পশ্চিম তীর ও জর্ডান সীমান্তের একটি ক্রসিংয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে তিন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলাকারী জর্ডানের আল-কারামেহ শহর থেকে একটি ট্রাক করে রোববার সকালে অ্যালেনবি সেতু ক্রসিংয়ে আসেন। এরপর সীমান্ত রক্ষীদের লক্ষ্য করে তিনি গুলি করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বন্দুকধারীকে গুলি করে হত্যা করেছেন। ট্রাকটিতে কোনো বিস্ফোরক ছিল কি না, তা তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন।
জর্ডান জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে। ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এমন একটি জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে জর্ডানের ট্রাকগুলো মালামাল খালাস করে। এই ঘটনার পর দুই দিক থেকেই ক্রসিংটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম বলছে, নিহতরা হলেন ৬১ বছর বয়সী ইয়োহানান শোরি, ৬৫ বছরের ইউরি বার্নবাম এবং আদ্রিয়ান মার্সেলো পডজামজার, যার বয়স জানা যায় নি।
নিহত ওই তিন ব্যক্তি সীমান্ত ক্রসিংয়ে নিরাপত্তাকর্মী ছিল তবে তারা সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন না।
ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কান নিউজ জানিয়েছে, হামলাকারী ৩৯ বছর বয়সী জাজি পেশায় একজন ট্রাক চালক ছিলেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারী প্রথমে টার্মিনালে হেঁটে যান এবং তাদেরকে তিনটি গুলিও করে।
জর্ডানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ঘটনার সময় মালামাল খালাসের জায়গা থেকে জর্ডানের অন্তত দুই ডজন ট্রাকচালককে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
ঘটনার পর জর্ডানের সঙ্গে ইসরায়েলের সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
অ্যালেনবি ব্রিজ ক্রসিং, যা কিং হোসেইন সেতু নামেও পরিচিত- এটা পশ্চিম তীর ও জর্ডানের মধ্যে বৈধ পারাপারের একমাত্র পথ। এটিই একমাত্র রাস্তা যেটি ইসরায়েলের ভেতর দিয়ে যায়নি।
জর্ডান এবং ইসরাইলের মধ্যে নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে জর্ডান ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি আগ্রাসনের সমালোচনা করে।
পশ্চিম তীর এবং ইসরায়েলে পণ্য সরবারহ করতে প্রতিদিন কয়েক ডজন ট্রাক জর্ডান থেকে পণ্য নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে ইসরায়েলের জন্য ‘একটি কঠিন দিন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। একই সাথে নিহতদের পরিবারের প্রতিও তিনি সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন “একজন ঘৃণ্য সন্ত্রাসী অ্যালেনবি ব্রিজে আমাদের তিন নাগরিককে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছে।”
যদিও হামাস এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এটিকে গাজা যুদ্ধের ‘প্রাকৃতিক জবাব’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত বছরের সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় পরবর্তী যুদ্ধের পর থেকে পশ্চিম তীরের সহিংসতায় ছয়শরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
একই সময়ের মধ্যে, পশ্চিম তীরের সহিংসতায় কমপক্ষে ১৮ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের (ইউএন) পরিসংখ্যান অনুসারে, যা গত ১১ই আগস্ট থেকে মৃত্যুর অন্তর্ভুক্ত নয়।
গত সপ্তাহে, ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শহর এবং এর শরণার্থী শিবির থেকে প্রত্যাহার করে – পশ্চিম তীরের একটি এলাকা – সেখানে একটি বড় নয় দিনের অভিযানের পর। এলাকাটি জঙ্গিদের একটি শক্ত ঘাঁটি এবং প্রায় ৬০ হাজার বেসামরিক মানুষ বসবাস করে।
ইসরায়েল বলেছে যে তারা পশ্চিম তীর এবং ইসরায়েলে ইসরায়েলিদের ওপর মারাত্মক ফিলিস্তিনি হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করছে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন যে এটি একটি “কঠিন দিন” এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে নিহতদের পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন।
হামাস কর্মকর্তারা হামলার দায় স্বীকার করেননি, তবে এটিকে গাজা যুদ্ধের একটি “স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া” হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরে এখন পর্যন্ত ৬০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে।
একই সময়ে সেখানে সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘ। তবে এই পরিসংখ্যান গত ১১ই আগস্টের পর থেকে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
গত সপ্তাহে পশ্চিম তীরে বৃহত্তম উদ্বাস্তু শিবির জেনিন শহর থেকে নয় দিনের অভিযান শেষে সেনা প্রত্যাহার করে ইসরায়েল।
এই এলাকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। এখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বসবাস করে।
ইসরায়েল বলেছে যে তারা পশ্চিম তীর এবং ইসরায়েলে ইসরায়েলিদের উপর বর্বর ফিলিস্তিনি হামলা প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
আপনার মতামত জানানঃ