বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে এক সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এই সরকারের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। বিশেষ করে, সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে ক্ষমতা কাঠামো এবং নির্বাচনকালীন ব্যবস্থাপনা নিয়ে মতপার্থক্য বেশ প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে।
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানান, তিনি চান ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এই দাবির সঙ্গে সরকারের ঘোষিত সময়সূচির অসঙ্গতি রয়েছে, কারণ ইউনূস প্রশাসন এখনো নির্দিষ্ট কোনো নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। ফলে সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম উত্তেজনা কাজ করছে।
সরকারের উপর রাজনৈতিক দলগুলোর চাপও বাড়ছে। বহু দল অভিযোগ করছে, এই সরকার জনগণের সঙ্গে যথাযথভাবে মতবিনিময় না করেই নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন প্রশাসনের গঠন, ভোটার তালিকার হালনাগাদ, এবং নির্বাচনী আইনের পরিবর্তন নিয়ে দলগুলো একাধিকবার উদ্বেগ জানিয়েছে। কিছু দল এই সরকারকে “অগণতান্ত্রিক” বলেও অভিহিত করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে। কেউ কেউ বলছেন, সেনাবাহিনীর চাপ ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ইউনূস হয়তো পদত্যাগ করতে পারেন। তবে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে যে, একটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ইউনূস এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি। তবুও, অভ্যন্তরীণভাবে সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারগুলো সাধারণত নির্বাচনের আয়োজন এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে। কিন্তু এই সরকারের কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম বলে মনে করা হচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, সরকার একদিকে যেমন সময়ক্ষেপণ করছে, অন্যদিকে কিছু পক্ষের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করছে যা সবার জন্য স্বচ্ছ নয়।
এমনকি সাধারণ মানুষও এই পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্ত। তারা জানে না কবে নির্বাচন হবে, কীভাবে হবে এবং আদৌ এই সরকারের ওপর আস্থা রাখা যাবে কি না। মিডিয়ায়ও নানা বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন উঠে আসছে, যেখানে বলা হচ্ছে, দেশের রাজনৈতিক কাঠামো এক নতুন রূপান্তরের মুখোমুখি হতে চলেছে।
সেনাবাহিনীর ভূমিকা এই প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তারা যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা নেয়, তাহলে আগামী নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন হতে পারে। অন্যদিকে, যদি তারা সরকারের ওপর আস্থা হারায়, তাহলে নতুন করে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিতে পারে।
উপসংহারে বলা যায়, মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন একটি সংকটকাল অতিক্রম করছে। এই সংকট উত্তরণের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক, এবং একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা। তা না হলে দেশের গণতন্ত্র ও প্রশাসনিক কাঠামো আরও দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই রূপান্তরটি মৌলিক, বিস্তারিত এবং সংবাদ প্রতিবেদনটির মূল তথ্য সংরক্ষণ করে লেখা হয়েছে। চাইলে তুমি এটাকে নিজের মত করে আরও সংক্ষিপ্ত বা সম্প্রসারিত করতে পারো। অন্য কোনো বিশেষ বিষয়ের উপর আলাদা ফোকাস দরকার হলে, সেটাও বলতে পারো!
আপনার মতামত জানানঃ