করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় নতুন ৬টি শর্ত যুক্ত করে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপের সময় বর্ধিত করা হয়েছে বলে নতুন মেয়াদ বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
এ সময়ে আগের মতোই বিধিনিষেধগুলো বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গণপরিবহন ও অফিস বন্ধ থাকবে। তবে দোকানপাট ও শপিং মল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। সেটি পরে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যে অবশ্য দোকানপাট ও শপিং মল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রথমদিকে কড়াকড়ি থাকলেও এখন অনেকটাই ঢিলেঢালাভাবে বিধিনিষেধ চলছে। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোয় গণপরিবহন ছাড়া সব ধরণের যানবাহন চলছে।
প্রজ্ঞাপনে যে ৬টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে
১. পণ্য পরিবহন ব্যতীত স্থল, নৌ ও বিমানযোগে কেউ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশে করতে পারবেন না। তবে ভারতে থাকা যে বাংলাদেশিদের ভিসা উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা বাংলাদেশ হাইকমিশনের অনুমতি/অনাপত্তি নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রবেশকারীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
২. দোকানপাট/শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।
৩. ঈদ-উল-ফিতর নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
৪. মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে আগত যাত্রীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদসহ নন-কোভিড-১৯ সনদ যাদের রয়েছে, তাদের নিজ বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। এ ক্ষেত্রে তাদের আসার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করতে হবে।
৫. এসব দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের যাদের নন-কোভিড-১৯ সনদ নেই, তাদের নিজের খরচে সরকার নির্ধারিত ব্যবস্থায় কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসকগণ তাদের পরীক্ষা করে সম্মতি প্রদান করলে তারা বাড়িতে গিয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
৬. অন্যান্য দেশ থেকে আগত যাত্রীরা নিজেদের খরচে সরকার নির্ধারিত হোটেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
আজ ৭৭ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২৯৫৫
দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আরো ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। একই সময়ে দেশের ২ হাজার ৯৫৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩ দিনে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। গত বছর মার্চে দেশে কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর থেকে এই প্রথম এত কম সময়ের ব্যবধানে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হলো।
সর্বশেষ শনাক্তসহ দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৬১৪। সর্বশেষ ৭৭ জনসহ বাংলাদেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৩০৫।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ