করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা জানা যাবে ৬০ সেকেন্ড বা এক মিনিটেরও কম সময়ে। এমনই একটি যন্ত্র আবিষ্কার করে তার পরীক্ষা করছে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। এটি এমন একটি যন্ত্র যাতে কাউকে তার নিশ্বাস-প্রশ্বাসের পরীক্ষা করা হয়। তা থেকে ৬০ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা তা জানা সম্ভব বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ।
এই পদ্ধতির পরীক্ষা অস্থায়ীভিত্তিতে অনুমোদন দিয়েছে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। এ যন্ত্রটির নাম দেয়া হয়েছে ব্রিথোনিক্স। বর্তমানে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সংলগ্ন সীমান্তের একটি শহরে এ পদ্ধতির পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের দ্রুততম পরীক্ষার পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে শ্বাসপ্রশ্বাসের বিশ্লেষণও করা হচ্ছে।
কোভিড শনাক্ত করতে বর্তমানে যে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়, তার পাশাপাশি এই শ্বাস-প্রশ্বাস বিশ্লেষণের পরীক্ষাটি চলবে বলে জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। গত বছর এর যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে তাতে কিটটি ৯০ শতাংশ সঠিক ফল দিয়েছিল বলে জানিয়েছিল কোম্পানিটি।
এই পদ্ধতিতে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয় (ডিসপোজেবল) এমন মাউথপিস ব্যবহার করা হয় এবং এমনভাবেই এটি তৈরি করা হয়েছে যেন কোনভাবেই তার মাধ্যমে দূষণ বা সংক্রমণ না ঘটে ।
ডিভাইসটিতে ফুঁ দেওয়ার পরে এর প্রযুক্তি কোন ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের রাসায়নিক যৌগগুলো বিশ্লেষণ করে দেখে ওই ব্যক্তি ভাইরাসে সংক্রমিত কিনা। কোম্পানিটি বলছে, এই পরীক্ষায় পজিটিভ ফল এলে ওই ব্যক্তিকে পিসিআর সোয়াব টেস্টও করানোর প্রয়োজন আছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই কিট ব্যবহারের আগ্রহ দেখতে পেয়েছে ব্রেদোনিক্স। তাই এ নিয়ে তারা নানা ধরনের আলোচনাও করছে। ইন্দোনেশিয়া ও নেদারল্যান্ডসে ইতোমধ্যে একই ধরনের ব্রেদালাইজার টেস্ট চালু হয়েছে।
করোনা শনাক্ত করতে কুকুরকে প্রশিক্ষণ
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করতে কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। কোনো উপসর্গ না থাকলেও ৯০ শতাংশ করোনার সংক্রমণ শনাক্ত করতে পারে কুকুর। স্থানীয় সময় সোমবার প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।
গবেষকেরা আশা করছেন, এতে এক দেশ থেকে যারা অন্য দেশে যাবেন, তাদের কোয়ারেন্টিন প্রয়োজন কি না, তা বোঝা সহজ হবে। কুকুরের ঘ্রাণশক্তি প্রবল। সুইমিংপুলের পানিতে মেশানো অর্ধেক চামচ চিনির গন্ধও খুঁজে পায় কুকুর। ক্যানসার, ম্যালেরিয়া ও মৃগীরোগও এর আগে শনাক্ত করতে পেরেছে কুকুর। গবেষকেরা বলছেন, বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, কুকুর করোনা শনাক্ত করতে পারে।
লন্ডন স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকেরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অথচ কোনা উপসর্গ নেই, এমন সব রোগীদের কাছ থেকে বিশেষ কোনো গন্ধ কুকুর শনাক্ত করতে পারে কি না, তা নিয়ে মূলত গবেষণাটি করছেন। করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাদের পরিধেয় কাপড় ও মুখোশ নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করেছেন তারা। তারপর সেগুলো কুকুরকে দিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
এভাবে ২০০ জন করোনা রোগীর মোজা নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে গবেষণাগারে ৬টি কুকুর দিয়ে তা পরীক্ষা করে দেখেন। রাসায়নিক কোনো যৌগের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে কি না তা দেখা হয়। এর আগে এ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কুকুরগুলোকে।
গবেষণাগারে ওই পরীক্ষায় দেখা যায় যে, কুকুরগুলো ৮২ থেকে ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে সফলভাবে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত করতে সক্ষম। গবেষকদের একজন ক্লেয়ার গেস্ট এ প্রসঙ্গে বলেন যে, কুকুর করোনা পজিটিভ অথবা নেগেটিভ পুরোপুরি শনাক্ত করতে পারে।
গবেষণাটির সহলেখক জেমস লোগান বলেন, পরীক্ষার অন্য যেকোনো পদ্ধতির চেয়েও কুকুর অনেক দ্রুত করোনা শনাক্ত করতে পারে। ফলে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণরত অনেককে কুকুরের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করে অযথা কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন পড়বে না।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯৩৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ