করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং ফাইজারের করোনা টিকা বেশ ভালো কার্যকরী। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে রোববার (২৩ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের ওই ধরনটি বি১.৬১৭.২ নামে পরিচিত। ব্রিটিশ সরকারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং ফাইজারের করোনা টিকা বি১.৬১৭.২ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৮০ শতাংশ কার্যকরী। এছাড়া এই টিকা দুটি একই রকম ভাবে ব্রিটেনের কেন্টে প্রথম শনাক্ত হওয়া বি.১১৭ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও সমান কার্যকর।
গবেষণা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড বলছে, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যু এড়াতে এসব টিকা আরও বেশি কার্যকরী বলে দেখা গেছে।
পিএইচই বলছে, দুইটি ডোজের পর কার্যকারিতার এই পার্থক্যের কারণ হতে পারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজটি ফাইজারের তুলনায় পরে দেয়া হয়ে থাকে। ফাইজারের টিকাটি অনুমোদন পেয়েছেও আগে। অন্যান্য তথ্যে দেখা গেছে, সর্বোচ্চ সক্ষমতা লাভ করতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বেশি সময় লাগে।
৫ এপ্রিল থেকে ১৬ই মে পর্যন্ত চালানো এই গবেষণায় ১২,৬৭৫ জনের ওপর গবেষণা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১,০৫৪ জন ছিলেন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট, যেটি বি.১.৬১৭.২ নামে পরিচিত। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বিষয়টি জানার পর গবেষণায় সব বয়সীদের তথ্য বিবেচনায় নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে এসব টিকা সক্ষম হলেও সেই সক্ষমতার মাত্রা কতটা, তা বোঝার মতো যথেষ্ট তথ্য গবেষণায় ছিল না বলে পিএইচই জানিয়েছে।
বিবিসির স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদদাতা নিক ট্রিগেল বলছেন, ভাইরাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার বিষয়টি সবসময়েই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। সুতরাং, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রজেনেকার এই উচ্চ মাত্রার সুরক্ষা দেয়ার ক্ষমতা সবাইকে অনেক বেশি আশ্বস্ত করে তুলেছে। কারণ বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এগুলোর মাধ্যমে ভাইরাসকে পরাজিত করা যাবে।
ভারতে করোনা পরিস্থিতি
বিশ্বে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। সে দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে দুই কোটি ৬৫ লাখ ২৮ হাজার ৮৪৬ জন এবং মারা গেছে দুই লাখ ৯৯ হাজার ২৯৬ জন।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্যানুসারে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে দুই কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার ৫২৩ জন এবং বর্তমানে আক্রান্ত রয়েছে ২৮ লাখ ১১ হাজার ২৭ জন।
দেশটিতে করোনায় মারা যাওয়ার হার এক শতাংশ এবং সুস্থ হওয়ার হার ৯৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৭ জন এবং মারা গেছে তিন হাজার ৭৮৮ জন।
এদিকে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১৬ কোটি ৭০ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭১ জন এবং মারা গেছে ৩৪ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৯ জন।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৪ কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬২ জন এবং বর্তমানে আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ১৬ হাজার ১১০ জন। বিশ্বে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৯৮ শতাংশ এবং মারা যাওয়ার হার ২ শতাংশ। সারা বিশ্বে বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছে ৯৭ হাজার ৪৪৮ জন এবং বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ