সিলেটে গান গাইতে এসে এক বাউল শিল্পী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় ঢাকার বাউল শিল্পী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, বাবুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে এখন।
এ ঘটনায় গত ২২ এপ্রিল সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন ধর্ষণের শিকার বাউলশিল্পী। তবে এখনো অভিযুক্ত ধর্ষক বাবুল মিয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামিদের হুমকি-ধামকির মধ্যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী নারী।
মামলার আসামি অভিযুক্ত বাবুল মিয়া (৪২) সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার শরীফে বিভিন্ন সময়ে খাবার বিতরণ করেন। বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার বাউলশিল্পী ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে গানের বায়নার কথা বলে বাদী বাউলশিল্পীকে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার সাগরদিঘী পাড়ার ২৩ নম্বর বাসায় নিয়ে যান অভিযুক্ত বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। নিচ তলার একটি কক্ষে নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন বাবুল। এ সময় বাবুলের সঙ্গে থাকা নিজাম ও শাহিন এবং অজ্ঞাত আরও একজন সহায়তা করে। ধর্ষণের পুরো দৃশ্য শাহিন এবং নিজাম তাদের মোবাইল ফোনে ধারণ করে। এরপর এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে থাকা ৭ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় তারা। ঘটনাটি কাউকে না জানাতে ওই নারীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
ধর্ষণের শিকার বাউলশিল্পী গণমাধ্যমকে বলেন, মামলা করে আমি আরও বিপদে পড়েছি। আসামিরা প্রতিনিয়ত আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। অথচ ধর্ষক বাবুল মিয়া প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ এবং মাজার কর্তৃপক্ষ সবাই তাকে চেনে। প্রভাবশালী বলে পুলিশ তাকে ধরছে না। কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। আর আমি ধর্ষণের শিকার হয়ে বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।
যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক(এসআই) আতিকুর রহমান বলেন, ওই মামলায় শাহিন নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত বাবুল মিয়া সিলেট ছেড়ে পালিয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তিনি পুলিশের সামনে ঘুরছেন এমন অভিযোগ সত্য নয়। তবে, আজ (সোমবার) মূল আসামির অবস্থান কিছুটা নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের ভূমিকায় মানুষের নিশ্চিন্ত থাকার কথা থাকলেও এখন আতঙ্কে ভোগেন। দেশে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, ধর্ষক ও ডাকাতির ভূমিকায় নেমে পড়া পুলিশ বাহিনী নিয়ে দেশে এক রকম আতঙ্ক চলছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের সরাসরি ডাকাতিতে নেমে পড়ায় উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে দেশে এক রকম বিরুদ্ধমত চলছে। আর এর পেছনে রয়েছে তাদেরই জোরালো ভূমিকা।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশের থাকার কথা থাকলেও পুলিশ নিজেই এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যাদের রক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের এহেন ভক্ষকের ভূমিকায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে আছে দেশবাসী। এ থেকে উত্তরণের জন্য পুলিশ বাহিনীকেই উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারের কড়া নজরদারিও দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩১৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ