মাত্র দুই মাসের মাথায় নিজের মত পাল্টালেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দেশটিতে শরণার্থী অনুমোদনের ক্ষেত্রে উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিই বহাল রাখলেন তিনি। ফলে, প্রতিবছর ১৫ হাজার শরণার্থী অনুমোদন পাবে দেশটিতে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৬এপ্রিল) এ–সংক্রান্ত একটি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, দুই মাস আগে ট্রাম্পের শরণার্থী নীতিতে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন। শরণার্থী অনুমোদনের সংখ্যা প্রতিবছর ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৬৫ হাজার করার কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে ট্রাম্পের নীতিতেই রইলেন তিনি।
এ নিয়ে বাইডেন প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়লে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, এ অর্থবছরের অবশিষ্ট দিনগুলোর জন্য আগামী ১৫ মে ‘চূড়ান্ত ও বর্ধিত’ শরণার্থী অনুমোদনের সংখ্যা ঘোষণা করা হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসী–ঢলের মধ্যে আরও মানুষের অনুমোদন নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ফলে, বছরে শরণার্থী অনুমোদনের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করলেন না তিনি। প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর আট কোটি শরণার্থী তৈরি হয়, যার ৮৫ শতাংশকেই আশ্রয় দিতে হয় উন্নত বিশ্বকে।
শরণার্থী অনুমোদন মাত্র ১৫ হাজারে সীমাবদ্ধ করে দেওয়ায় পরামর্শক সংগঠনগুলো ধাক্কা খেয়েছে। তাদের ধারণা ছিল, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের শরণার্থী নীতি পরিবর্তনে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট।
অভিবাসীদের আশ্রয়ের দেওয়ার প্রক্রিয়া থেকে শরণার্থীদের অনুমোদনের ব্যবস্থা আলাদা। শরণার্থীদের অবশ্য বিদেশ থেকে আবেদন করতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার জন্য ছাড়পত্র লাগবে, অন্যদিকে অভিবাসীরা হচ্ছেন যারা যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সীমান্তে চলে আসেন এবং আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করেন।
বাইডেন নতুন পরিকল্পনায় দেখা গেছে, আফ্রিকা থেকে সাত হাজার, পূর্ব এশিয়া থেকে এক হাজার, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া থেকে দেড় হাজার, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে তিন হাজার, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়া থেকে দেড় হাজার এবং অনির্ধারিত অঞ্চল থেকে এক হাজারজনকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, চীনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতিতে জাপানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার চেষ্টায় আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরই প্রেক্ষাপটে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা নেওয়ার পর বাইডেনের সঙ্গে এটিই হবে প্রথম কোনও বিশ্বনেতার সাক্ষাৎ। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) দুই নেতার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
একদিনের এ বৈঠকে চীনের বাড়তে থাকা প্রভাব, মানবাধিকার ইস্যু, হংকং এবং শিনজিয়াং পরিস্থিতি নিয়ে তারা আলোচনা করতে পারেন, বলছেন কর্মকর্তারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাইডেনের বৈদেশিক নীতির মূলে আছে মিত্রতার বন্ধন দৃঢ় করা এবং চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা দুইই। আর এই দু’ক্ষেত্রেই জাপান গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্র-জাপান নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব এবং অন্যান্য আরও নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা নিয়েও আলোচনা করবেন। তাদের আলোচনায় স্থান পেতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ মহামারী এবং তাইওয়ান প্রণালীতে স্থিতিশীলতার বিষয়টিও।
এশিয়ায় জাপান যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেশ। এ অঞ্চলে গত কয়েকবছর ধরে চীনের প্রভাব বেড়েছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাইডেন প্রশাসন জাপানকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০৩০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ