করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কওমি মাদ্রাসাসহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি।
আজ (সোমবার) গণমাধ্যমকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে বিশেষ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কওমি মাদ্রাসাগুলো চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ অনেক গুণ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন যেমন অনেক সংক্রমণ হচ্ছে, তেনি অনেকে মারা যাচ্ছেন। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং কওমি মাদ্রাসাগুলো এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি নির্দেশনা হচ্ছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থাৎ প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের স্কুল-কলেজ আগামী ২৩ মে খোলার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা রয়েছে আগামী ২৪ মে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এতদিন বন্ধই ছিল, নতুন নির্দেশনায় মাদ্রাসাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গণপরিবহন এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় মানুষের সংখ্যা আসন সংখ্যার অর্ধেকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে বলেছে সরকার।
এদিকে আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত ১৮ দফা নির্দেশনার ১০ নম্বরে বলা হয়েছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা শনাক্তের পর ১৮ মার্চ থেকে কওমি মাদরাসাসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হলেও পরে কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দেওয়া হয়।
নতুন নির্দেশনায় কওমি মাদরাসাগুলো বন্ধ থাকবে কিনা- প্রশ্নে গণমাধ্যমকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখানে উল্লেখ করে দিয়েছি প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কোনো রকম শিক্ষার্থী আপাতত আসবে না। তবে অনলাইনে ক্লাস চলবে।
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। এখানে শুধু কওমি না, সবধরনের মাদ্রাসা, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা সব জায়গায় বন্ধ থাকবে। কারণ এটা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এটা যদি রোধ করতে না পারি তাহলে সমস্যা হবে।
এতদিন দেশের সকল সেক্টর, কওমি মাদ্রাসা ও কোচিং সেন্টার খোলা রেখে অন্যসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় সরকার বেশ সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছিলেন। দেশের সাধারণ মানুষ কওমি মাদ্রসা ও কোচিং সেন্টার খোলা রেখে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ