চট্টগ্রাম নগরের খুলশী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. শাখাওয়াত আলী ওরফে লালু (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংঘটন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর আইটি বিশেষজ্ঞ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এসআই রাছিব খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শাখাওয়াত তার সঙ্গীদের জন্য অপেক্ষা করছে- এমন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে জিহাদী ও উগ্রবাদী কাগজপত্র, পাসপোর্ট, মোবাইল, ট্যাব এবং নোটবুক উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্র জানায়, ২০১২ সালে শাখাওয়াত তার ভায়রা আরিফ ও মামুনের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যুক্ত হন। সেনাবাহিনীর চাকুরিচ্যুত মেজর জিয়া, মনসুরাবাদ এলাকার শফিক হুজুর ও লালখানবাজার এলাকার ইলেকট্রনিক্স দোকানের কর্মচারী ওমর ফারুক ও শাখাওয়াত মিলে দেশে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে আনসার আল ইসলামের আইটি বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন শাখাওয়াত।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৭ সালে জিহাদে অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে তুরস্কে যান। তুরস্ক হতে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়াতে প্রবেশ করে দীর্ঘ ছয় মাস ভারী অস্ত্রশস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার “ইদলিব” এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরবর্তীতে সে সিরিয়া হতে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্কে হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশ করেন।
এরপর ইন্দোনেশিয়া থেকে শ্রীলংকা গিয়ে, আবার ইন্দোনেশিয়ায় ফিরে এসে বসবাস করতে থাকেন। সেখানেও তিনি জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সর্বশেষ ২২শে মার্চ তিনি বাংলাদেশে এসে জিহাদি কার্যক্রম শুরু করেন।
আনসার আল ইসলামের নেতা তানভীর গ্রেপ্তার
এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের আরেক নেতাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। গ্রেপ্তার জসিম উদ্দিন তানভীর সংগঠনটির হবিগঞ্জ জেলার অন্যতম নেতা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ঘনশ্যামপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা এলাকা থেকে শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দলের বেশ কিছু সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ায় তিনি অনেকদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৪-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল শুক্রবার বিকেলে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার আনসার আল ইসলামের এক সদস্যের জবানবন্দির ভিত্তিতে তানভীরকে খোঁজা হচ্ছিল। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তানভীরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, তানভীর নিজেকে আনসার আল ইসলামের হবিগঞ্জ জেলার শীর্ষস্থানীয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া শেষ করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেসরকারি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
চরমপন্থায় উসকানি দেয়ার প্লাটফর্ম হিসেবে তানভীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে আসছিলেন। তার কাছ থেকে উগ্রবাদী কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, তিনটি মোবাইল, উগ্রবাদী বই ও লিফলেট জব্দ করা হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৮০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ