হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছে। হেফাজত কর্মীদের হামলায় মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম কবিরসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আজ সোমবার(১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন ওসি গোলাম কবির, উপপরিদর্শক (এসআই) ঠাকুর দাস, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বাহারুল, লিয়াকত, কনস্টেবল সোহাগ মিয়া, নাজমুল ফকির ও ডিএসবির কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম। তাদের মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থক উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল মোড়ে জড়ো হন। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তারা মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে ওসিসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের কাছে জড়ো হওয়ার কারণ জানতে চায়। পুলিশ তাদের সারিয়ে দেয়। তখন তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। হেফাজত নেতা মামুনুল হকের নানা বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর এলাকায় বলে জানা গেছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হেফাজতের নেতাকর্মীরা উদয়পুর কিন্ডারগার্টেন এলাকায় জড়ো হয়ে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় হেফাজতের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু করে। হেফাজত কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে থানার ওসিসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের মোল্লাহাট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বাগেরহাট পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, ‘মোল্লাহাটে হেফাজত কর্মীরা মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে এসময় হেফাজত কর্মীদের ছোড়া ইট এসে ওসির হাতে লেগে আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
ওসি কাজী গোলাম কবীর বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শহরের বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহরের হাসপাতাল মোড়ে জড়ো হয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন।’
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হককে সোমবার ভাঙচুরের মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে দিয়েছে আদালত। পরে সেখান থেকে তাকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
এর আগে রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর মামুনুলকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রিসোর্ট-কাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয় মামুনুলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৫৪৬
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ