সৌদি নারীদের পুরুষ অভিভাবক অর্থাৎ কারো স্ত্রী, মা, বোন ইত্যাদি পরিচয় নিয়েই তবে হজের জন্য নিবন্ধন করতে হতো। সৌদি আরব সম্প্রতি দেশটির নারীদের প্রতি আরো উদার হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই হজের জন্য নিবন্ধিত হতে পারবেন দেশটির নারীরা। অর্থাৎ মাহরাম ছাড়াই নারীরা এখন থেকে হজ করতে পারবেন।
রোববার সৌদি হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে খবর জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই হজের জন্য নারীদের নিবন্ধনের অনুমতি দিয়েছে সৌদ আরব। অর্থাৎ মাহরাম (পুরুষ অভিভাবক) ছাড়াই নারীরা এখন থেকে হজ করতে পারবেন।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো মাহরামের (পুরুষ আত্মীয়) সাহচর্যের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই নারীরা হজের আবেদন করতে পারবেন।
সম্প্রতি সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ দেশটির শরিয়াহ আইনের আর্টিকেল ১৬৯ এর বি ধারাটি বাতিল করে। যেখানে লেখা ছিল বিবাহিত, অবিবাহিত ও সেপারেটেড নারীদের তাদের পুরুষ অভিভাবকের অধীনস্থ থাকতে হবে। নতুন আইন অনুযায়ী যেকোন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর আলাদা থাকার অধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে পুরুষ অভিভাবক তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ করতে পারবেন না। শুধু তখনই অভিযোগ করতে পারবেন যখন উক্ত নারী কোন অপরাধ করবেন।
করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে গত বছরের মতো এবারও সৌদি আরবের বাইরে কাউকে হজ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য ও হজ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, এ বছর কেবল ৬০ হাজার সৌদি মুসল্লি হজ করতে পারবেন। তবে ৬০ হাজার মুসল্লি বেছে নিতে কিছু শর্ত বেঁধে দেয় সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। হজে অংশগ্রহণকারীদের দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগ থাকা যাবে না। বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। হজের আগে করোনা প্রতিরোধী টিকা নেয়া লাগবে।
রোববার থেকে হজের জন্য রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৩ জুন রাত ১০টা পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে। আগাম আবেদনকারীরা কোনো অগ্রাধিকার পাবেন না।
সৌদি সরকার ৩ হাজার ২৩০ ডলার থেকে শুরু করে ৪ হাজার ৪২৬ ডলার মূল্যের তিনটি প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে।
হজ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, হজযাত্রীদেরকে পবিত্র সব স্থানের কাছাকাছি থাকতে হবে। প্রতিটি গাড়িতে সর্বোচ্চ ২০ জন হজযাত্রী বহন করা যাবে। পবিত্র মিনায় অবস্থানকালে প্রতিদিন তিন বেলা খাবার সরবরাহ দেয়া হবে।
অন্যদিকে পবিত্র আরাফাতের ময়দানে অবস্থানকালে দু’বেলা খাবার সরবরাহ দেয়া হবে। এগুলো হলো সকালের নাস্তা এবং দুপুরের খাবার। মুজদালিফায় দেয়া হবে রাতের খাবার। এর বাইরে অন্য খাবার এবং কোমল পানীয় থাকবে পর্যাপ্ত আকারে। যে যা পারেন, সেখান থেকে এসব পান করতে পারবেন। তবে হজযাত্রীকে পবিত্র মক্কার বাইরে নিতে দেয়া হবে না এসব খাবার বা পানীয়।
হজ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, হজের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া মানেই হজের চূড়ান্ত দফা অনুমোদন নয়। এতে আরো বলা হয়েছে, আবেদনকারীর বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং রেজ্যুলুশন সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীকে হজের অনুমোদন দেয়া হবে। যদি দেখা যায় আয়োজন বিষয়ক রেজুল্যুশন ভঙ্গ করা হচ্ছে তাহলে যেকোনো সময় যেকোনো অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখে মন্ত্রণালয়।
হজের জন্য অনুমোদন পাওয়ার আগে সব আবেদনকারীকে অবশ্যই স্বীকারোক্তি দিতে হবে যে, গত ৫ বছরের মধ্যে তিনি পবিত্র হজ করেননি। তারা কোনো জটিল রোগে ভুগছেন না। এমনকি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত নন। এ ছাড়া ৬ মাসের মধ্যে তারা কোনো জটিল রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হননি বা কোনো ডায়ালাইসিস চিকিৎসা করানো হয়নি মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭৩৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ