বাংলাদেশকে শিগগিরই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রদানের জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। আগামী ২ জুন ফাইজারের অন্তত ১ লাখ ৬ হাজার ডোজ করোনার টিকা বাংলাদেশে আসছে। মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাঈদুল ইসলাম প্রধান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাঈদুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন জুনের ২ তারিখে গ্যাভির কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি কর্তৃপক্ষ ফাইজারের অন্তত ১ লাখ ৬ হাজার কভিড ভ্যাক্সিন বাংলাদেশে পাঠাবে। আজই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এর আগে সোমবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা অক্সফোর্ড-আ্যস্ট্রাজেনেকার ৪০ লাখ টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র দু-এক দিনের মধ্যেই বাংলাদেশের অনুরোধের আনুষ্ঠানিক জবাব দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, টিকা সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে সরকার গত ২৬ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ বন্ধ করে দেয়। টিকা দেওয়ার অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া বন্ধ আছে ৫ মে থেকে। এছাড়া রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও কুষ্টিয়া জেলায় টিকার স্বল্পতার কারণে দ্বিতীয় ডোজের কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিটিউট বাংলাদেশের কেনা টিকার চালান পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ার পর দেশব্যাপী সুশৃঙ্খলভাবে চলতে থাকা টিকাদান কর্মসূচি বিঘ্নিত হয়। জানুয়ারি থেকে শুরু করে ছয় মাস ধরে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা পাঠানোর কথা ছিল সেরামের। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ৫০ লাখ ডোজ পাঠায় সেরাম। ফেব্রুয়ারিতে তারা মাত্র ২০ লাখ ডোজ টিকা পাঠায়। এরপর থেকে আর কোনো চালান আসেনি বাংলাদেশে।
ইতোমধ্যে ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে টিকা রফতানির ওপর বিধিনিষেধ দিয়েছে।
টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভারতের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকার চুক্তি রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা মাত্র ৭০ লাখ পেয়েছি। অবশিষ্ট ডোজ টিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, এটা বিপজ্জনক। ফলে দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে আমরা চিন্তিত।
তিনি বলেন, এখন আমরা আপতত টিকা অন্য দেশ থেকে কিনে আনার চেষ্টা করছি। দেশে উৎপাদন করতে আরও ৫/৬ মাস লাগতে পারে। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব বিদেশ থেকে কিনে আনার চেষ্টা করছি।
ব্রিটেন ও ভারতীয় ধরনে কার্যকর ‘কোভ্যাক্সিন’
ব্রিটেন এবং ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের পৃথক দুটি ধরনের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্সের (আইসিএমআর) যৌথভাবে তৈরি টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’ কার্যকর বলে দাবি করেছে ভারত বায়োটেক। ভারত বায়োটেক রোববার জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের ‘ডি৬১৪জি’ ধরনের ওপর কোভ্যাক্সিন যতটা কার্যকর, তার তুলনায় ‘বি১৬১৭’ ধরনটির ক্ষেত্রে কার্যকারিতার হার অবশ্য সামান্য কিছু কম। কিন্তু তা প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটাই বেশি দাবি করছে সংস্থাটি।
দেশের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ২১১ জনে। এ সময় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ২৭২ জন। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জনে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন এক হাজার ১১৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৪ হাজার ২০৯ জন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩৫২
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ