রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির নিচে একটি রহস্যজনক কাঠামোর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে ছাত্র-জনতা। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, মাটির নিচে বেশ কয়েকটি কক্ষ রয়েছে, যেগুলো পানিতে পরিপূর্ণ এবং প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকেই বাড়িটিতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরদিন বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেও সেখানে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘আমরা কয়েকটি কক্ষের সন্ধান পেয়েছি, কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি, কারণ পুরো জায়গাটি পানিতে ভরা। বিষয়টি সন্দেহজনক।’
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, ‘বাড়ির নিচে পাঁচতলা কাঠামো রয়েছে, যেখানে একটি আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছে।’
ছাত্র-জনতার একাংশের দাবি, এটি গোপন আয়নাঘর হতে পারে, যেখানে নির্যাতনের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। কিছুজন দাবি করেছেন, ডিজিএফআই ও ডিবির ব্যবস্থাপনায় এখানে গোপন কার্যক্রম চলত।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অনেকেই সরকারি পর্যায়ে তদন্তের মাধ্যমে এর সত্যতা যাচাইয়ের দাবি জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সরকার বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে, আজ শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। তাদের অনেকেই ভাঙা বাড়িটির ভেতরে ও আশপাশে ঘুরে দেখছেন, ছবি তুলছেন।
বাড়িটির কিছু অংশে কয়েকজনকে হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর করতে দেখা গেছে। একদল মানুষ করাত দিয়ে রড কাটছেন। আরেক দল সেই রড নিয়ে যাচ্ছেন। কাউকে বাড়িটির ইট নিয়ে যেতে দেখা গেছে। তবে কোনো ভারী যন্ত্র দিয়ে বাড়ি ভাঙতে দেখা যায়নি।
বাড়িটির আশপাশে সংবাদকর্মীদের ভিড় দেখা গেছে। ৩২ নম্বর সড়ক দিয়ে যারা যাচ্ছেন, তাদের অনেকেই গাড়ির গতি কমিয়ে জানালা দিয়ে বাড়িটি দেখছেন। ছবি তুলছেন। গতকাল যেখানে গরু জবাই করে রান্না করা হয়েছে, সেখানেও অনেকের ভিড় দেখা গেছে।
বুধবার রাত ৮টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র), ক্রেন ও বুলডোজার দিয়ে বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভাঙার কাজ বন্ধ থাকলেও দিনভর ওই বাড়ি ঘিরে ছিল বিক্ষুব্ধ ও উৎসুক জনতার ভিড়।
ভারতে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গত বুধবার রাতে ধানমন্ডির ওই বাড়ি ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে বাড়িটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বুধবার রাতেই ক্রেন, এক্সকাভেটর এনে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়। রাতে যুক্ত হয় একটি বুলডোজার। গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত নীল রঙের এক্সকাভেটর দিয়েই ভাঙার কাজ করা হয়।
আপনার মতামত জানানঃ