ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে ৫০ জন ডাক্তারের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আইএমএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতে চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এ পর্যন্ত ২৪৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে রোববার (১৬ মে) একদিনেই দেশজুড়ে মারা গেছেন ৫০ জন চিকিৎসক।
মৃত চিকিৎসকের মাত্র তিন শতাংশ করোনা টিকার দুই ডোজই নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে আইএমএ।
আইএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. জয়েশ লেলে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইনকে বলেন, দেশজুড়ে এক দিনে ৫০ জন চিকিৎসকের মারা যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। এর মধ্যে দিয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মেয়াদে মৃত চিকিৎসকদের সংখ্যা দাঁড়াল ২৪৪ জনে।
তিনি আরও জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ভারতের তিনটি রাজ্যে—বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লি। বিহারে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৯ জন চিকিৎসক, উত্তরপ্রদেশে ৩৪ এবং দিল্লিতে ২৭ জন চিকিৎসক মারা গেছেন।
গত বছর করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসকদের মধ্যে মোট ৭৩৬ জন মারা গিয়েছিলেন বলে জানান জয়েশ লেলে। ফলে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত দেশটির প্রায় ১ হাজার জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।
আইএমএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতের সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যেন টিকার ডোজ পান, তা নিশ্চিত করতে সাধ্যমত সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, আইএমএ করোনায় ভারতে প্রায় এক হাজার চিকিৎসকের মৃত্যুর কথা জানালেও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে; কারণ ভারতে বর্তমানে কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি। তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ সদস্যের তথ্যই শুধু নথিবদ্ধ করে আইএমএ।
ভারতে একদিনে ৪৩২৯ প্রাণহানি
করোনাভাইরাসে ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহামারি পর্বে এখন পর্যন্ত এটি সর্বোচ্চ মৃত্যু। এই সময়ে দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫৩ জন।
মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫৩ জনসহ দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যাও আড়াই কোটি ছাড়াল। এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২ কোটি ৫২ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৩২৯ জনের মৃত্যুতে ভারতে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭১৯ জনের।
মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, কেরালার মতো রাজ্যগুলোতে সংক্রমণ কমছে। তবে তামিলনাড়ু, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনও লাগামাছাড়া। পশ্চিমবঙ্গেও গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৩ জন।
গত বছর নভেম্বরের দিকে অবশ্য কমতে শুরু করেছিল ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুহার। ফেব্রুয়ারি মাসে এই হার ছিল সর্বনিম্ন। সে সময় গড়ে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজারেররও কম। কিন্তু মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফের বাড়তে শুরু করে সংক্রমণের হার। এপ্রিলে তা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে যত সংখ্যক সক্রিয় করোনা রোগী আছেন, তার প্রায় ৫০ শতাংশই ভারতে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ