এই করোনার ভেতর অলিম্পিক আয়োজিত হলে মিউটেশনের মাধ্যমে ‘আরও ভয়ংকর’স্ট্রেইন তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা।
জাপানের চিকিৎসক ইউনিয়নের প্রধান নাওটো উয়েয়ামা বিবিসিকে বলেছেন, ‘জুলাইয়ে টোকিও অলিম্পিক আয়োজন হলে, তা থেকে ছড়াতে পারে নতুন স্ট্রেইন, যা অন্য স্ট্রেইনের থেকে আরও ভয়ানক রূপ নিতে পারে।’
গত বছর করোনার কারণে স্থগিত হয়েছিল টোকিও অলিম্পিক। কিন্তু প্রথম ঢেউ যেতে না যেতেই হাজির ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। রূপ বদলে আরও ক্ষতিকর হয়েছে নতুন ভাইরাস।
এই পরিস্থিতিতেই আয়োজিত ‘হতে যাচ্ছে’ টোকিও অলিম্পিক। জাপান প্রশাসন, অলিম্পিক আয়োজক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা এখনো বিশ্বের জনপ্রিয়তম টুর্নামেন্টটি আয়োজনের পক্ষেই। ইতিমধ্যে বিদেশি দর্শকদের জাপানে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বদেশিরা স্টেডিয়ামে যেতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে আগামী মাসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও জাপানিরা নিজেরাই অলিম্পিক আয়োজনের বিপক্ষে।
নাওটো উয়েয়ামা শোনালেন তার শঙ্কার কথা, ‘টোকিও অলিম্পিক আয়োজিত হলে বিভিন্ন স্থানের স্ট্রেইন এক জায়গায় আসবে। এখান থেকে কোনো বিপদ হলে আগামী ১০০ বছরেও সমালোচনা শেষ হবে না।
বাতিল হতে পারে টোকিও অলিম্পিক
জাপানে করোনা বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবস্থাও খারাপ। এই পরিস্থিতিতে জাপানে অলিম্পিক গেমস বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছলেন তোশিহিরো নিকাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। একটি টিভি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ”বলা হচ্ছে, অলিম্পিক গেমস করা সম্ভব নয়। সেরকম হলে আমাদেরও না করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
এই প্রথম ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রধান কর্মকর্তা স্বীকার করলেন টোকিও অলিম্পিক গেমস বাতিল হতে পারে। জাপানের রাজনীতিতে নিকাই খুবই ক্ষমতাশালী। তিনি এই কথা বলায় অলিম্পিক গেমস হওয়া নিয়ে সন্দেহ আরো বেড়েছে। গত বছর গেমস হওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে এমনিতেই তা একবছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
জাপান ভ্রমণে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি
যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের জাপান ভ্রমণের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৫১টি দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা জারি রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করোনা মহামারির কারণে এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এক বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের যাতায়াত কার্যত বন্ধ রয়েছে। করোনা মহামারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমশ বেরিয়ে আসছে। তবে জাপানের পরিস্থিতি এখনো নাজুক থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এমন সতর্কতা জারি করছে।
জাপানে এখন পর্যন্ত সাত লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন প্রায় ১২ হাজারের বেশি মানুষ। জাপানে অনেক দিন ধরে করোনার সংক্রমণের হার কম ছিল। কিন্তু এখন দেশটিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণের ঢেউ দেখা যাচ্ছে।
তা ছাড়া করোনার টিকাদানের ক্ষেত্রেও জাপান পিছিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত জাপানের মাত্র দুই শতাংশ লোক করোনার অন্তত এক ডোজ টিকা গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্যসেবী ও সিরিঞ্জের সংকটের কারণে দেশটিতে টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
জাপানের একটা বড় অংশে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। জাপান ইতিমধ্যে বেশির ভাগ ভ্রমণকারীদের সে দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় জাপান কোনো পর্যটক বা ব্যবসায়ী ভ্রমণকারীদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। কোনো ব্যতিক্রম ছাড়া এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রও আছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০১৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ