ে বাধ্য হয়ে তৃণমূলে যোগদান করছেন।
বিজেপি কর্মীদের দলবদলের ফলে ক্রমশই শক্তি বাড়ছে তৃণমূল কংগ্রেসের। আর তার জেরে বেজায় ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবির। ভয় দেখিয়ে যোগদান করানো হচ্ছে বলে দাবি বিজেপির। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপিতে কাজের পরিবেশ নেই বলেই লোকজন দলে দলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার সিদ্ধান্ত বলে দাবি ঘাসফুল শিবিরের। জেলার বিজেপি কর্মীদের দলে নিলেও তাদের রীতিমতো বাছাই করেই নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলার সহ–সভাপতি অভিজিৎ সিনহা।
গত ১৮ জুন প্রায় ২০০ বিজেপি কর্মীকে গঙ্গাজল ছিটিয়ে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়। এবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন শতাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থক। পর পর এই সব ঘটনায় জেলার রাজনীতিতে বিতর্ক ক্রমেই মাথাচাড়া দিচ্ছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২০২৫
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ