বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ফেনসিডিল ও ইয়াবা বড়িসহ যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা হলেন ফোরহাদ হোসেন। তিনি ধুনট উপজেলা যুবলীগের সহসম্পাদক। তার বাড়ি উপজেলা সদরপাড়া গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফোরহাদ হোসেন নিজ বাড়ির পাশে ফেনসিডিল ও ইয়াবা বড়ি বিক্রি করছিলেন। এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে চার বোতল ফেনসিডিল ও ৩০টি ইয়াবা বড়িসহ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ফোরহাদ হোসেনের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে।
সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া মামলায় ফোরহাদ হোসেনের ছোট ভাই পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহরাব হোসেনকে (৩৫) আসামি করা হয়েছে। মাদক বিক্রির অভিযোগে কয়েক দফা সোহরাব হোসেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ায় দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ফোরহাদ হোসেন এলাকায় একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তাকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় চাঁদাবাজির অভিযোগে এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর অভিযোগের পর শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে এই নেতাকে নিজ বাড়ি উপজেলার খেমিরদিয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ভেড়ামারা থানার এসআই প্রকাশ রায়। গ্রেপ্তার শরিফুজ্জামান সুমন (৩৫) খেমিরদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারীর ছেলে ও মোকারিমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি উপজেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটিরও সদস্য।
এসআই প্রকাশ রায় জানান, গত শুক্রবার দুজন ব্যবসায়ীর লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে আমলে নিয়ে রেকর্ডভুক্ত করে পুলিশ। এই মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জনি হোসেন (২৮) ও হাবাসপুর গ্রামের নাসিমের স্ত্রী তুলি খাতুন (২৫)।
এসআই প্রকাশ বলেন, ভেড়ামারায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবীদের টার্গেট করে তরুণীদের লেলিয়ে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে আটকে চাঁদা আদায় করে আসছিল। বিভিন্ন ভুক্তভোগী লোকলজ্জার ভয়ে এতদিন মুখ খোলেননি। তবে মৌখিকভাবে পুলিশকে বেশ কয়েকজন অবগত করেছেন।”
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য দিনদিন চাউর হয়ে উঠছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে ক্ষমতার চূড়ান্তে বসবাস করেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগ্রহবোধ না করায় তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে চলেছে। ছাত্রলীগের এই আইনের উর্ধে চলে যাওয়ার পেছনে অবশ্য রাজনৈতিক নেতাদের কুৎসিত হাতের ভূমিকা রয়েছে।
তারা বলছেন, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগ যুবলীগ নেতারা চাঁদাবাজিসহ বহু অপকর্মই করে থাকেন, যার বিরুদ্ধে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতেও ভয় পান। স্থানীয় পদপ্রাপ্ত প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে থানা প্রশাসনও এক প্রকার নমনীয় থাকেন। সেটা হোক ভয় অথবা কোনো বিনিময় মাধ্যমে। খুব ঠেকায় না পড়লে স্থানীয় প্রশাসন মামলা নেন না। ফলে স্থানীয় নেতারাও লিপ্ত থাকেন লাগাম ছাড়া অপরাধকর্মে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলা বা অনিয়মসহ স্থানীয় নেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন সংশ্লিষ্টরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭৩৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ