বান্দরবানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরকারের ঘোষিত লকডাউন বিরোধী পোষ্ট দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মোঃ জিহাদ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৭এপ্রিল) ভোরে বান্দরবান সদরের ৬নং ওয়ার্ডের স্টেডিয়াম এলাকার নিজ বাসা হতে জিহাদকে গ্রেফতার করে বান্দরবান সদর থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার যুবক জিহাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ আইডি থেকে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন প্রচারণা চালাতেন। তার আইডি থেকে তিনি ব্যাংক খোলা, হাজার হাজার শ্রমিক দিয়ে কলকারখানা খোলা, মসজিদের বেলায় ২০ জন বাদে মসজিদে তালা এটার নামই লকডাউনসহ আরো লিখেছেন ‘মাফিয়ারা দেশটাকে ছিড়ে খাচ্ছে প্রতিনিয়ত’।
পুলিশ আরো জানায়, জিহাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খাবার দাও, নইলে মানচিত্র ছিড়ে খাবসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে আর এতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ হওয়ায় পাশাপাশি বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালানোর অপরাধে মো. জিহাদ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (২)/৩১(২) ধারার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৪৩ ধারায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি, জব্দ এবং আটকের অসীম ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর আইনে ব্যাক্তি বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তী ক্ষুণ্ন করা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা উস্কানি, মানহানিকর তথ্য প্রচার ও প্রকাশ এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতির মতো বিষয়গুলোতে বিভিন্ন ধারায় অপরাধ ও শাস্তির বিধান রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা বলেন, সংবিধানে নাগরিকদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে। যেখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে।
“সবার মধ্যে একটা ভীতি যে এইটা বললে কী হবে! এবং আমরাও বলি যে এতকিছু বলো না তোমার বিপদ হবে। এটা স্বাধীন দেশে আমরা কেন করবো? এটা কিন্তু বেশ স্বার্থকভাবে সরকার করে ফেলেছে। সেল্ফ সেন্সরশিপ একটা ভীতি প্রদর্শন, ভীতি মানুষের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া।”
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কালো আইনের মাধ্যমে সরকার তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়। কেউ যেন এই সরকারের নানা দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে, সেই জন্যই এই সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তৈরি করে মানুষের মুখ বন্ধ রাখতে চায়।
তারা বলেন, আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা— এটা আমাদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আইনটি নিয়ে বিতর্ক বা সমালোচনার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তির ওপর দেশে ও বিদেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭১৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ